করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার।বাইরে বের হলেই এখন বেশিরভাগ মানুষকে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। যদিও অধিকাংশ মানুষ এই মাস্ক ব্যবহারের নিয়ম জানেন না এবং মানেনও না। আর আমরা এটাও জানি না যে, কাদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে আবার কাদের জন্য জরুরি নয়।
মুখের মাস্ক, হাতের গ্লাভস এবং অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম কি এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম? অনেকে আবার বাড়িতেও মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করছেন। কিন্তু
সেগুলো কি নিরাপদ?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, শুধুমাত্র দুই ধরণের মানুষের সুরক্ষায় মাস্ক পরা উচিত।
তারা হলেন-
১. যারা অসুস্থ ও কারো মধ্যে যদি এই ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দেয়।
২. যাদের করোনাভাইরাস হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এছাড়া তাদের দেখভালের কাজে যারা নিয়োজিত রয়েছেন তারা মাস্ক ব্যবহার করবেন।
এই দুই শ্রেণীর মানুষ ছাড়া সর্বসাধারণের জন্য মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। তার একটি বড় কারণ হচ্ছে, মাস্ক পরা বা খোলার সময় অন্য মানুষের কাশি এবং হাঁচির কারণে সেগুলো বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘনঘন হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা মাস্ক পরার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরী।
সাধারণের জন্য এসব মাস্ক ব্যবহারের সুপারিশ করেন না বিশেষজ্ঞরা। শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের জন্য, যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসেন এবং বাতাসে ভেসে থাকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন তাদেরকে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসক, সেবিকা বা স্বাস্থ্যকর্মী যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা সম্ভাব্য রোগীদের এক মিটারের মধ্যে থাকেন তারা মাস্ক ব্যবহার করবেন। এই কর্মীরা হাসপাতাল, প্রাথমিক সেবা, অ্যাম্বুলেন্স অথবা বাড়িতে সেবাদানকারীরাও হতে পারেন। অন্য যে স্বাস্থ্য-কর্মীরা কম ঝুঁকিতে থাকেন, তারা সাজিক্যাল মাস্ক পরতে পারেন।
সংক্রমিত কেউ যখন কথা বলেন, কাশি দেন বা হাঁচি দেন, তখন খুব ক্ষুদ্র আকারে করোনাভাইরাস বাতাসে ভেসে বেড়াতে পারে। সরাসরি স্পর্শ বা বিষাক্ত কোন বস্তুর মাধ্যমে সেগুলো চোখ, নাক ও মুখ দিয়ে শরীরের ভেতর প্রবেশ করতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গবেষণা করে বোঝার চেষ্টা করছে যে, সাধারণ মানুষজনও মাস্ক ব্যবহার করে উপকার পায় কিনা। তারা পরীক্ষা করে দেখছেন যে, ভাইরাসটির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাওয়া যায় কিনা।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকার দেশটির নাগরিকদের মাস্ক পরার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, করোনার উপদ্রুত এলাকাগুলোয় বাইরে গেলে তারা যেন মাস্ক ব্যবহার করেন অথবা তাদের মুখমণ্ডল স্কার্ফ দিয়ে ঢেকে রাখেন।
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাসিও বলেছেন, ‘এটা একটা স্কার্ফ হতে পারে বা বাড়িতে তৈরি কিছু একটা হতে পার’।
কোন ধরণের মাস্ক সবচেয়ে ভালো?
সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা দেয় এফএফপি৩ অথবা এন৯৫ অথবা এফএফপি২ মাস্ক। এসব মাস্কের একটি বাতাস পরিশোধনের যন্ত্র থাকে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা