গণধর্ষণের পর ফেসবুক লাইভে ৪ ধর্ষকের উল্লাস অতপর…….

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  হ্যালো ফ্রেন্ডস্, আমরা আগামী কালকা হয়তো জেলে থাকতে পারি। না হয় বাড়ির আশেপাশে থাকতে পারব না। আর আমাদের মনে হয় আমি আর শরীফ দুইজনের থিকা একজন বিয়া করতে’- গত ১৫ জানুয়ারি এক কিশোরীকে গণধর্ষণের পর ৪ ধর্ষক উল্লাস করে তা ভিডিও করে ফেসবুকে আডলোড করেছিলেন এমন ভিডিও। শুক্রবার রাতে ওই ৪ ধর্ষক গ্রেপ্তারের পর তাদের মোবাইল থেকে ভিডিওটি উদ্ধার করে র‌্যাব। পরে তাদের উল্লাসের ভিডিও ভাইরাল হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানার নৈয়পুরা গ্রামের সোহরাব উদ্দিনের ছেলে গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল হোতা শরীফ হোসেন (১৮), ধর্ষণের পরিকল্পনাকারী ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানার গোলাভিটা গ্রামের মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে আহসান ওরফে হাসান (১৬), সহযোগী ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার উজান চন্দ্রপাড়া গ্রামের লিটন মিয়ার ছেলে ইমরান হাসান সুজন (১৯) ও গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর গ্রামের সাবাজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে শরিফ উদ্দিন মোল্লা (২০)। তারা পরিবারের সাথে নয়নপুর এলাকায় ভাড়া থাকতেন।

প্রথমে শরীফ হোসেনকে গাজীপুর শহরের রাজবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে ইমরান হাসান সুজন, শরিফ উদ্দিন মোল্লা ও হাসান যুবককে ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১।

র‌্যাব-১ এর গাজীপুর ক্যাম্পের কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত ১৫ই জানুয়ারি বুধবার বিকেলে এক বান্ধবীর সহায়তায় ওই চার বন্ধু জন্মদিনের কথা বলে কৌশলে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর এলাকার একটি বাসায় ওই কিশোরীকে ডেকে নিয়ে যায় ও জন্মদিনের কেক কেটে সবাই মিলে আনন্দ উল্লাস করে। এক পর্যায়ে আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওই কিশোরীকে এনার্জি ড্রিংসের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে পান করিয়ে অজ্ঞান করে। পরে পাশের একটি ঝোঁপের ভেতর নিয়ে কিশোরীর হাত, পা ও মুখ বেঁধে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে।
ইমরান হাসান সুজন তার মোবাইল ফোনে ওই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ এবং তার ফেসবুক আইডিতে আপলোড করে। ধর্ষণের পর ৪ বন্ধু একটি সেলুনে গিয়ে উল্লাস করে এবং ‘হ্যালো ফ্রেন্ডস-জেলে থাকতে পারি’ এসব বলে আরো একটি ভিডিও করে সেটিও ফেসবুকে আপলোড করে। গ্রেপ্তারের পর ভিডিওগুলো তাদের মোবাইলে পাওয়া যায়।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনার পর কিশোরীর মা বাদি হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছিলেন।

এদিকে এ ভিডিও প্রকাশের পর একাধিক অভিভাবক তাদের শঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, আগে মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর পর কোনো চিন্তা হতো না। এ ঘটনার পর খুব চিন্তা হচ্ছে।

এদিকে ছেলে সুজনকে গ্রেপ্তারের খবরে বাবা লিটন মিয়া বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী কিশোরীর মা। তিনি জানান, ঘটনার পরপরই মামলা না করতেও তাদের বাধা দেওয়া হয়েছিল। এখন মামলার আসামি গ্রেপ্তারের পরও তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেছেন।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল সাকিব জানান, হুমকির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। কিশোরীর পরিবারটিকে নিরাপত্তা দিতে আমরা কাজ করছি।

Check Also

‌‘আ.লীগ-বিএনপি বা যে কোনো রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা জামায়াতের নেই’

বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।