ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী সাদিকুর রহমান সাদিকের আরেক সহযোগি ও পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে অস্ত্র মামলার আসামী আলাউদ্দীনের নামে নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। আলাউদ্দীন সদর উপজেলার নজরুল ইসলামের ছেলে। সূত্রে জানান, আলাউদ্দীন ও তার পরিবার জামাত শিবির পন্থী হয়ে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কয়েকজন দলীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে একেপর এক নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন আলাউদ্দীন। সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় দলীয় নেতা পরিচয় দিয়ে আলাউদ্দীন সাধারণ মানুষের নানাভাবে হয়রানি করতো, মানুষকে মানুষ মনে করত না, স্কুল কলেজের মেয়েদের পথেঘাটে দেখলে উক্ত্যক্ত করত, তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না, তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে মারধর করতো ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে আতঙ্কে রাখতো আলাউদ্দীন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই, জবরদখল, চাঁদাবাজ, লুটপাট ও সাধারণ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা জড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে ছাত্রলীগের ছত্রছাত্রায় দলীয় নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকায় ফের ছিনতাই, জবরদখল, চাঁদাবাজ, লুটপাট ও সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়সহ নানা অপকর্ম করতো আলাউদ্দীন। সূত্র আরো জানায়, লাবসা এলাকার ডা. গিয়াস উদ্দীন নামক এক ব্যক্তির কদমতলা বাজারে দু’টি দোকান রয়েছে। ওই দু’টি দোকানের মধ্যে একটি দোকান কাশেমপুরের ইমান আলির কাছে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয় গিয়াস উদ্দীন। গিয়াস উদ্দীনের কাছ থেকে দোকান কেনার পর একদিনও ওই দোকান দখল নিতে পারেনি ইমান আলি। গিয়াস উদ্দীনের দোকান দখলে না যাওয়ার জন্য ইমান আলিকে অস্ত্রশস্ত্রর প্রাণনাশের হুমকি ধামকি দিতে থাকেন গিয়াস উদ্দীনের ছেলে ও পুলিশের উপর হামলা মামলার গুলিবিদ্ধ আসামী তৎকালীন সন্ত্রাসী রুবেল ও অস্ত্র মামলার আসামী আলাউদ্দীনসহ তাদের বাহিনী। একপর্যায় রুবেলের যোগসাজে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কদমতলা বাজারে ত্রাস সৃষ্টি করে ইমান আলির কেনা দোকান জবরদখল করে আলাউদ্দীন ও তার লোকজন। ইমান আলির কেনা দোকান জবরদখল করে আলাউদ্দীন কয়েকবছর ধরে ওই দোকানে মোবাইল ফোন ও সীমের ব্যবসা করেছে। ওই দোকান দখল নিতে না পারায় তৎকালীন সময় আদালতে মামলা দায়ের করেন ইমান আলি। কিন্তু আলাউদ্দীন ও তার লোকজনের হুমকিতে মামলা তুলে নেয় ইমান আলি। সূত্রে জানায়, কয়েকবছর পূর্বে শার্শা এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের অজিয়ার মোড়লের ছেলে আনিছুর রহমান নিহত হয়। ওই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় আলাউদ্দীনের নামে অস্ত্র মামলা হয়। অস্ত্র মামলায় আলাউদ্দীন কয়েকমাস যশোর কারাগারে জেল খাটে। আলাউদ্দীন ওই মামলায় জামিনে জেল হাজত থেকে বেরিয়ে আসার পর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিকের আশ্রয় নেয়। আশ্রয় নেওয়ার পর সাদিকের সাথে প্রায় সময় থাকতো এবং সাদিকের সাথে সব সময় মোবাইলে যোগাযোগ রাখতো আলাউদ্দীন। সাদিকের লোক পরিচয় দিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াত আলাউদ্দীন। সাদিকের সহযোগিতায় আলাউদ্দীন জেলার বিভিন্ন এলাকায় ফের জবরদখল, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, লুটপাট ও সাধারণ মানুষের হয়রানি করে অর্থ আদায়সহ নানা অপকর্ম শুরু করে। সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে শ্যামনগরে বিকাশের ২৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার কিছুদিন পর আইসা’র কোম্পানীর নামে একটি ট্রাক ক্রয় করেন আলাউদ্দীন। তবে ২৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ সাত জনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ছাত্রলীগের দুই সদস্য দীপ ও সাইফুল নিহত হয়। দীপ ও সাইফুল নিহত হবার পরদিন থেকেই আলাউদ্দীন বাড়ি ছাড়া হয়েছেন বলে সূত্রে জানায়। বর্তমানে আলাউদ্দীন এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে সূত্রে জানান। আলাউদ্দীন ক্ষমতাসীন দলের দলীয় লোক পরিচয় দিয়ে এসব অপকর্ম করে টাকার পাহাড় জমিয়েছেন। এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারণ জনগণ। তবে এদিকে এসব অপকর্মে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়ায় জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সাধারণ জনগণ। আলাউদ্দীনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। অপরদিকে সাদিকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
Check Also
আশাশুনির প্রতাপনগরে ৫ আগস্ট বন্দুকের গুলিতে নিহত ৩ শহীদের অভিভাবকদের সংবাদ সম্মেলন
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।। গত ৫ আগষ্ট-২০২৪ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান …