ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান আজ ১১ ডিসেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতি প্রদান করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বর্তমান কর্তৃত্ববাদী জালেম সরকার ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টা ১ মিনিটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী শহীদ আবদুল কাদের মোল্লাকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেছে। সরকার সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে যেভাবে তার বিচার করেছে তা দেশে-বিদেশে সর্বত্রই বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। ঐ বিচার কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়নি।
তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নির্দোষ। শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামীর নেতা হওয়ার কারণেই তাকে পরিকল্পিতভাবে সাজানো মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ট্রাইবুনাল তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পর সরকারের পৃষ্ঠপোষতকতায় শাহবাগে স্থাপিত তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের অন্যায় দাবি মেনে নিয়ে সরকার আইন সংশোধন করে এবং সংশোধিত আইনের ভিত্তিতে তাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে।
আপীল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে জনাব আবদুল কাদের মোল্লা রিভিউ আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে দেয়। রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগেই তড়িঘড়ি করে তাকে ফাঁসি দেয়া হয়। কি কারণে উচ্চ আদালত তার রিভিউ আবেদন খারজি করল তা তিনি জেনে যেতে পারেননি। তাকে ফাঁসি দেয়ার প্রায় দেড় বছর পর তার রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। এসব ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, তিনি ন্যায় বিচার পাননি।
প্রকৃতপক্ষে রাজনৈতিক কারণেই সরকার তাকে হত্যা করেছে। তিনি দুনিয়ায় ন্যায় বিচার না পেলেও আখিরাতে ন্যায় বিচার ও প্রতিদান অবশ্যই পাবেন। তাকে যারা ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেছে সেদিন তারা কেউই রেহাই পাবে না। দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী। তাই মুমিনের জন্য আখিরাতের সাফল্যই কাম্য। যারা আখিরাতের সাফল্যের উদ্দেশ্যে জীবন দান করে তারাই সফলকাম।
শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা তাকে ফাঁসি দেয়ার পূর্বে বলে গিয়েছেন যে, ‘সরকার আমাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিচ্ছে। আমার শরীরের প্রতি ফোটা রক্ত এ দেশের ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে অনুপ্রাণিত করবে। দ্বীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার রক্তের বদলা নেওযার জন্য তিনি ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গিয়েছেন।’
ইসলামী আন্দোলনে তার অবদানের কথা আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং তার শাহাদাত কবুল করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। সেই সাথে তিনি ইসলামী সমাজ গড়ার যে স্বপ্ন দেখতেন তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দৃঢ়তার সাথে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমি জামায়াতের সকল নেতা-কর্মী, সুধী, সমর্থক ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”