ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃ
ঐক্যফন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, এই বছরটা খুবই জঘন্যভাবে শেষ হচ্ছে। নতুন বছরে সবাইকে একত্র করে বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে এই দেশকে বাঁচানোর জন্য যা করার সবকিছুই করা হবে। এই বিনা ভোটের সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরসহ ছাত্রদের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র জানিয়েছেন ড. কামাল। সোমবার মতিঝিলের নিজের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ড. কামাল বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে দেশের মানুষ আজ গভীর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামধারী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর, এবিএম সোহেল, হাসান আল মামুন, রাশেদ খান ফারুকসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্র গুরুতর আহত হয়। কেউ কেউ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
আমরা দেশবাসীকে দ্ব্যর্থহীন জানাতে চাই তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ যে জঘন্য ও বর্বর হামলা করেছে তা লক্ষ শহীদের প্রতি চরম অবমাননা।
তিনি বলেন, এই বছরের শেষে একদলীয় এক ব্যক্তির শাসনকে কেন্দ্র করে তারা পূর্ণ ক্ষমা নিয়ে অকল্পনীয় কাজ করছে। সংবিধানের উপর আজ আক্রমন হচ্ছে। আজ কি দেশে গণতন্ত্র আছে? এই প্রশ্ন দেশের মানুষের কাছে আমরা রাখছি। গণতন্ত্রের মধ্যে থেকে কি এগুলো করা যায়? পেশি শক্তি ব্যবহার করে একটি নির্বাচিত নেতার উপর কি এভাবে আক্রমণ করা যায়? দেশে এখন নজিরবিহীন জিনিসগুলো ঘটতে শুরু করেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন এই ঘটনায় যথাযথ বিচার করা হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জাবাবে ড. কামাল বলেন, উনি কি নিজের বিচার শুরু করবেন? নিজেকে আসামী ঘোষণা করে বিচার করলে একটা কথা হবে। এদের কাছে কোন বিচার চেয়ে লাভ নেই।
মুক্তিযুদ্ধের মঞ্চের বিষয়ে জেএসডির সভাপতি আ স ম রব বলেন, এই যে মুক্তিযুদ্ধের মঞ্চের কথা বল হচ্ছে। এটা কিসের মুক্তিযুদ্ধের মঞ্চ। এদের বাবাদেরওতো জন্ম হয় নাই ৭১ সালে। ছাত্রলীগই এই হামলা চালিয়েছে। সারাদেশে এর বিরুদ্ধে অদলীয় ছাত্র পরিষদের যে দাবি আমরা এর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি এবং সমর্থন করছি।
ঐক্যফ্রন্ট সব সময় বলে প্রতিবাদ আন্দোলন করবে। কিন্তু ফ্রন্টের পক্ষ থেকে কোন দৃশ্যমান আন্দোলন নেই কেন এমন প্রশ্নে জবাবে রব বলেন, প্রতিবাদের কর্মসূচী হিসেবে আমরা অনুমতি চাইলে আমাদের কোন অধিকারই দিচ্ছে না এই সরকার। জনগনকে সাথে নিয়েই আমরা আমাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করব।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন বিএনপি সরকারের সময় সংখ্যালগুরা ভারতে চলে গিয়েছে অত্যাচারের কারণে। এখন তারা দেশে আসতে চাইলে সরকার তাদের দেশে আনবে এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রব বলেন, কিছুদিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক স্বামী স্ত্রীর মত। পরে আবার বলছে ভারতের নাগরিকত্ব আইনের কারণে আমাদের দেশে কোন লোক আসবে না। একেকদিন একেক কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কোন সুযোগ নেই। রোহিঙ্গা আছে এগারো লক্ষ। এরা ফেরত যাবে না। দশ লক্ষ লোক নাগরিকত্ব আইনের কারণে যদি ফেরত আসে তাহলে দেশের তিন কোটি বেকার আছে তারা কি করবে?
দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে রব বলেন, আমরা আজকে জরুরি বৈঠকে বসেছি। সকল নেতৃবৃন্দ আসতে পারেনি। পরবর্তীতে আমরা আবার বৈঠক করে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো।
এর আগে বেলা বারোটায় জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরাম নেতা অধ্যাপক আবু সাঈদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ, দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।