ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট: বহিস্কৃত ও সদস্য বিলুপ্ত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিকের বিরুদ্ধে আশাশুনির এক জনপ্রতিনিধির দায়েরকৃত পর্ণোগ্রাফি ও চাঁদাবাজির মামলাসহ গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মনিরুল ইসলামের দায়েরকৃত অস্ত্র মামলায় আগামি মঙ্গলবার রিমান্ড শুনানীর দিন ধার্য করা হয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলার এক জনপ্রতিনিধির দায়েরকৃত পর্ণোগ্রাফি ও চাঁদাবাজির মামলায় বৃহস্পতিবার শুনানীর দিন ধার্য করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা আদালত সূত্রে জানা গেছে, আশাশুনির এক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে নারীর আপত্তিকর ভিডিও তৈরি করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার নাম করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা আদায় ও আরো ১৫ লাখ টাকা দাবি করার ঘটনায় গত ১৫ ডিসেম্বর ওই জনপ্রতিনিধি বহিস্কৃত ছাত্রলীগ নেতা সাািদকুর রহমান, সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি, তুহিন, সোহরাব হোসেনসহ পাঁচজনের নামে মামলা (জিআর-৮৩৪/১৯) দায়ের করেন। একইভাবে সদর উপজেলার এক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে নারীর আপত্তিকর ছবি ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার নাম করে চার লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগে একই দিনে (জিআর-৮৩৫ নং) মামলা দায়ের করেন ওই জনপ্রতিনিধি। ওই মামলায় ২৯ নভেম্বর বন্দুকযুদ্ধে নিহত দীপ ও সাদিকুরের নামে সদর থানায় মামলা হয়। এছাড়া পিচ্চি রাসেল ও হাফিজুর রহমান বাবুর কাছ থেকে দেশী তৈরি পিস্তল ও ১৬৭ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধারের ঘটনায় সাদিকের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা হয়। দু’জনপ্রতিনিধির দায়েরকৃত দু’টি মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক হাফিজুর রহমান সাদিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার আদালতে পৃথক সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। একইভাবে সাদিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অস্ত্র মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক হারান চন্দ্র পাল বুধবার সাদিককে জিজ্ঞাসাবদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম হুমায়ুন কবীর তিনটি রিমান্ড আবেদন শুনানী শেষে উপরোক্ত দিন ধার্য করেন।
এদিকে পর্ণোগ্রাফি আইনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিক আকাশ ইসলামের আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ি সাদিকের সঙ্গে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়ায় সাতক্ষীরা শহরের উত্তর পলাশপোলের মৃত আব্দুর রকিবের মেয়ে মধুমক্ষী সুমাইয়া শিমু বুধবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাজীব রায় এর কাছে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে সাদিকের ডেরায় তাকেসহ কয়েকজন নারীকে কিভাবে ব্যবহার করা হতো, সাদিকের সহযোগী কারা, ব্লাক মেইলের জন্য ভিডিও কিভাবে করা হতো, সেখানে নারীলোভী বিশিষ্ট জনেদের কিভাবে টোপ দিয়ে আনা হতো, সাংবাদিক আকাশ, সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি, তার ক্যামেরাম্যান কিভাবে কাজ করতো, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ি, প্রশাসনের সঙ্গে জড়িতদের কিভাবে টোপ দেওয়া হতো তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে।
তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ মুখে কুলুপ এটেছে। তাদের আশা আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলে জিজ্ঞাসাবাদে সাদিকের কাছ থেকে বেরিয়ে আসবে চাঞ্চল্যকর তথ্য।