সমগ্র দেশ জুড়ে যখন চলছে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক। ঠিক তখনই সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে এখনো প্রবেশ করছে শত শত বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও আতঙ্ক বাড়ছে। এছাড়া রাতের আধারে অবৈধ ভাবে প্রতিনিয়ত জেলার সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে প্রবেশ করছে।
ভোমরা ইমিগ্রেশনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রবিবার সকাল থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ১২৭ জন বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী ভারত থেকে প্রবেশ করেছে। গত শনিবার প্রবেশ করেছে আরো ১০৪ জন বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গোটা বাংলাদেশে যখন চলছে অঘোষিত লকডাউন। ঘর থেকে কোন মানুষ বের হতে পারছেনা। ঠিক সে মুহুর্তেও বন্ধ নেই ভারত থেকে বাংলাদেশেীদের প্রবেশ।
সাতক্ষীরার ভোমরা ইমগ্রেশন ওসি বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, রবিবার বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ১২৭ জন বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী ভারত থেকে প্রবেশ করেছেন। তবে, ভারতে লক ডাউনের কারনে ভারতীয়রা বাংলাদেশ থেকে তাদের দেশে ফিরতে পারছেননা। তিনি জানান, সে দেশের ইমিগ্রেশন এ ব্যাপারে খুবই কঠোর। অথচ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ বন্ধ নেই। তিনি আরো জানান, প্রতিদিনই জেলার প্রতিটি থানায় আগতদের তালিকা পাঠানো হচ্ছে। তারা যাতে ১৪ দিন হোম করেয়েন্টাইনে থাকে সে ব্যাপারে নির্দেশনাও প্রদান করা হচ্ছে।

ভারতের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে কোন বাংলাদেশি তো নয়, কোন ভারতীয় নাগরিকও বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করতে পাচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশিরা প্রতিদিনই ভারত থেকে বাংলাদেশে বৈধ-অবৈধ পথে প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এতথ্য আমাদের জন্য শুধু হুমকি নয়, রীতিমত আতংকের, উদ্বেগে।

বিদেশ থেকে আসা   প্রায় ২০ হাজার ব্যক্তি জেলাতে প্রবেশ করেছে। এর মেধ্য এ পর্যন্ত মোট ২ হাজার ১৫৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বাকি প্রায় ১৮ হাজার মানুষ এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে।শুধু  ভারত থেকে এসেছেন প্রায় ১০ হাজার। ফলে ঝুকির মধ্যে জেলার প্রায় ২২ লক্ষ মানুষ।

করোনা প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত আইন মেনে পরামর্শ দিয়েছেন সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশব্যাপি পুলিশি অভিযান ও সামরিক বাহিনীর বিছিন্ন ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারের কারণে অন্যান্য দিনের তুলনায় জেলার মানুষ বেশি রাস্তঘাটে বের হয়েছে। সারাদেশের মতো আমরা করোনার পরিস্থিতির লকডাউন মেনে চলছি। এটি আইনের চেয়ে প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তার বিষয়। করোনা একটি ছোয়াছে রোগ। যে কোন সময় যে কারে মাধ্যমে এই রোগটি ছড়াতে পারে। সেজন্য আমরা অপ্রয়োজনে রাস্তঘাটে বের না হই। আমার পক্ষ থেকে অনেক অনুরোধ এবং বিনয় করার শর্তেও অনেকে অযথা ঘোরাঘুরি করছেন। আপনাদের অসচেতনার কারণে এই মহামারি রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তিনি আরও বলেন, অনেকে খেলাধুলার আয়োজন করছেন। দোকান পাটে আড্ডা দিচ্ছেন। অনেকে মসজিদে তাবলিগের আয়োজন করছেন। অনেকে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করেছের। এটা খুবই দু:খজনক। সরকারের নির্দেশনা মেনে আরোও কিছু দিন বাসায় অবস্থান করার পরামর্শ দেন তিনি।
সবার নিরাপত্তার প্রশ্নে নিজের সচেতনার পাশাপাশি প্রতিবেশিদের সচেতনার প্রতি তাগিদ দেন। সরকারের সকল বিভাগ করোনা প্রতিরোধে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারণে আজকে অনেকে রাস্তায় নেবে এসেছেন। আগামীকাল থেকে প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাস্তায় বের হতে নিষেধ করেন তিনি। যে কোন সমস্যায় পুলিশের সাহায্যের জন্য বলেন। পুলিশের পাশাপাশি প্রতিটি নাগরিকের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ইতালিসহ অনেক উন্নত দেশ করোনা মোকাবেলায় হিমসিম খাচ্ছে। সেদিক দিয়ে বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে আছে। আপনাদের আইন মানার কারনে এটি সম্ভব হচ্ছে। সামনের দিনগুলো সরকারের নির্দেশিত আইন মেনে চলতে পারলে এই খারাপ সময় থেকে রক্ষা পাবো বলে বিশ্বাস করি। এ বিষয়ে প্রত্যোকের সহযোগিতা প্রয়োজন।
সবাইকে তিনি বাসায় থাকার আহ্বান জানিয়ে আরোও বলেন, অচ্ছল পরিবারের খোঁজ নিতে হবে তাদের বাড়িতে খাবার আছে কিনা তাদের সাহায্য প্রয়োজন কিনা সে বিষয়ে খবর নিতে হবে।
করোনা রোগের চিকিৎসায় রোগ ভালো হয় কিনা তার চেয়ে রোগ না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। জেলা পুলিশ সব সময় আপনাদের পাশে আছে। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় বের হবে না। অপ্রয়োজন রাস্তায় বের না হতে নিষেদ করেন।

জেলা প্রশাসক জানান, করোউনা প্রতিরোধে আমরা কঠোর হচ্ছি। অআইন না মানায় কয়েক জনকে জনিমানা করা হয়েছে।

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।