ক্রাইমর্বাতা রিপোট: করোনাভাইরাসের কারণে পুরো ঠাকুরগাঁও লকডাউন থাকায় ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন মানুষ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লম্বা ছুটি ও সেলুন বন্ধ থাকার কারণে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক পড়ে গেছে, বিশেষ করে উঠতি বয়সী তরুণদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি লক্ষ করা গেছে। কেউ কেউ মাথা ন্যাড়া করে সেই ছবি পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আবার কেউ সমবয়সী বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে মাথা ন্যাড়া করছেন। হঠাৎ করে একই সাথে এত মানুষের মাথা ন্যাড়া করার বিষয়টি নিয়ে অনেকটা হাস্যরস সৃষ্টি হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের বাসিন্দা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো: আবির ন্যাড়া মাথার ছবি পোস্ট করে বলেন, ন্যাড়া করলে কেমন দেখায় এইটা দেখার জন্যে ন্যাড়া করছিলাম আরকি।
মনোয়ারা আনোয়ারা এমএটিএস এবং নার্সিং ইনস্টিটিউটের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এম এ ইসলাম আবদুল্লাহ তার ফেসবুকে বলেছেন, দুই হাজার কমেন্টস হলে কালকে ন্যাড়া করবো! ন্যাড়া মাথার ছবি দেখতে চাইলে জলদি কমেন্ট করুন…। পরের দিন তিনি ন্যাড়া মাথার ছবি পোস্ট করেন।
ইকো পাঠশালা অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মো: জিল্লুর রহমান ফেসবুকে নিজের ন্যাড়া মাথার ছবি পোস্ট করে বলেন, আজ আমি ন্যাড়া গরিব।
অ্যাডভান্স নিউট্রিশন লিমিটেডের এরিয়া ম্যানেজার মুকুল সরকার ফেসবুকে জানান, ঘরে থাকুন নিরাপদে থাকুন, পাশাপাশি মাথা ন্যাড়া করুন, জনস্বার্থে, মুকুল সরদার।
সদর উপজেলার রুহিয়া থানাধীন ১৪নং রাজাগাঁও ইউনিয়নের বিনয় দে সুমন ফেসবুকে বলেছেন, নিজে ন্যাড়া হোন এবং অন্যকে উৎসাহিত করুন।
ঠাকুরগাঁও সদরের আবু সিদ্দিক ফেসবুকে ছন্দ মিলিয়ে লিখেছেন, আমি এবার ন্যাড়া, একটুখানী প্যারা, চুল গজাবে কদিন পর, কাটবে তখন করোনা ঝড়।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের আবু কালাম লম্বু (টাওয়ার পাড়া) জানান, প্রচণ্ড গরমে থাকতে না পেরে আমি চুল কেটে ফেলেছি। আমার দেখা দেখি গ্রামের সমবয়সী ১০-১৫ জন এক সাথে ন্যাড়া হয়েছে।
রুহিয়ার নরসুন্দর প্রদীপ শীল বলেন, ‘সরকারি নির্দেশে বাজারের সেলুন ঘরটি বন্ধ রাখা হয়েছে। অনেকেই বাড়ি গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার জন্য কল করছেন। পরিচিত হলে তাদের বাড়িতে গিয়ে ন্যাড়া করে দিয়ে আসছি।’
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ আজিজ চপ্পল বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে গণহারে ন্যাড়া করার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এতে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হবে না- চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন কথার কোনো ভিত্তি নেই। বিষয়টি হাস্যকর।’
এসব গুজব এড়িয়ে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।