সাতক্ষীরায় ছাত্রলীগ নেতা সাদিক-আকাশ সিন্ডিকেটে একাধিক সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যান :

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাতক্ষীরা:   প্রতারণার জাল ফেলে বিভিন্ন পেশার মানুষকে বাগে এনে নারীর সাথে মেলামেশার নগ্ন ছবির ভিডিও ধারণ চক্রের সাথে সাতক্ষীরার বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিক ও তাদের ক্যামেরাম্যানদের নাম আসতে শুরু করেছে। আর এই চক্রের শিকারে পরিণত হয়েছে, প্রভাবশালী রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাসহ ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিরা। আর একবার যার ভিডিও ধারণ করা হয়েছে, তাকে জিম্মি করে ‘গোনে গোনে’ টাকা আদায়, সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে কাজ আদায়সহ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অনেকে এই অনৈতিক কাজের বিষয়ে পূর্ব থেকে কমবেশী অবগত থাকলেও এই চক্রের সাথে থাকা সাংবাদিক সিন্ডিকেটের কারণে মুখ খুলতে পারেনি। এমনকি সাংবাদিকরাও মুখ খুলতে পারেনি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে উঠা সাংবাদিকদের পাল্টা গ্রুপের চরিত্রহননমূলক তৎপরতার কারণে।
গত ১৫ ডিসেম্বর উক্ত চক্রের এক সদস্য জয়যাত্রা টেলিভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আকাশ রহমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। উক্ত আকাশ রহমান সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির আমার এমপি ডটকম এর এ্যাম্বাসেডর। তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলারই বাদী দুইজন জনপ্রতিনিধি। মামলার এজাহারে অপর আসামীদের বিস্তারিত পরিচয় দেওয়া না হলেও তাদের ২ জন সাংবাদিক বলে জানা গেছে। আর এদের সিন্ডিকেট প্রধান জেলা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদকুর রহমান সাদিক। এই সিন্ডিকেটের উপরে আরো উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও থাকতে পারেন বলে শহরে কানাঘুষা শুরু হয়েছে। সাতক্ষীরা থানায় দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আকাশ আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে এবং তার সিন্ডিকেটের আরো একাধিক সদস্যের নাম প্রকাশ করেছে। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এদিকে সাতক্ষীরা থানায় দায়ের করা ২৮ নং মামলার এজাহারে (সামাজিক কারণে বাদীর নাম গোপন রাখা হলো) ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, উক্ত আসামীরা বাদীর নিকট বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবী করে আসছিল। কিন্তু বাদী প্রাথমিক পর্যায়ে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বিভিন্ন কায়দায় তাকে ব্লাকমেইলের চেষ্টা করতে থাকে। একপর্যায়ে একজন অপরিচিত মহিলা বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে প্রেমের অভিনয় করতে থাকে। সে জানায় তার কাছে বাদীর বেশকিছু অশ্লিল ভিডিও রেকর্ড রয়েছে। বাদী তাকে ২০ লাখ টাকা না দিলে উক্ত অশ্লিল ভিডিও ফেসবুকসহ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে আসামীদের টাকা না দিলে তারা বাদীর ছবি ব্যবহার করে অশ্লিল ভিডিও তৈরী করে। তখন বাদী তার সামাজিক মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টার সময় চায়না বাংলার সামনে আসামীদের ৫ লাখ টাকা প্রদান করে। আসামীরা বাদীর সামনে উক্ত ভিডিও মুছে ফেললেও পরে আবার জানায় তাদের কাছে ঐ ভিডিও এর কপি রয়েছে। বাকী ১৫ লাখ টাকা না দিলে উক্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে এবং কারণে অকারণে বাদীকে হয়রানী করতে থাকে।
বাদী তার এজাহারে আরো উল্লেখ করেছেন, উক্ত আসামীরা জেলার শিল্পপতি, চেয়ারম্যান, সরকারী কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে বিভিন্ন সময়ে সুকৌশলে ব্লাকমেইল করে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
আকাশ ও সাদিক ছাড়াও এই মামলার অন্যান্য আসামীরা হলো তুহিন, সাংবাদিক মনি ও সোহরাব হোসেন। এদের মধ্যে তুহিন ও সাংবাদিক মনির পিতার নাম ও ঠিকানা অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে।

Check Also

শেখ মুজিব ছফ্যাসিস মতাদর্শ কায়েম করেছিলেন: ফরহাদ মজহার

কবি, ভাবুক ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, আমরা মাওলানা ভাসানীর ছবি বুকে নিয়ে বেঁচে আছি। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।