ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ ১১ বছর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত হয়েছিলেন বুদ্ধু নামের এক ব্যক্তি। এবার তার ছেলেও বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারালেন।
বুধবার সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের জোহরপুর সাতরশিয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক প্রাণ হারান।
এরমধ্যে বুদ্ধর ছেলে সেলিমও (২১) রয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার এনামুল সরকার গ্রামে।
নিহত অন্যজন হলেন শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের দশরশিয়া গ্রামের শফিকুলের ছেলে সুমন (২০)।
এদিন বিএসএফের গুলি গুলিতে আহত হয়েছেন আরও দুজন। গুলিবিদ্ধ দুজনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি ও আরেকজন ভারতীয় নাগরিক।
আহতরা রাজশাহীতে অজ্ঞাত কোনো ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত সেলিমের বাবা বুদ্ধুও ২০০৮ সালে পদ্মার জলসীমায় অনুপ্রবেশকারী বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন। এর ১১ বছর সেই বিএসএফের গুলিতে নিহত হলেন ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার জোহরপুর সাতরশিয়া সীমান্ত পথে কয়েকজন বাংলাদেশি রাখাল গরু আনতে ভারতের দিকে যাচ্ছিলেন। তারা ভারতীয় সীমান্তের প্রায় দুই কিলোমিটার ভেতরে টিকলিচর নামক এলাকায় পৌঁছলে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার চাঁদনিচক বিএসএফ ফাঁড়ির সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়।
এদিকে রাতেই বিএসএফ সদস্যরা জিরো লাইনের কাছাকাছি এলাকায় মরদেহগুলো ফেলে রেখে চলে যায়। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় স্বজনরা মরদেহগুলো উদ্ধার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে গভীর রাতে সবার অগোচরে মরদেহগুলো পদ্মার চর এলাকায় পুঁতে ফেলা হয়।
এলাকাবাসী আরও জানান, সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে কেউ মারা গেলে আইনি ঝামেলা এড়াতে এভাবেই গোপনে মরদেহ পদ্মার চরে পুঁতে ফেলা হয়।
বুধবার রাতেও নিহত দুই যুবকের মরদেহ পদ্মার চরের কোনো অজ্ঞাত স্থানে পুঁতে ফেলা হয়েছে।
এদিকে সীমান্তে এই হতাহতের ঘটনা সম্পর্কে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা পাঁকা ইউনিয়ন প্রজন্মলীগের সভাপতি আল আমিন জুয়েল বলেন, গুলির ঘটনা ঘটে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পরেই। দুই বাংলাদেশি যুবক নিহতের খবর জানাজানি হয়। তবে আইনি ঝামেলা এড়াতে নিহতদের আত্মীয় স্বজনরা গোপনে মরদেহগুলো উদ্ধার করে দাফন করে ফেলেছেন।
বিষয়টি জানতে চাঁপাইনবাবগঞ্জস্থ ৫৩, বিজিবি ব্যাটালিয়ানের কর্মকর্তাদের ফোন দেয়া হলেও তারা ফোন ধরেননি। ফলে বিজিবির কোনো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।