কলারোয়ার জয়নগরে বিএডিসির সেচ প্রকল্পের ড্রেন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ     সাতক্ষীরা :  কলারোয়ার জয়নগর ইউনিয়নের ক্ষেত্রপাড়ায় বিএডিসির (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) সেচ প্রকল্পের পাইপ লাইনের বসানোর কার্যক্রম তদারকি না করায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। প্রকল্পের কার্যাদেশ অনুযায়ী পাইপ লাইনের মাটি খনন ও বালি না দেয়ায় অভিযোগ করেন এসব প্রান্তিক কৃষকরা।
সাতক্ষীরা বিএডিসির সেচ প্রকল্পের আওতায় ফজলু মোড়লের স্কীমে এ কাজ করা হচ্ছে। স্থানীয় ক্ষুদ্র কৃষকসহ স্কীমের মালিক কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ না করায় বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে অবিলম্বে বিএডিসির উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাজ পরিদর্শন ও সঠিক তদারকির দাবি জানিয়েছেন।
খোজনিয়ে দেখাগেছে, উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের ক্ষেত্রপাড়া গ্রামে ফজলু মোড়লের ২৪০০ ফুট (এক কিউসেট) স্কীমে পাইপ লাইন বসানোর জন্য মাটি খননের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে দুইশত ফুট পাইপ বসানো সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের দাবি, বিএডিসির কার্যক্রম সম্পর্কে কৃষকদের সঠিক ধারনা না থাকায় কর্মকর্তাদের ইচ্ছামত পাইপ লাইনের কাজ করে যাচ্ছে। আর এই সুযোগ নিয়ে অসাধু কর্মকর্তারা মহল বিভিন্ন স্কীম থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করছেন।
জেলা বিএডিসি সূত্র জানায়, মাটির নীচ দিয়ে ড্রেন নির্মান করে নদীর পানি দিয়ে কুষকরা সেচকাজে ব্যবহার করার জন্য এ প্রকল্প করা হয়েছে। এতে কৃষকরা অল্পদামে ক্ষেতে পানি দিতে পারবে। তবে পানির ড্রেন নির্মাণের বিষয়ে জানায়, সাড়ে ৪ফুট মটির গর্ত করার পর এক ফুট বালি দিয়ে পাইপ বসানোর নিয়ম রয়েছে। এর বাইরে কাজ করার কোন সুযোগ নেই।
এদিকে ক্ষেত্রপাড়ায় ফজলু মোড়লের স্কীমে মাত্র আড়াই ফুট থেকে সোয়া তিন ফুট গর্ত করা হয়েছে। এছাড়া এক ফুট বালি দিয়ে পাইপ বসানোর নিয়ম থাকলেও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের ঠিকাদার উপস্থিত না থাকা এবং বিএডিসির কর্মকর্তাদের তদারকির না করায় কোন রকমে মাটি খুঁড়ে গর্তের পাইপ বসিয়ে তড়িঘড়ি করে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হচ্ছে। স্থানীয় কৃষক, সোলাইমান আলী, মোবারক হোসেনসহ একাধিক কৃষক অভিযোগ করে জানান, সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম সঠিকভাবে করা হলে আমরা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষেতের সেচ সুবিধা পাবো। কিন্তু এ ধরনের দুর্নীতি করে পাইপ লাইনের কাজ করায় দ্রুত পাইপ নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে কুষকরা সরকারের এই সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। তারা আরো বলেন, একাজে অনিয়মের অভিযোগ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারের খোঁজ করা হলে কর্মরত শ্রমিকরা বলেন, এই প্রকল্পের ঠিকাদারকে সেটা আমরাও জানিনা এমনকি তাকে কোন দিন দেখিনি। তবে জয়নগর ইউনিয়নের শফি মালী (সাবেক চেয়ারম্যান) আমাদের টাকা দেন এবং কাজের খোঁজখবর নেন। তবে তিনি ঠিকাদার নন বলে শ্রমিকরা জানান।
এবিষয়ে জানতে ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের ফজলু মোড়লের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা এসব নিয়ম-কানুন বুঝিনা। তারা যেভাবে চেয়েছে সেভাবে কাজ সম্পন্ন করছে। তারা আমাকে প্রকল্পের কাজের কার্যাদেশ সম্পর্কে কিছুই জানতে দিচ্ছে না। এছাড়া বিএডিসির কোন কর্মকর্তা না আসায় শ্রমিকদের কাজ মেনে নিচ্ছে।
এদিকে প্রকল্পের ঠিকাদার দাবি করা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের শফি মালী (সাবেক ইউপি চেয়ারমান) যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
কলারোয়ায় সেচ প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে আব্দুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কার্যাদেশ অনুযায়ী সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে। আমি কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখেছি। তবে কলারোয়ায় অনিয়মের বিরুদ্ধে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলারোয়ার স্কীমগুলো পরিদর্শন করবেন বলে জানান।

Check Also

সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে ১০ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সীমান্তে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ১০ বোতল ভারতীয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।