এবার হোম সরকারের নির্দেশনাকে থোরাই কেয়ার করে হোম কোয়ারেন্টাইন ভঙ্গ করে হোম কোয়ারান্টাইনে থাকা ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দিলেন কুশখালী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদ। শুধু বিয়ে নয়, রীতিমতো খেয়ে দেয়ে আনন্দ ফূর্তি করে বিয়ের আয়োজন শেষ করলেন তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, কুশখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মারফত উল্লাহ গাজীর ছেলে মাসুম গাজী, মাসুম গাজীর স্ত্রী ফাইজুন্নাহার ও ছেলে ইলিয়াস গাজী কয়েক বছর আগে কাজের জন্য অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন। ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত ঠিক সেই মুহূূর্তে গত ২৬ মার্চ কেড়াগাছী সীমান্ত দিয়ে তারা আবারও অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তবে তারা সাথে করে নিয়ে আসে ১৭ বছরের এক কিশোরীকে। এরপর বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় গ্রাম পুলিশের সদস্যরা মাসুুুম গাজীর বাড়িতে লাল ফ্লাগ টানিয়ে দিয়ে ১৪ দিন হোমকোয়ারেন্টািনে থাকার পরামর্শ দেন। মাসুম গাজীও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হোম কোয়ারান্টাইনে থাকবেন বলে অঙ্গীকার করেন। তারা আরো জানান, ভারত হতে সাথে করে নিয়ে আসা রুমা নামের ওই মেয়েটিকে এমন প্রশ্ন আমরা করলে মাসুমের বাবা মারফত উল্লাহ আমাদের বলে মেয়েটি আমাদের নাতবউ। তারপর মাসুমের কাছে জানতে চাইলে সে বলে আমার বউমা (ছেলের বউ) ভারত হতে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মাসুমের ছেলে ইলিয়াস গাজী ওই মেয়েটি নিজের আপন বোন বলে পরিচয় দেয়। তাদের একেক জনের কথা একেক রকম হওয়ায় আমরা হতবিহম্বল হয়ে যাই। আসলে ওই মেয়েটি তার পরিবারের সম্মতিতে নিজে এসেছে নাকি তাকে অপহরণ করে এনেছে এই প্রশ্ন আমাদের সবার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে এখন। তারা বলেন, হঠাৎ গত ২৯ মার্চ রাতে আমরা শুনতে পাই সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কুশখালী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোরশেদ ইলিয়াস গাজী ও ভারত হতে নিয়ে আসা ওই মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছে। তখন খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সাতক্ষীরা হতে ডিএসবির এক সদস্য এসে বিষয়গুলো সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। তবে এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাদের সাথে আঁতাত করে গোপনে ওই ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দিতে বলেছেন বলে তাদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সোমবার সকালে জানতে পারি গতরাতে তাদের বিয়ে কমপ্লিট হয়ে গেছে। স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যখন গোটা বাংলাদেশ করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত। শুধু বিদেশ ফেরত নয় সকলকে যখন হোম কোয়ারান্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সরকার আর সেগুলো তদারকির দায়িত্ব স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ সকলের ঠিক তখনই চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এমন কাজ হবে আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। আমাদের কুশখালী ইউনিয়নে যদি এখন করোনা মহামারী দেখা দেয় তাহলে এই দায়ভার কে নেবে ? আমরা সরকারের নিয়মনীতি অমান্যকারী এমন চেয়ারম্যানের বহিস্কারের দাবি জানাচ্ছি। এদিকে ক্ষোভ প্রকাশ করে কুশখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, সকালে শুনলাম চেয়ারম্যান শ্যামল ও চেয়ারম্যান (সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান) মোরশেদ ভাই থেকে গতরাতে বিয়ে দিয়ে খাওয়া দাওয়া করেছে। সদর থানা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ক্বারী মিজানুর রহমান বলেন, করোনায় যখন গোটাদেশ আতঙ্কিত ঠিক তখনই চেয়ারম্যান শ্যামল ইউনিয়নের মাথা হয়ে এমন কাজ করলো যেটা কখনও মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের কুশখালী ইউনিয়নে যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত হয় তবে তার দায় দায়িত্ব চেয়ারম্যান শ্যামলকেই নিতে হবে।
এ ব্যাপারে কুশখালী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা যায়নি।
তবে ছেলের দাদা মারফত উল্যাহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার পোতার (পুত্রের পুত্র) আগে বিয়ে হয়েছিলো, এই আর একবার হলো। চেয়ারম্যান শ্যামল ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোর্শেদ উপস্থিত থেকে বিয়ের আয়োজন করেন এবং রান্নাবান্না করে খাওয়া-দাওয়া করেন। পত্রদূত রিপোর্ট:
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …