কাঁচা আমে ভরপুর সাতক্ষীরার বাজার ॥ চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে রাজধানী সহ সারাদেশে

আবু সাইদ বিশ্বাস:সাতক্ষীরা   কাঁচা টক আমে ভরে গেছে সাতক্ষীরার বাজার। জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন কয়েক ট্রাক কাঁচা আম রাজধানী ঢাকার বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তরের বাজার গুলোতে ঠায় মিলেছে সাতক্ষীরার কাঁচা আম। সারাদেশে এ জেলার আমের সুনাম থাকায় প্রশাসন ও কৃষি খামার বাড়ির পক্ষ থেকে আম চাষীদের নিয়মিত তদারকি ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। গতবারের তুলনায় আমের ফলন কম, ঝড় বৃষ্টি ও করোনা ভাইরাসের কারণে আমের দাম নিয়ে সঙ্কায় আছেন এখানকার আম চাষীরা। আমের মোরব্বা আর আচারের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সাতক্ষীরার বাজারে কাঁচা টক আমের ঢল নেমেছে। প্রতিদিন জেলার বাজারে শত শত মণ আম বেচাকেনা হচ্ছে। ১২ এপ্রিল থেকে বাণিজ্যিক ভাবে কাঁচা আম কেনা-বেচা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছে গত বছর এসময় কাঁচা আম মণ প্রতি ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রয় হয়েছিল। কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে আমের দাম কম। ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০ টাকা দরে বৃহষ্পতিবার সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড়বাজারে আম বেচা কেনা হয়েছে। গত বছর যেখানে এর দাম ছিল দ্বিগুন। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ২ শো’টি বাগান রয়েছে। গত বছরের তুলনায় ১৫ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। চলতি বছরে এসব বাগানে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সাতক্ষীরা কৃষি খামার বাড়ি কৃষিবিদ হাফিজ জানান, এ বছর জেলাতে ৪১১ হেক্টর জমিতে ৪০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। জেলা ব্যাপি কাঁচা আমের জুড়ি নেই। লবণ-মরিচ মাখানো কাঁচা আম ছেলে-বুড়ো সবারই প্রিয় হয়ে উঠেছে। গৃহস্থলির রান্নার ডালে দুফালি কাঁচা আম দিলে যে টক ভাব আসে, ওতে অনেকের খানিকটা ভাত বেশি খাওয়া হয়ে যায়। আমের মোরব্বা আর আচার পেলে তো অনেকেই বর্তে যান। এ জন্য গরমের এ সময়টাতে কাঁচা আমের বেশ কদর বেড়েছে। আর সারা দেশে চাহিদা আছে বলেই জেলার বাজারে কাঁচা আমের ঢল নামে। সাতক্ষীরার বড় বাজারে মুসসি ভান্ডারের পরিচালক মো: আনিচুর রহমান জানান, বাজারে কাঁচা আম উঠতে শুরু করেছে। প্রতিদিন তিনি প্রায় একশ ক্যারেট কাঁচা আম ক্রয় করে ঢাকায় পাঠান তিনি। বৃহস্পতিবার সে ১৫০ ক্যারেট আম ক্রয় করেন। এর আগে ১২ এপ্রিল ১৭ ক্যারেট, ১৩ এপ্রিল ৩৭ ক্যারেট, ১৪ এপ্রিল ৪৭ ক্যারেট, ১৫ এপ্রিল ১২৫ ক্যারেট আম ক্রয় করেন। সাতক্ষীরা শহর কাঁচা-পাকা বাজার সমবায় সমিতির সভাপতি রাশেদ জানান, এ জেলার আমের সারা দেশে বেশ চাহিদা রয়েছে। যে কারণে করোনার মধ্যেও অন্য বছরের মত সাতক্ষীরার কাচা আম সারা দশে সরবরাহ করা হচ্ছে। একই ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী জানান, জেলাতে সরকারী ভাবে কোন কাঁচা মালের আড়ত না থাকায় সংরক্ষণের অভাবে অনেক কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যায়। তার দাবী জেলার বড়বাজারে সরকারী ভাবে কাঁচামালের আড়ৎ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া দরকার। সাতক্ষীরা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের উপপডরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো: নুরুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরার আম গুণে-মানে সুস্বাদু। অন্যান্য জেলার থেকে সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। এ জেলার মাটি আম চাষের উপযোগী। বিগত বছর গুলোর মতো এ বছর এখানকার আম ইউরোপে রফতানি হবে।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।