ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ: স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সংসদের ইতিহাসে এক বিরল ঘটনার জন্ম দিতে যাচ্ছে। নজির হয়ে থাকবে সংসদের রেকর্ড বইয়ে। নিয়ম রক্ষার এই অধিবেশনটি হবে সংক্ষিপ্ত। সর্বসাক্কুলে চলবে এক-দেড়ঘন্টা। অধিবেশন ঘিরে দর্শণার্থীদের হুড়োহুড়ি থাকবে না। দেখা যাবে না গণমাধ্যম কর্মীদের তৎপরতা। অধিবেশন ঘিরে যে চাঞ্চল্য থাকে তা-ও দেখা যাবেনা। কেন এই চিত্র তার নেপথ্যের মূল কারণ বিশ্বব্যাপী সংক্রামক রোগ করোনা, যা আন্যান্য দেশের মতো এখানেও ক্রমান্বয়ে বিস্তার ঘটছে। তাই সরকারকে নিয়ম রক্ষার্থে কোরাম পূরণ হয় এমন মন্ত্রী-এমপিদের উপস্থিতিতে শেষ করতে হবে এ অধিবেশন বলে সংসদ সচিবালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। তাদের তথ্যমতে, স্বল্পতম সময়ের জন্য বসবে এই সংসদের সপ্তম অধিবেশন। সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতার কারণে ডাকা এই অধিবেশন আজ শনিবার বিকেল ৫টায় শুরু হয়ে এক থেকে দেড় ঘন্টা চলতে পারে। শুধু সাংবাদিক ও দর্শনার্থী না কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি সীমিত করা হয়েছে। সংসদ সদস্যরাও করোনা ভাইরাসের সতর্কতা নির্দেশনা মেনেই সংসদ অধিবেশনে অংশ নিবেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতা থাকায় সব জেনে বুঝেই আহ্বান করা হয়েছে এই অধিবেশন। খুবই স্বল্প সময়ের জন্য বসবে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলা হবে এখানে। দূর্যোগ পরিস্থিতির কারণে সংসদ সদস্যরা নিজ নিজ এলাকায় ত্রাণসহ অন্যান্য কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকায় অধিবেশনে উপস্থিতি কম থাকবে, যোগ করেন স্পিকার। এদিকে জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে অধিবেশনে স্বশরীরে উপস্থিত না হয়ে সংসদ টেলিভিশন থেকে সংবাদ সংগ্রহের জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সবার জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সংসদ অধিবেশন অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত করা হবে। এ প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকদের সরাসরি সংসদে না এসে স্ব-স্ব স্থানে অবস্থান করে সংসদ টেলিভিশন থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত অধিবেশন কাভার করার জন্য বিনীত অনুরোধ করা হচ্ছে। সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতার কারণে করোনা ভাইরাসের এই দুর্যোগেও সংসদের সপ্তম অধিবেশন আহ্বান করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। এক অধিবেশন শেষ হওয়ার পর ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে আবার বসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সর্বশেষ ষষ্ঠ অধিবেশন শেষ হয়েছিল গত ১৮ ফেব্র“য়ারি। সেই হিসেবে ১৮ এপ্রিলের মধ্যে সংসদের অধিবেশন আহ্বানের বিধান রয়েছে। আর সংবিধান রক্ষায় আজ ১৮ এপ্রিল বিকাল ৫টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হবে। যা মাগরিবের নামাজের বিরতির আগেই শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, এই অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকছে না। কোন বিল উত্থাপন ও পাসের সম্ভাবনা নেই। অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে সংসদ অধিবেশন পরিচালনার জন্য সভাপতি মণ্ডলী মনোনয়নের পর চলতি সংসদের সদস্য ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফসহ অন্যান্যদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শেষে অধিবেশন মূলতবি করা হবে। এরপর জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশ নিয়ে আলোচনা শেষে অধিবেশন সমাপ্ত হবে। এর আগে দিনের কার্যসূচীতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন কর্তৃক সরকারী কর্ম কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন উত্থাপনের কর্মসূচী রয়েছে। সংশি−ষ্টরা জানান, করোনার ভয়াল থাবার কারণে একাদশ সংসদের সপ্তম অধিবেশন দেশের ইতিহাসে একেবারেই ব্যতিক্রম হবে। এই প্রথম ছুটির দিনে আহ্বান করা এই অধিবেশনে ৬০ থেকে ৭০ জনের উপস্থিতি নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের বৈঠকের কোরাম পূরণ করতে সর্বনিম্ন ৬০ জনের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। আর সংসদের অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যসহ অন্যান্যের শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য অধিবেশন চালানোর জন্য হাতেগোনা কয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত থাকবেন। দর্শনার্থীদের উপস্থিত বন্ধ থাকবে। মন্ত্রী-এমপিদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের উপস্থিতি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। গণপূর্তেরও শুধু অপরিহার্য সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত থাকবেন। সাউন্ড সিস্টেম, সংসদ টেলিভিশন, বাংলাদেশ টেলিভিশন বাংলাদেশ বেতারের সঙ্গে সংশি−ষ্টদের উপস্থিতি কমাতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই অধিবেশন আয়োজনে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …