ক্রাইমর্বাতা রিপোর্ট:সাতক্ষীরা: আসন্ন বোরো মৌসুমে কোন জেলা থেকে কী পরিমাণ ধান সংগ্রহ করা হয়ে তার তালিকা প্রকাশ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। জেলার পাশাপাশি উপজেলাভিত্তিক তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে দেশের ৫৯২টি উপজেলার মধ্যে ৪৫৮টি থেকে ধান সংগ্রহ করা হবে। যেসব উপজেলা বোরো মৌসুমে ধান উৎপাদন খুবই কম হয় সেখান থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে না। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্ভাব্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার ভিত্তিকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। আগামী ২৬ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহ চলবে। প্রতি কেজি ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ টাকা।
এদিকে সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয় বোরো মৌসুমে ধান-চাল ও গম সংগ্রহের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সেখানে সেখানে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধন সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে। তবে উপজেলা ভিত্তিক সংগ্রহের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। লক্ষমাত্রা অনুযায়ী সাতক্ষীরা জেলা থেকে ছয় হাজার ৭৭১ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে।
খুলনা বিভাগ থেকে মোট সংগ্রহ করা হবে ৭৩ হাজার ৩৬৯ মেট্রিক টন ধান। এর মধ্যে খুলনা জেলা থেকে সাত হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন, বাগেরহাট জেলা থেকে পাঁচ হাজার ১০৮ মেট্রিক টন, যশোর জেলা থেকে ২২ হাজার ১৭৪ মেট্রিক টন, ঝিনাইদহ জেলা থেকে ১০ হাজার ৬০৬ মেট্রিক টন, মাগুরা জেলা থেকে তিন হাজার ৭২৩ মেট্রিক টন, কুষ্টিয়া জেলা থেকে চার হাজার ৫৪১ মেট্রিক টন, চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে তিন হাজার ৯৮৩ মেট্রিক টন ও মেহেরপুর জেলা থেকে দুই হাজার ৪৫২ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে।
সরকারের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ধান সংগ্রহ করা হবে ময়মনসিংহ জেলা থেকে। এ জেলা থেকে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৩৪ হাজার ১৪৪ মেট্রিক টন। এ জেলার সম্ভাব্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৮৯৯ মেট্রিক টন। অপরদিকে সব থেকে কম ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বরগুনা জেলা থেকে। এ জেলার সম্ভাব্য নয় হাজার ৫৯৩ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের বিপরীতে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১ মেট্রিক টন।
এদিকে উপজেলাভিত্তিক ধান সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রায় নাটোরের সিংড়া উপজেলা থেকে সব থেকে বেশি ধান সংগ্রহ করা হবে। এ উপজেলার সম্ভাব্য দুই লাখ ৪৭ হাজার ৩৮৮ মেট্রিক টন উৎপাদনের বিপরীতে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে পাঁচ হাজার ১৯৭ মেট্রিক টন। এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী ৩১টি উপজেলা থেকে ধান সংগ্রহ বরা হবে না। এসব উপজেলায় সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা খুবই কম হওয়ার কারণেই এগুলো থেকে ধান সংগ্রহ হবে না।
সরকারের তালিকায় দেখা গেছে ঢাকা বিভাগ থেকে (ময়মনসিংহসহ) মোট এক লাখ ৭৫ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে গাজীপুর জেলা থেকে পাঁচ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন, মানিকগঞ্জ জেলা থেকে ছয় হাজার ৬৯৫ মেট্রিক টন, ঢাকা জেলা থেকে পাঁচ হাজার ১১১ মেট্রিক টন, নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে তিন হাজার ১৮০ মেট্রিক টন, নরসিংদী জেলা থেকে চার হাজার ৬৪৩ মেট্রিক টন, মুন্সিগঞ্জ জেলা থেকে তিন হাজার ৩৯৪ মেট্রিক টন, ময়মনসিংহ জেলা থেকে ৩৪ হাজার ১৪৪ মেট্রিক টন, নেত্রকোনা জেলা থেকে ১৫ হাজার ৬৮৩ মেট্রিক টন, কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে ২২ হাজার ৬৫৮ মেট্রিক টন, জামালপুর জেলা থেকে ১৭ হাজার ২ মেট্রিক টন, শেরপুর জেলা থেকে ১২ হাজার ৩৮১ মেট্রিক টন, টাঙ্গাইল জেলা থেকে ২১ হাজার ৬৯৪ মেট্রিক টন, ফরিদপুর জেলা থেকে সাত হাজার ৩৩৬ মেট্রিক টন, রাজবাড়ী জেলা থেকে এক হাজার ৭৩৩ মেট্রিক টন, গোপালগঞ্জ জেলা থেকে আট হাজার ২১ মেট্রিক টন, মাদারীপুর জেলা থেকে তিন হাজার ৮৩৯ মেট্রিক টন, এবং শরীয়তপুর জেলা থেকে এক হাজার ৯৭৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে।
রাজশাহী বিভাগের মোট ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ ২ হাজার ৬৬৬ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রাজশাহী জেলা থেকে আট হাজার ৫০৪ মেট্রিক টন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে চার হাজার ২৮৪ মেট্রিক টন, নওগাঁ জেলা থেকে ২৩ হাজার ২৩২ মেট্রিক টন, নাটোর জেলা থেকে আট হাজার ৯৪ মেট্রিক টন, পাবনা জেলা থেকে চার হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন, জয়পুরহাট জেলা থেকে নয় হাজার ৮৪৭ মেট্রিক টন, বগুড়া জেলা থেকে ২৫ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন ও সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে ১৮ হাজার ৭০১ মেট্রিক টন।
রংপুর বিভাগ থেকে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ২ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে দিনাজপুর জেলা থেকে ২৩ হাজার ৩৮ মেট্রিক টন, ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে আট হাজার ১২৩ মেট্রিক টন, পঞ্চগড় জেলা থেকে তিন হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন, লালমনিরহাট জেলা থেকে ছয় হাজার ৪২৭ মেট্রিক টন, নীলফামারী জেলা থেকে ১২ হাজার ৬৭ মেট্রিক টন, রংপুর জেলা থেকে ১৬ হাজার ৭২৩ মেট্রিক টন, কুড়িগ্রাম জেলা থেকে ১৪ হাজার ৯০৪ মেট্রিক টন ও গাইবান্ধা জেলা থেকে ১৭ হাজার ১৪২ মেট্রিক টন।
চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে মোট সংগ্রহ হবে ৭৫ হাজার ৩৮৩ মেট্রিক টন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা থেকে পাঁচ হাজার ২৩৩ মেট্রিক টন, কক্সবাজার জেলা থেকে ছয় হাজার ৪৬৬ মেট্রিক টন, রাঙামাটি জেলা থেকে ৯৪৪ মেট্রিক টন, খাগড়াছড়ি জেলা থেকে এক হাজার ৫১৫ মেট্রিক টন, বান্দরবান জেলা থেকে ৪৯২ মেট্রিক টন, নোয়াখালী জেলা থেকে নয় হাজার ৪৩৪ মেট্রিক টন, লক্ষ্মীপুর জেলা থেকে তিন হাজার ৯১৯ মেট্রিক টন, ফেনী জেলা থেকে তিন হাজার ২৪১ মেট্রিক টন, কুমিল্লা জেলা থেকে ২১ হাজার ৪২৬ মেট্রিক টন, চাঁদপুর জেলা থেকে আট হাজার ৩৫৭ মেট্রিক টন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে ১০ হাজার ৩৬০মেট্রিক টন।
সিলেট বিভাগ থেকে নির্ধারিত ৫৪ হাজার ২৭৮ মেট্রিক টনের মধ্যে সিলেট জেলা থেকে পাঁচ হাজার ৯৯৩ মেট্রিক টন, মৌলভীবাজার জেলা থেকে ছয় হাজার ৬১৮ মেট্রিক টন, হবিগঞ্জ জেলা থেকে ১৫ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন ও সুনামগঞ্জ জেলা থেকে ২৫ হাজার ৮৬৬ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে।
বরিশাল বিভাগের মোট ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৬ হাজার ৯৩৩ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বরিশাল জেলা থেকে সাত হাজার ১৬ মেট্রিক টন, ঝালকাঠি জেলা থেকে এক হাজার ১২৮ মেট্রিক টন, পিরোজপুর জেলা থেকে তিন হাজার ১৩ মেট্রিক টন, ভোলা জেলা থেকে পাঁচ হাজার ১৯৬ মেট্রিক টন এবং পটুয়াখালী জেলা থেকে তিন হাজার ৩৭৯ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …