আবু সাইদ বিশ্বাস:ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: সাতক্ষীরা: সোলালি আঁশে দোল খাচ্ছে সাতক্ষীরা মাঠ। চারি দিকে সোনালি ধানের মৌ মৌ গন্ধে ভরে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। পরিচর্যা প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাকি আছে আর ক’দিন সেই সোনালি স্বপ্ন ঘরে তুলতে। অন্য যে কোন বছরের তুল নায় এবার জেলাতে বোরো ধানের গুরুত্ব একটু বেশি। টানা বেকারত্বের জীবন পার করে করোনার ঝুকি নিয়ে ধান তুলতে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এ জেলার কৃষকরা। অনেকের ক্ষেতে আবার পেকেছেও সোনালী ধান। ফসল ঘরে তোলার অপেক্ষার প্রহর গুনছেন জেলার কৃষাণ-কৃষাণী।
সময়টা আনন্দের হলেও কৃৃষকদের কপালে এখন চিন্তার ভাজ। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কৃষক-শ্রমিকসহ সবাই ঘরমুখো। ফসল ঘরে তুলতে শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এদিকে সময়মতো সোনালী ফসল ঘরে তুলতে না পারলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হবে তারা।
সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার সাত উপজেলায় ৭৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। যে খানে গত বছর আবাদ হয়ে ছিল ৭৪ হাজার হেক্টও জমিতে। এ হিসেবে এবার জেলায় এক হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৫ হাজার ৪৭০ হেক্টর, কলারোয়ায় ১২ হাজার ৬৭১ হেক্টর, তালায় ১৬ হাজার ৯০০ হেক্টর, দেবহাটায় ৬ হাজার ৬০ হেক্টর, কালীগঞ্জ উপজেলায় ৫ হাজার ৮২০ হেক্টর, আশাশুনিতে ৬ হাজার ২৭০ হেক্টর ও শ্যামনগরে ১ হাজার ৬০৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।
কৃষকরা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর হাওরে বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। মাত্র কয়েকদিন পরই হাওরে পুরোপুরি ধান কাটা শুরু হবে।
তালার মাগুরা গ্রামের আছির উদ্দীন মোড়লের ছেলে হাবিবুর রহমান জানান, করোনা ঝুকি নিয়ে ধান ক্ষেত পরিচর্যা করছি। ভাল ভাবে ধান ঘরে তুলতে পারলেই সারা বছর খেতে পাররো।
একই এলাকার কৃষক মহাসিন জানান,নিয়ম মেনেই এক বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছে। ন্যার্য মূল্য পাবার আশা করছি।
এদিকে ধান কাটার শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধান ক্ষেতে এলাকায় চলাচল নির্বিঘ্ন করার অনুরোধ জানিয়েছে সরকার। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন এলাকায় ধান কাটাসহ সারাদেশে কৃষি উৎপাদন ও বিপণন অব্যাহত রাখতে কৃষি মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে মাঠ পর্যায়ে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং অনুসরণ করতে বলেছে। এতে জানানো হয়, হাওর এলাকায় বোরো ধান কাটার সময় হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে সারাদেশে এবছর বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ কোটি ৪ লাখ ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। এ ব্যাপারে কৃষকদের মাঝে লিফলেটও বিতরণ করা হয়েছে বলে দাবী সংশ্লিষ্টদের।
কৃষকরা যদিও ধানের নায্য মূল্য নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তারা বলছে সরকার যদি প্রকৃত চাষীদের কাছ থেকে ন্যার্য্য দামে ধান কেনে তাহলে চাষীরা বাঁচবে তা না হলে তাদের যে দুঃখ সেই দুঃখই থেকে যাবে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ উপ-পরিচালক কৃষিবিদ অরবিন্দু বিশ্বাস জানান, সাতক্ষীরাতে বোরো আবাদ বাড়ছে। চলতি মাসের ১৪ তারিখ থেকে সরকার নির্ধারিত বোরো ধান কাটা শুরু হবে। কৃষকরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে ধান কাটবে এমনটায় প্রতাশা তাঁর।
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …