ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে চার শিক্ষার্থীকে রড, লাঠি ও স্ট্যাম্প দিয়ে রাতভর ছাত্রলীগের নির্যাতনের ঘটনায় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর।
বুধবার বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন নুর।
তিনি বলেন, ‘ঢাবির জহু হলের চার শিক্ষার্থীকে শিবির অ্যাখ্যা দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে থানায় দিয়েছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। শিক্ষাঙ্গনে কি ওদের সন্ত্রাস চলবেই? বিকাল ৩ টায় রাজু ভাস্কর্য থেকে প্রতিবাদ মিছিল। ছাত্রসমাজ এক হও, সন্ত্রাস রুখে দাও।’
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে চার শিক্ষার্থীকে রড, লাঠি ও স্ট্যাম্প দিয়ে রাতভর নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিবির সন্দেহে হলের গেস্টরুমে ডাকা হয় ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মুকিম চৌধুরীকে।
শুধু তাই নয়, তার মোবাইলের কললিস্টে আরও তিন বন্ধুর নাম থাকায় তাদেরও ডেকে গেস্টরুমে আনা হয়।
তারা হলেন- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানওয়ার হোসেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দীন ও একই বর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আফসার উদ্দীন।
এ সময় হল শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা, হল সংসদের সহ-সভাপতি সাইফুল্লাহ আব্বাসী অনন্তসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতারা রড, লাঠি ও স্ট্যাম্প দিয়ে ওই চার শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন।
নির্যাতন সইতে না পেরে তারা মেঝেতে শুয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তারা অচেতন হয়ে পড়েন। এভাবে রাত ২টা পর্যন্ত তাদের ওপর নির্যাতন চালায় ছাত্রলীগ নেতারা।
পরে রাত ২টার পর তাদের প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় পুলিশ।
তবে ছাত্রলীগের অন্য একটি সূত্র বলছে, শিবির সন্দেহের কারণে নয়, হলের গেস্টরুমের মিটিংয়ে না আসাকে কেন্দ্র ওই চার শিক্ষার্থীকে পেটানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হলশাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার সময় আমি হলে ছিলাম না। এ বিষয়ে কিছু জানি না।
তবে ঘটনাটি যেহেতু হলের ভেতর ঘটেছে, তাই বিষয়টি হল প্রশাসন দেখবে বলে মনে করেন তিনি।
নির্যাতনের বিষয়ে ঢাবি প্রক্টর গোলাম রব্বানীকে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।