ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: সাতক্ষীরা: জেলায় ১০ হাজার ২০০ জন বিদেশ ফেরত প্রবাসীর মধ্যে হোমকোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে ২৫৪২ জনকে। ফলে হোমকোয়ারেন্টাইনের বাইরে রয়েছে ৭ হাজার ৬৫৮ জন। এছাড়া প্রতিদিন সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে শত শত বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী প্রবেশ করছে। রবিবার সকাল থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ১২৭ জন বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী ভারত থেকে প্রবেশ করেছে। গত শনিবার প্রবেশ করেছে আরো ১০৪ জন বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী। ৩০ মার্চ সোমবার ও একই অবস্থা। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। এছাড়া রাতের আধারে অবৈধ ভাবে প্রতিনিয়ত জেলার সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারত থেকে প্রবেশ করছে তার সংখ্য্ওা কম নয়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গোটা বাংলাদেশে যখন চলছে অঘোষিত লকডাউন। ঘর থেকে কোন মানুষ বের হতে পারছেনা। ঠিক সে মুহুর্তেও বন্ধ নেই ভারত থেকে বাংলাদেশেীদের প্রবেশ।
ভারতের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে কোন বাংলাদেশি তো নয়, কোন ভারতীয় নাগরিকও বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করতে পাচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশিরা প্রতিদনই ভারত থেকে বাংলাদেশে বৈধ-অবৈধ পথে প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। বিশেজ্ঞরা বলছে এতথ্য জেলাবাসির জন্য শুধু হুমকি নয়, রীতিমত আতংকের ও উদ্বেগে।
সাতক্ষীরার ভোমরা ইমগ্রেশন ওসি বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, রবিবার বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ১২৭ জন বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী ভারত থেকে প্রবেশ করেছেন। তবে, ভারতে লক ডাউনের কারনে ভারতীয়রা বাংলাদেশ থেকে তাদের দেশে ফিরতে পারছেননা। তিনি জানান, সে দেশের ইমিগ্রেশন এ ব্যাপারে খুবই কঠোর। অথচ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ বন্ধ নেই। তিনি আরো জানান, প্রতিদনই জেলার প্রতিটি থানায় আগতদের তালিকা পাঠানো হচ্ছে। তারা যাতে ১৪ দিন হোম করেয়েন্টাইনে থাকে সে ব্যাপারে নির্দেশনাও প্রদাান করা হচ্ছে।
জেলা পুলিশের তথ্য মতে, ১ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত ১০ হাজার ২শত জন প্রবাসী বিদেশ থেকে সাতক্ষীরায় এসেছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ এসেছেন ভারত থেকে।
সোমবার (৩০ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত জেলাতে ২ হাজার ৫৪২ জনকে হোমকোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ১৫২ জন এসেছেন। হোমকোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিন থাকার পর ছাড়পত্র পেয়েছেন মাত্র ২৪৫ জন।
হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকাদের মধ্যে সদরে ৩১৮ জন, আশাশুনিতে ২৫৮ জন, দেবহাটায় ২২৫ জন,কালিগঞ্জে ২৪৭ জন,কলারোয়াতে ৭৫৮ জন,তালাতে ৩১৮ জন এবঙ শ্যামনগরে ৪১৭ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন শাফায়াত বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাতক্ষীরায় কোভিড ১৯ পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না থাকলেও অন্যান্য সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে। জনগণকে সতর্ক ও সচেতন থাকার আহবান জানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, সদর হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, বিদেশ ফেরত ১০ হাজার ২০০ জনের তালিকা জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন অফিসে দেয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী তাদের বিষয়ে সার্বিক খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। বিদেশ ফেরত সকলকে মনিটর করার সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতার আহ্বান জানিয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত বলেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আপনারা বাইরে ঘোরাফেরা বা জনসমাগম স্থানে যাবেন না। স্বাস্থ্য বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সকলকে নিরাপদ রাখার।
এদিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণবিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বিদেশ ফেরতরা বাইরে ফেরাফেরা করলে বা কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে জেল-জরিমানা করা হবে। ইতিমধ্যে কয়েক লক্ষ টাকার জরিমাণা করা হয়েছে।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …