ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাতক্ষীরা: খুলনা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার খুলনা বিভাগের জেলা প্রশাসকগণের সাথে ভিডিও কনফারেন্স করেছেন। এ সময় বিভাগীয় কমিশনার কিছু নির্দেশনা দেন এবং সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল তার বক্তব্যে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জেলার প্রস্তুতি তুলে ধরেন। সেইসাথে কর্মহীন মধ্যবিত্ত পরিবারের সমস্যা এবং সাতক্ষীরা জেলার চিংড়ি চাষীদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। বিভাগীয় কমিশনার নির্দেশনাসমূহের মধ্যে ১. জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলে ভালোভাবে ম্যানেজ করতে হবে। ২. ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. হাটবাজার বড় জায়গায় স্থানান্তর করতে হবে। ৪. কৃষি উৎপাদন, পরিবহন এবং বাজারজাত যাতে ঠিকমতো হয় তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৫. করোনা পরিস্থিতির কারণে কৃষি শ্রমিকদের সহায়তা দিতে হবে। ৬. কৃষি এবং জরুরি পণ্যের পরিবহন সচল রাখতে হবে। ৭. সার, বীজ, কীটনাশকের দোকান খোলা থাকবে। ৮. ওএমএস চালু হবে। ৯. যারা কাজ হারিয়েছেন তাদের তালিকাভুক্ত করতে হবে। ১০. অন্য জেলা থেকে যারা আসছে তাদের তালিকাভুক্ত করা এবং কোয়ারেন্টিন শেষে তাদেরকে কৃষি কাজে লাগানো যেতে পারে। ১১. ত্রান বিতরণে যারা অনিয়ম দুর্নীতি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ১২. মোবাইল কোর্টের আওতায় পড়লে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ১৩. প্যাকেটজাত পণ্য পরিবহনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ১৪. পণ্য প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি খোলা রাখতে হবে। ১৫. উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। ১৬. সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মিষ্টির দোকান খোলা রাখা যাবে। ১৭. মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের কথা ভাবতে হবে। অপরদিকে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সংকটকালীন এই সময়ে বাজারে জনসমাগম কমাতে জেলা প্রশাসন সাতক্ষীরার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টা থেকে চালু হচ্ছে দুইটি ভ্রাম্যমাণ বাজার। যার একটি শহরের সিটি কলেজ মোড় হয়ে খুলনা মোড়, চায়না বাংলা শপিং মল, সংগীতার মোড় ও ইটাগাছা মোড়ে অবস্থান করবে অপরটি নারকেলতলা হয়ে পোস্ট অফিস মোড়, শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক, সদর উপজেলা পরিষদ ও কলেজ মোড়ে এক ঘন্টা করে অবস্থান করে। জেলা প্রশাসনের এই ভ্রাম্যমাণ বাজারে চাল, ডাল, আলু পিয়াজ, তেল মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি পাওয়া যাচ্ছে। নো প্রফিট নো লস এই ধারনাকে নিয়ে জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য জনসমাগম কমানো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মূল উৎস হতে আপনাকে নিরাপদ রাখা, সাতক্ষীরাকে নিরাপদ রাখা। এছাড়া, জেলা সদর, সকল উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদে ভ্রাম্যমাণ বাজার কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া করোনাভাইরাস এর সংকটকালীন সময়ে কর্মহীন হোটেল শ্রমিক, সেলুন শ্রমিক, ভ্যানচালক, মোটরবাইক চালক, ইজিবাইক চালকসহ বিভিন্ন শ্রেণির অসহায় মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল হতে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলার ঘরে থাকা স্কুল, কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য গ্র“প ভিত্তিক রচনা, গল্প, কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীর নাম, শ্রেণি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মোবাইল নাম্বারসহ তাদের লেখা আগামী ৩০ এপ্রিল তারিখের মধ্যে ফপংধঃশযরৎধ১৯৮৪@মসধরষ.পড়স এই মেইল ঠিকানায় পাঠাতে পারবেন। লেখার বিষয় ছাত্র ছাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সাতক্ষীরা জেলার প্রতিটি উপজেলায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং সহকারী কমিশনারদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং আনসারের সমন্বয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতকরন ও অভিযান করা হয়েছে। জেলায় ২০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে সমন্বয়ে পুলিশ, আনসার, র্যাব, সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখা ও সরকারি আদেশ অমান্য করে ৬টার পর দোকান খোলা রাখা এবং বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করার অপরাধে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন অভিযানে সর্বশেষ তথ্যমতে এখন পর্যন্ত ২৮টি অভিযানে ২৫টি মামলায় ১৫৬০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে তালা উপজেলায় ২টি মামলায় ১০০০ টাকা, দেবহাটা উপজেলায় ৭টি মামলায় ২২০০ টাকা, শ্যামনগর উপজেলায় ৬টি মামলায় ৪৯০০ টাকা, আশাশুনি ৩টি মামলায় ১১০০ টাকা, এবং জেলা প্রশাসনের ১০ মামলায় ৬৪০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনা প্রতিরোধে মোট ১৯৪৮টি মামলায় ২০ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
Check Also
আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …