ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়ায় এক নারীসহ তিনজনকে সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছিল।
গত ২৭ মার্চ ওই তিনজনকে আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রোববার দুপুর ১টার দিকে ওই তিনজনকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ফের ভার্তি করা হয়।
এদিকে ওইদিন বিকালে ওই তিনজনের বাড়ি লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। পুরো উপজেলা রাতেই লকডাউন করে রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। এদের সংস্পর্শে আসা ৫০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিবচরজুড়ে টহল দিচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকা তিনজনের মধ্যে দুজন স্বামী-স্ত্রী। তারা শিবচর উপজেলার পাচ্চর ইউনিয়নের হাজীপুরের বাসিন্দা। অপরজন একই উপজেলার বহেরাতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা। ৩২ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ইতালি প্রবাসী।
আইসোলেশন থেকে মুক্ত হওয়ার পর বাড়িতে ফিরলে এ তিনজনসহ ১৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠালে তাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর দুপুরে তাদের সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে নেয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক ঘোষ বলেন, ওই তিনজনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। তাদের পুণরায় আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। তাদের সংস্পর্শে আসা ৫০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
জেলার সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, এক নারীসহ তিনজন দুপুর ১টার দিকেই এসেছে। তাদের ভালোভাবে পরীক্ষা করা হবে। তারপর নমুনা নেয়া হতে পারে।
ওই তিনজনকে একবার আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র দেয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তখন তারা সুস্থ ছিলেন। তাদের কোনো অসুবিধা ছিল না; তাদের টেস্ট নেগেটিভও ছিল। তাই তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছিল। এখন তারা যেহেতু আবার এসেছে আমরা আপতত এ বিষয় কিছু বলতে পারছি না।
আমাদের করোনা প্রতিরোধের জন্য নিয়োজিত মেডিকেল টিম তাদের চিকিৎসা দিচ্ছে। সন্ধ্যার আগে বিস্তারিত জানানো হবে।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, আইইডিসিআর মাদারীপুরের শিবচরকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা দেয়ায় এ উপজেলার লকডাউনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সব যানবাহন বন্ধ থাকবে। জনগণকে ঘরে থাকতে হবে।
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, সবাইকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। সবাইকে ঘরবদ্ধ থাকতে হবে।
জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র জানায়,মাদারীপুরে ১ মার্চ থেকে বিভিন্ন দেশ থেকে মাদারীপুরে আসেন ৩ হাজার ৫৩২ জন। এদের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয় ১ হাজার ৩৮৮ জনকে। ইতিমধ্যে হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হয় ১ হাজার ১৯১ জনের।
বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ২৯৭ জন। গত দুইদিন জেলার ২৯ জনের নমুনা আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সদর উপজেলার এক যুবক ও শিবচর উপজেলার ৩ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।