ক্রাইমর্বাতা রিপোট: সীমান্ত হত্যা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ। ভারতীয় শীর্ষ নেতৃত্ব সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা এবং সীমান্ত সুরক্ষায় বিএসএফ এর প্রাণঘাতি নয় এমন অস্ত্র ব্যবহারের যে অঙ্গীকার রয়েছে তা বাস্তবায়ন দেখতে চায় ঢাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবুধাবি সফর নিয়ে আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলেন মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এক প্রশ্নের জবাবে দিল্লির প্রতি সীমান্ত হত্যা নিয়ে এভাবেই তার বার্তা স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নীতি হলো একজনও যেন সীমান্তে মারা না যায়। ভারত এ বিষয়ে একমত হয়েছে। তারপরও মৃত্যু হচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যা হওয়ায় বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন। এ অবস্থায় ভারতের যে অঙ্গীকার আমরা তার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ভারত সফর বাতিলের প্রেক্ষাপটে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশি দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক শীতল কি-না? এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, না, মোটেও ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক শীতল নয়।
শীতলতার কথা মিডিয়া বলে, আমরা বলি আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত উষ্ণ। এটা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হওয়ার কারণে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম দিল্লির অনুষ্ঠানে যেতে পারছেন না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার সমর্থিত একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান ওআরএফ আয়োজনটি করছে। এটি দ্বিপক্ষীয় কোনো অনুষ্ঠানও নয়। ‘রাইসিনা সংলাপে’ প্রতিমন্ত্রীর না যাওয়ার প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমে যে খবর প্রচার হয়েছে তাতে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন- মিডিয়া একটা নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়েছে। এটা দুঃখজনক। এ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া একটু বেশিই করে। ওই অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী না যাওয়ায় আকাশ ভেঙে পড়েনি মন্তব্য করে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, তারা আমাকে আমন্ত্রণ করেছিল, আমি না বলে দিয়েছি। পরে তারা প্রতিমন্ত্রীকে ধরেছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমিরাতে যাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে আবুধাবিতে দূত সম্মেলনে তার উপস্থিতি জরুরি হওয়ায় তিনিও না বলেছেন। এটা এমন কিছু নয়।
এ সময় কাশ্মীরের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে ভিসা না দেওয়ার যে খবর ভারতীয় মিডিয়া ছেপেছে তা সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন বলে পুরোপুরি নাকচ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর আবুধাবি সফরে যা হবে: সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনের সরকারি সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে আজ বিকাল ৫টায় রওনা হচ্ছেন। বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় তিনি সেখানে পৌঁছাবেন। দেশটির রাজধানী আবুধাবিতে ‘আবুধাবি সাসটেইনেবল উইক’, ‘জায়েদ সাসটেইনেবল অ্যাওয়ার্ড সিরিমনি’ ছাড়াও দেশটির বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী ওই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে আয়োজিত দূত সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতার আহ্বান এবং বাংলাদেশিদের নিরাপত্তার বিষয়ে দিক নির্দেশনা বিষয়ক বক্তব্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘন ঘন অবুধাবি সফর বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মধ্যেপ্রাচ্যে বাণিজ্য, জনশক্তি বাড়াতে চাই। বিশেষ করে মধ্যেপ্রাচ্য থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসছে। এটাকে আরও বাড়াতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর দেশটি সফরের ফলে ৬ বছর পর সংযুক্ত আরব আমিরাত জনশক্তি বাজার খুলে দিয়েছে। ১৭টি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশিদের শ্রমবাজারে প্রবেশাধিকার দিতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে আবুধাবি। কিন্তু আমলাতন্ত্রের কারণে এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি বলে দাবি করেন মন্ত্রী।