সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে বিকাশের ২৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের মাষ্টার মাইন্ড (মুল হোতা) সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিকদের ছিলো বিশাল সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক। ছিনতাই, জবরদখল, চাঁদাবাজ, লুটপাটের জন্য একেক এলাকায় একেকজন সেনাপতির আসনে ছিলেন। এর মধ্যে ২৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাইফুল ও দীপ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও অনেকে আছে ধরাছোয়া বাইরে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেকে কোন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী না হয়েও সাদিক ভাইয়ের ‘ছোট বা বড় ভাই হিসেবে দাপিয়ে বেড়াতেন এলাকায়। সাধারণ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা জড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করতো তারা। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য এলাকার মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারেতো না। ২৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাইফুল ও দীপ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর থেকে অনেকে গা ঢাকা দিয়েছে।
দীপ, সাইফুল বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হলেও সাদিক বাহিনীর শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে আছে- শাওন। তার দায়িত্ব ছিলো সদর উপজেলার বেতনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ছিনতাই, জমি ও ঘের জবরদখল, চাঁদাবাজ, লুটপাটের টাকার ভাগ দিয়ে যেত সাদিকের কাছে। শাওনও এখন গা ঢাকা দিয়েছে।
কালাম বাহিনীর নাম শুনলে ভয়ে কেপে উঠেতো সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীরা। তার বাড়ি শহরের মুনজিতপুর এলাকায় হওয়ায় সে সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে ছিলো ভয়ংকর মূর্তিমান আতঙ্ক। সাদিকের ছোট ভাই হিসেবে সে সরকারি কলেজ মোড় এলাকায় ছিনতাই চাঁদাবাজি করে বেড়াতো।
সাদিক বাহিনীর আরেক সিপাহ সালারের নাম জামাল। তার দায়িত্ব ছিলো সরকারি কলেজ এলাকা। সাদিকের ছোট ভাই হিসেবে পরিচিত সন্ত্রাসী জামাল সে ক্লাস ফাইভ পাস না করেও সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে তার ব্যাপক আধিপত্য ছিলো। ওই জামাল কোন প্রকার লিজ গ্রহণ করে সরকারি কলেজের পুকুর থেকে মাছ, আম গাছ আম এবং গাছ থেকে ডাব পেড়ে নিয়ে যেতো। কিন্তু কারো কিছু বলার ক্ষমতা ছিলো না। সাইফুল ও দীপ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর থেকে অনেকে গা ঢাকা দিয়েছে সে। তার মোবাইল ফোন বন্ধ।
বকাল সোহাগ। তার বাড়ি শহরের সুলতানপুর বড়বাজার এলাকায়। সে সাদিক বাহিনীর আরেক সেনা। বকাল সোহাগ পশু চোরাচালানিতে জড়িত। বাঘের মতো চেহারা ‘ল্যাব্রাডার’ কুকুরটি সাদিককে উপহার হিসেবে দেয় এই বকাল সোহাগ। পশু চোরাচালানীতে তার সহযোগী হিসেবে একজন সাংবাদিককের নামও উঠে এসেছে। বর্তমানে সে গা ঢাকা দিয়েছে।
সাদিকের আরেক সেনানী তৌকির। তার দায়িত্ব ছিলো রাতের অন্ধকারে ছিনতাই করা। এই তৌকির দিনের বেলায় খুব কম বের হতো। বিবাহিত হয়েও ছাত্রলীগের পরিচয় দিতো। সাদিকের পরিচয় দিয়ে সরকারি কলেজের বিভিন্ন মেয়ের সর্বনাশ করেছে এই তৌকির। নারিখাদক মুর্কিমান আর্তক ছিলো এই তৌকির এখান আর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এছাড়া আরো উঠেছে মৃণাল, নাইম, ফারিব, কাজী সাদিকুর রহমান দীপসহ অনেকের নাম। দীপ ও সাইফুল বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর তাদের মধ্যে অনেকে লাপাত্তা। একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তথ্য দিয়ে খবর প্রকাশের অনুরোধ জানালে খোঁজ নেওয়া হয় আলোচিত এসব ব্যক্তিদের। তবে এসব ব্যক্তিরা পলাতক এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রাখায় তাদের বক্তব্য নেওযা সম্ভব হয়নি।
Check Also
আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আশাশুনি উপজেলা শাখার ২০২৫-২০২৬ সেশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ও …