ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ: দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারী নির্দেশনাসমূহ পালনই রক্ষাকবচ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে সরকার। রাজধানীর ১০৪টি এলাকাসহ দেশের দুই-তৃতীয়াংশ জেলায় ইতোমধ্যে শনাক্ত হয়েছে করোনা রোগী। সংক্রমণের চতুর্থ ধাপ মহামারীর দ্বারপ্রান্তে রয়েছে দেশের করোনা পরিস্থিতি। অনির্দিষ্ট হয়ে পড়েছে করোনা সংক্রমণের বাহক। পুরো দেশকে করোনা সংক্রমণে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিদিন করোনায় মৃত্যুর রেকর্ড গড়ছে। এমন অবস্থায় সরকারী নির্দেশনা মেনে ‘ঘরে অবস্থান’ এবং ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় না রাখলে দেশের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতি একটি বৈশি^ক মহামারী। এটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো অসহায় হয়ে পড়ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও আতঙ্কমুক্ত থাকতে পারে না। দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর করোনা প্রতিরোধে গ্রহণ করতে থাকে একের পর এক কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্থল, সমুদ্র ও বিমানবন্দরগুলোতে বিদেশফেরতদের স্ক্রিনিং কার্যক্রম, করোনার নমুনা পরীক্ষা, হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে বাধ্যকরণ এবং জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে করোনা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ১৮ মার্চ থেকে ২৪ মার্চের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সিনেমা হল, সভা-সমাবেশ, কমিউনিটি সেন্টার এবং সকল ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার সরকারী ঘোষণা দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসহ স্থল ও সমুদ্র বন্দরসমূহের প্রবেশপথ। ইতোমধ্যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে তৃতীয় দফা। ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মাত্র কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরী সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে নিজ নিজ বাসায় ঢুকিয়ে দিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সর্বশেষ ৩১ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একের পর এক বাসাবাড়ি, এলাকা এবং জেলা লকডাউন করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের গতি থামিয়ে দেয়াই এসব উদ্যোগ গ্রহণের একমাত্র লক্ষ্য। আর দেশের মানুষ সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ঘরে অবস্থান করলেই এসব উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন দেখবে সফলতা। করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম ব্যাহত করছে মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ ॥ করোনা প্রতিরোধে সরকারী নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সরকার সামাজিক দূরত্ব তৈরির উদ্দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল। ছুটি পেয়ে মানুষ দল বেঁধে ঢাকা ছেড়েছে। ফেরিঘাট, রেলস্টেশন বা বাসস্ট্যান্ডের ভিড় গণজমায়েতের চেহারা পেয়েছিল। ঢাকা শহরে গাড়ি চলতে শুরু করেছে, অলিগলিতে মানুষের ভিড়। দেশের কোথাও কোথাও হাটবাজারে জনসমাগম হচ্ছে। ত্রাণ বা খাদ্যসহায়তা নিতেও মানুষ ভিড় করছে। বাসার বাইরে যাতে বের না হতে পারে, সেজন্য দ-নীয় কঠোর বিধি নিষেধ প্রয়োগ করেও জনসমাগম থামানো যাচ্ছে না। মানুষের এমন ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের অন্তরায় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কর্মসূচী বাস্তবায়ন করাটাও কঠিন হয়ে পড়ছে, যা করোনা সংক্রমণের উর্বর পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Check Also
ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়
দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …