ঢাকার মান ভাঙাতে মাঠে নামছে দিল্লি

ক্রাইসবার্তা রিপোটঃ
নয়া নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের চলতি টানাপড়েনের আবহেই মার্চে ঢাকা সফরের কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ২০২০-র ১৭ মার্চ থেকে শুরু হয়ে এক বছর বাংলাদেশে চলবে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠান। মূল অনুষ্ঠান ঠিক কোন সময়ে রাখা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। মার্চ মাসেই তা হওয়ার সম্ভাবনা।

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের সঙ্গে সাম্প্রতিক অতীতে যে মন কষাকষি চলছিল তাতে ঘৃতাহুতি হয়েছে নয়া নাগরিকত্ব আইন পাশ। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশকে এক বন্ধনীতে রেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বার বার উল্লেখ, ফের ভারত থেকে শরণার্থী যাওয়ার আশঙ্কা, শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক কলকাতা সফরে কেন্দ্রের কোনও প্রতিনিধির না থাকা— সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ভারত-বিরোধিতা তীব্র হয়েছে। তার জেরে সম্প্রতি দু’জন বাংলাদেশের মন্ত্রী এবং একটি সরকারি প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফর বাতিল করে দিয়েছে ঢাকা।এই অবস্থায় প্রতিবেশীদের মধ্যে একমাত্র ভরসাযোগ্য রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের চলতি গ্রহণ-দশা কাটাতে, বাড়তি পদক্ষেপ করতে চাইছে সাউথ ব্লক। প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর অবশ্যই সেই উদ্যোগের প্রধান বিষয়।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে পরবর্তী বিদেশ সচিবের দায়িত্বে এনেও বাংলাদেশ-সহ প্রতিবেশী দেশগুলিকে বার্তা দিতে চাইছে মোদী সরকার। বাংলাদেশ, মায়ানমার এবং শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব হিসাবে আগে বিদেশ মন্ত্রকে কাজ করেছেন হর্যবর্ধন। ঢাকায় শুধু ভারতীয় হাইকমিশনারের দায়িত্বই সামলাননি, সে দেশে তাঁর জনপ্রিয়তাও ছিল বিপুল।শেখ মুজিবের শতবর্ষ উৎসবে তাঁকে নিয়ে তথ্যচিত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকল্প এবং অনুষ্ঠানে জড়িয়ে রয়েছে ভারত। সূত্রের খবর, শ্রিংলা জানুয়ারির শেষে দায়িত্ব পাওয়ার পরই এই অনুষ্ঠানগুলিকে সফল করার কাজে হাত দেবেন। ঢাকাতেও যাবেন তিনি। এই উৎসবকে সামনে এনে নতুন বিদেশসচিবের নেতৃত্বে বিভিন্ন স্তরে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে মেঘ কাটাতে।

অক্টোবর মাসে দিল্লি সফরে এসে শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা। পাশাপাশি বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের নেতা-সহ কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষে। সেই তালিকায় রয়েছেন, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক, রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রাক্তন মহাসচিব বান কি মুন, ইউনেস্কোর প্রাক্তন মহাসচিব ইরিনা বুকোভা ও আরব লিগের প্রাক্তন মহাসচিব আমর মুসার নাম। আমন্ত্রণের তালিকায় আরও রয়েছেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, বিজেপির প্রবীণ নেতা এল কে আডবাণী, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাথির মহম্মদ প্রমুখ।

Please follow and like us:

Check Also

নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ, বাংলাদেশিদের মৌলিক স্বাধীনতা চর্চার সক্ষমতা দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কথা আরও একবার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ২০শে জুলাই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।