ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার তালায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটিাল হাজিরা মেশিন ক্রয়ে ব্যাপক দূর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন ক্লাষ্টারের মাধ্যমে তাদের অধিনস্থ প্রধান শিক্ষকদেরকে নির্দিষ্ঠ কোম্পাণীর মেশিন কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। এছাড়া কোন কোন এলাকায় সাড়ে ১৩ হাজার টাকায় মেশিন কিনলেও ভাউচারে ২৫ হাজার টাকা উল্লেখ করছেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এব্যাপারে বিদ্যালয়গুলোকে তাদের পছন্দমত মানসম্মত মেশিন কিনতে এবং কারো প্ররোচনায় না পড়তে নির্দেশ দিলেও তালার অধিকাংশ স্কুলগুলোতে ক্লাষ্টাররা তাদের পছন্দমত কোম্পাণীর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে একপ্রকার চাপিয়ে দিচ্ছে মেশিন কিনতে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে উঠে আসে এমন চিত্র। এব্যাপারে অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের শালিখা ক্লাষ্টারের অধিনে স্কুলগুলোতে খোঁজ নিয়ে যায়,তাদের ক্লাষ্টার উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সচীন্দ্র নাথ বিশ্বাস তার অধিনস্থ ২২/২৩ টি স্কুল প্রধানকে নির্দিষ্ঠ কোম্পাণী থেকে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কিনতে অলিখিত চাপ দিচ্ছেন।
এব্যাপারে উপজেলার ইসলামকাঠী এলাকায় গিয়েও অনুরুপ অভিযোগ পাওয়া যায়,সেখান ক্লাষ্টার ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক কর্মকর্তা তপন কুমার তার ক্লাস্টারের শিক্ষকদেরও অনুরুপ চাপ দিচ্ছেন নির্দিষ্ট কোম্পাণীর মেশিন কিনতে।
উপজেলার বড় বিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আরো গুরুতর। তার সাথে শিক্ষা কর্তাদের সম্পর্ক ভাল। তাই ভয় দেখিয়ে তার এলাকার আরো ১৪ টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের দিয়ে ইতোমধ্যে নির্দিষ্ঠ কোম্পাণীর ডিজিটাল হাজিরা কিনিয়েছেন। যেখানে প্রতিটি মেশিন কিনতে ১৩ হাজার ৫ শ’ টাকা নিলেও ভাউচারে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন ২৫ হাজার টাকার।
তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ক্রয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির রিপোর্ট বিভিন্ন পত্রিকান্তে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় উন্নয়ন শাখা-২ এর যুগ্ম সচিব গত ২৩ অক্টোবর স্মারক নং-৩৮.০০.০০০০.০১০.০৬.০০১.১৮-১৬৮ মারফত মহাপরিচালক,পাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর,মিরপুর-২,বিভাগীয় উপ-পরিচালক (সকল) প্রাথমিক শিক্ষা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (সকল), উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার(সকল), সিস্টেম এনালিস্ট, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়,ঢাকা।
এছাড়া স্মারক নং-২৭০২/১১০০ অনুলিপি উপজেলা শিক্ষা অফিসার তালাসহ স্ব স্ব প্রধানশিক্ষকদের নিকট প্রেরণ করা হয়।
যাতে চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর মন্ত্রনালয়ের ৩৮.০০.০০০০.০১০.০২.০১৯.২০১৮-১৬৫ নং স্মারকের মাধ্যমে সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন স্থাপনের জন্য স্পেসিফিকেশন ও সে অনুযায়ী বিদ্যালয় কতৃপক্ষ বাজার থেকে যাচাই করে সাশ্রয়ী মূল্যে নিজেদের পছন্দমত ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কিনে স্থাপন করবে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হতে মেশিন ক্রয়ের কোন বাধ্য বাধকতা নেই। স্ব স্ব বিদ্যালয় অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে নির্ধারিত স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী সাশ্রয়ী মূল্যে মেশিন কিনতে পারবে।
অথচ তালা উপজেলা ক্লাষ্টার বা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা যোগসাজশে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের তাদেও পছন্দমত কোম্পাণী থেকে অতিরিক্ত মূল্যে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কিনতে বাধ্য করছে। এমনকি বাজারমূল্যে মেশিন কিনে ভাউচারে দ্বিগুণ মূল্য লিখিয়ে তাতে স্বাক্ষর আদায় করছেন বলে প্রতিনিয়ত স্থানীয় সাংবাদিকদেও কাছে অভিযোগ আসছে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তা সচীন্দ্র নাথ বিশ্বাসের নিকট জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোস্তাফিজুর রহমান জানান,এধরনের অভিযোগ তার কাছেও রয়েছে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগ প্রমানিত হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা রগ্রহন করা হবে।