ক্রাইসবার্তা রিপোটঃ বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ির চাপায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের বাইনচটকি গ্রামের জোমাদ্দার বাড়ির সামনের সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বরগুনা বাইনচটকি ঘাটে ফেরি ধরার জন্য তাড়া ছিল ইউএনওর। ফেরি আটকাতে তিনি ঘাটে ফোনও করেছিলেন। নিহতরা হলেন, মোটরসাইকেল চালক বশির পঞ্চায়েত (৫০) ও তার বন্ধু মোফাজ্জেল হোসেন (৩৫)। বশির পাথরঘাটা কাকচিড়া ইউনিয়নের শিংড়াবুনিয়া গ্রামের খালেক পঞ্চায়েতের ছেলে। মোফাজ্জেল হোসেনের বাড়ি ভোলা চরফ্যাশন উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নে। তিনি বশিরের বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাইনচটকি ফেরিঘাট এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে বন্ধু মোফাজ্জেল কে নিয়ে বশির পাথরঘাটার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। জমাদ্দার বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি পাজেরো জিপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে মোটরসাইকেলের চালক বশির ও আরোহী মোফাজ্জল গুরুতর আহত হয়। পাথরঘাটা ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক বশিরকে মৃত ঘোষণা করেন। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক তাসকিয়া সিদ্দিকা বলেন, হাসপাতালের নিয়ে আসার আগেই বশিরের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত মোফাজ্জলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মোফাজ্জেলের সঙ্গে থাকা বশিরের প্রতিবেশী মো. মহারাজ বলেন, বরিশাল শেবাচিমে আনার সঙ্গে সঙ্গেই রাত পৌনে ১০টার দিকে মোফাজ্জেলের মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শী জাবের সোহেল জানান, ইউএনওর গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে বাইনচটকির দিকে আসছিল। সংঘর্ষের পর মোটরসাইকেলটি ইউএনওর গাড়ির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ হাত দূরে চলে যায়। গাড়ির চালক তাৎক্ষণিক ব্রেক করেননি। এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমি গাড়ি নিয়ে পাথরঘাটা থেকে জেলা শহর বরগুনায় যাচ্ছিলাম। এমন সময় বিপরীত দিকের রং পাশ থেকে মোটরসাইকেলটি দ্রুতগতিতে এসে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটায়। আমি চিকিৎসা নিয়েছি, চালক জাহাঙ্গীরের বুকে আঘাত লাগায় তাকে বরিশাল শেবাচিমে ভর্তি করা হয়েছে। তার ড্রাইভার জাহাঙ্গীর আলম জানায়, ইউএনও স্যার নিজেই তখন গাড়ি চালাচ্ছিলেন। পাথরঘাটা থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন জানান, নিহতদের পরিবার কোনও অভিযোগ না করায় লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ইউএনও হুমায়ুন কবির তার সরকারি গাড়িতে করে পাথরঘাটা থেকে বরগুনা আসছিলেন। পথে গাড়িটির সঙ্গে মোটরসাইকেলে সংঘর্ষ হয়। এতে মোট দুইজন মারা যান। তবে ইউএনওর গাড়িটি কে চালাচ্ছিলেন তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
Check Also
ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন
আবুল হোসেন সদর প্রতিনিধি : ঘোনা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ …