ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট: মঙ্গলবার দুপুর থেকে ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০টি জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন কমপক্ষে ১৫ জন। বেশির ভাগ মৃত ব্যক্তির দেহ থেকে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছেন স্থানীয় জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। অন্যদিকে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট পরিবার ও এর আশপাশে লকডাউন করে রেখেছে। সংবাদ মাধ্যমের খবরে এসব কথা বলা হয়েছে।
শরীয়তপুরে গতকাল বিকেলে করোনা লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন ৩৪ বছর বয়সী এক যুবক। এ সময় তিনি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। অন্যদিকে গতকাল সকালের দিকে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার উলুসারা গ্রামে নিজ বাড়িতে মারা যান ২৮ বছর বয়সী এক যুবক। তিনি একটি র্ফামাসিতে চাকরি করতেন নারায়ণগঞ্জে। সেখান থেকে দু’সপ্তাহ আগে তিনি জ্বর, ঠাণ্ডা ও কাশি নিয়ে বাড়ি ফেরেন।
একই জেলার আরো একজন ঠাণ্ডা, কাাশি ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা নিয়ে গতকাল বিকেলে মারা যান কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। এদিন একই রকম লক্ষণ নিয়ে জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় মারা যান বয়স্ক এক ব্যক্তি। মৃত এসব ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে পরীক্ষার জন্য। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় গতকাল ঠাণ্ডা, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গেছেন একজন। তার দেহ থেকেও পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এরপর মৃত ব্যক্তির বাড়ি ও আশপাশের বেশ কিছু বাড়ি লকডাউন করে রাখা হয়েছে। রংপুরে কাউনিয়া উপজেলার বটতলা গ্রামের ৩০ বছর বয়সী এক নারী মারা গেছেন। তিনি স্থানীয় সুইপার সম্প্রদায়ের একজন সদস্য। তার দেহ থেকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জে মঙ্গলবার রাতে দোয়ারাবাজার উপজেলার বক্তারপুর গ্রামে করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন ২২ বছর বয়সী এক যুবক। পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা গেছে ১৩ বছর বয়সী একটি বালিকা। তারও নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্যকর্মীরা। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় গতকাল সকালে ঠান্ডা ও কাশি নিয়ে মারা গেছেন ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। তিনি দু’সপ্তাহ আগে তাবলিগ জামাত থেকে ফিরেছিলেন। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কালেনাগা গ্রামে জ্বর ও ঠাণ্ডা নিয়ে মারা গেছে ২ বছর বয়সী একটি শিশু। পাবনার বেড়া উপজেলায় গতকাল সকালে সানিলা গ্রামে নিউমোনিয়া ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় মারা গেছে ৫ মাস বয়সী একটি কন্যাশিশু। তবে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয় নি। চিকিৎসকরা ধরে নিয়েছেন নবজাতককে এই ভাইরাস সংক্রমিত করে নি। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সরদার মিলন মাহমুদ এ কথা বলেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়র নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মঙ্গলবার রাতে করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন ৩৭ বছর বয়সী এক যুবক। তিনি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেছিলেন। নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন ২০ বছর বয়সী একজন। অন্যদিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় একই লক্ষণ নিয়ে নিজের বাড়িতে মারা গেছেন ৫৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ৪৫ বছর বয়সী এক কৃষক। গতকাল সকালে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ পৌরসভায় ৮৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ও তার ৭৫ বছর বয়সী স্ত্রী মারা গেছেন। কিন্তু তাদের মৃতদেহ থেকে কোনো নমুনা সংগ্রহ করেন নি স্বাস্থ্যকর্মীরা। তারা বলেছেন, এ দু’জনের মৃত্যুই স্বাভাবিক মৃত্যু।
ওদিকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় তিনটি পরিবারকে আইসোলেশন করে রাখা হয়েছে। রোববার নারায়ণগঞ্জ থেকে করোনা সংক্রমণের লক্ষণ নিয়ে ৩০ বছর বয়সী এক যুবক বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আক্রান্ত যুবকের দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।