ঝুকিতে থাকলেও সাতক্ষীরায় কারোর দেহে করোনা সংক্রমিত হয়নি: ২১২ জনের নমুনা সংগ্রহ

আবু সাইদ বিশ্বাস: ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাতক্ষীরা:   কোভিড-১৯ নভেল করোনা সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কিছুটা হলে ও স্বস্তিতে রয়েছে সাতক্ষীরা জেলা । ঝুকিতে থাকলেও এখনো পর্যন্ত কারোর দেহে করোনা সংক্রমিত হয়নি। মহামারী করোনা আতংকে জেলাবাসী এখন ঘরবন্দী জীবন যাপন করছে।

সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ৩৫৩৬ জন।  আজ  নতুন করে ২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া এখন র্পযন্ত ৩২২৫জনকে নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম করায় ছাড় প্রদান করেছে। আজকে নতুন করে আরো ১৩৪ জনকে  ছাড় প্রদান  করা হয়েছে।

এদের অধিকাংশ ভারত, পাকিস্তান, ইরান, সৌদিআরব, মালেশিয়া, চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ইটালি থেকে দেশে এসেছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে আরো জানান জেলার করোনা ভাইরাস সন্দেহে ২১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ২৮ জনের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে যাদের সবাই নেগেটিভ। বাকি রিপোর্ট পর্যায়ক্রমে আসবে বলে জানা গেছে।

আজ শনি বার ১৩ জনের নমূনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া নতুন করে ৬ জনের রিপোটে নেগেটিভ ধরাপড়েছে। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত যে ২৮ জনের নমূনা পরীক্ষা করা হয়েছে তাদের কেউ করোনা ভাইরাসের সংক্রমিত হয়নি।  সাতক্ষীরা সিলিভ অফিস ক্রাইমর্বাতাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শুধু তাই নয় করোনা ভাইরাস সন্দেহে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যে ৪ জনকে আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়েছে তারা  হলেন সদর উপজেলার আলিপুর বুলারআটি গ্রামের সামসুরের মাতা জুলিখা বেগম (৬৫) একই এলাকার আব্দুল করিমের পুত্র আব্দুল গফ্ফার (৭০), সদরের চুপড়িয়া গ্রামের ভাটা শ্রমিক সবুর সরদারের স্ত্রী আনোয়ারা (৫৫), অপরজন আশাশুনি উপজেলার কচুয়া গ্রামের নুর ইসলাম মালির স্ত্রী জরিনা খাতুন (৫০) সাতক্ষীরা মেডিকেল আইসোলেশনে রোগী ভর্তির খবরে জেলাবাসীর মধ্যে করোনা আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অনেকে অবাধে চলাফেরা করছে। জেলা প্রশাসন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বাস্থ্য বিভাগ যৌথ ভাবে জনসাধারণকে বাড়িতে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে।

জরুরী বার্তাঃ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের
——————-
আজ দুপুর ২ টায় জেলার বাইরে থেকে আসা সন্দেহজনক কোভিড-১৯ রোগীকে একজন গ্রাম পুলিশ সদর হাসপাতাল, সাতক্ষীরায় ভ্যানযোগে নিয়ে আসে। যথাযথ নিয়ম মেনে তার শারীরিক পরীক্ষা করে তার শারীরে উচ্চ তাপমাত্রার উপস্থিতি, ডিজওরিয়েন্টশন ও উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় সম্ভাব্য ভ্রমনের ইতিহাস থাকায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড-১৯ আইসোলেটেড ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।

★উল্লেখ্য তাকে আনায়নকারী গ্রাম পুলিশ ও ভ্যানওয়ালাকে জীবাণুমুক্ত করা হয় ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (PPE) প্রদান করা হয়।পরে জীবানুনাশক স্প্রে দিয়ে জরুরী বিভাগকে জীবাণুমুক্ত করা হয়।উক্ত সন্দেহ জনক কোভিড-১৯ রোগীর সংস্পর্শে আসা গ্রাম পুলিশ, ভ্যানওয়ালা এবং একজন এম্বুলেন্স ড্রাইভারকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইন এ পাঠানো হয়।রোগীর শারীরিক পরীক্ষার সময় চিকিৎসক,নার্স ও প্যারামেডিকস যথাযথ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (PPE) পরিধান করেন।তবে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় N95 মাস্কের অপ্রতুলতা থাকায় তা ঐ মুহুর্তে সরবরাহ করা যায়নি।তবে এর বিকল্প হিসাবে KN95 বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় এবং অধিক সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্য সেবাদানকারীরা ফেসশীল্ড ব্যবহার করেন।

★কেউ যদি উপরে বর্ণিত সন্দেহজনক কোভিড-১৯ রোগীর সংস্পর্শে এসে থাকেন তাকে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে যাবার জন্য অনুরোধ জানান হল।

★প্রকাশ থাকে যে,উক্ত সন্দেহ জনক কোভিড-১৯ রোগী কোন কথা না বলায় তার নাম, পরিচয় বা,শারীরিক উপসর্গের ইতিহাস জানা সম্ভব হয়নি।তার নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজের PCR ল্যাবে পাঠানো হবে এবং বর্তমানে সে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড-১৯ আইসোলেটেড ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।l

★সবাই সতর্ক হোন।গ্রহণযোগ্য অত্যাবশ্যকীয় কারণ ছাড়া বাডীর বাইরে আসলে আপনার সামাজিক অবস্থান বা,পেশা যাই হোক না কেন সংক্রামক ব্যাধি আইন -২০১৮ এর ক্ষমতা বলে জেল বা,জরিমানা বা, উভয় শাস্তি প্রদান করা হবে।

আসুন আমরা সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই সংকট মোকাবেলা করি। সিভিল সাজর্ন ডাঃ মোঃ হুসাইন শাফায়াত

পিসিআর ল্যাব স্থাপন ও সহায়তা বাড়ানোর দাবি

  সাতক্ষীরায় করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য দ্রুত পিসিআর ল্যাব স্থাপন ও জেলার ত্রাণসহায়তা তিন গুণ করার দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের  সভাপতি আইনজীবী ফাহিমুল হক বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সর্বশেষ জেলা সাতক্ষীরা। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের গাবুরা ও গদ্মপকুর থেকে খুলনা ও যশোরের দূরত্ব প্রায় ১৫০ কিলোমিটার। সড়কপথই একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম। যোগাযোগব্যবস্থাও ভালো নয়। এ অবস্থায় করোনা পরীক্ষার জন্য ও চিকিৎসা নিতে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। ফলে করোনা শনাক্তকরণের জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবি জানিয়ে বলা হয়, পিসিআর ল্যাব স্থাপন হলে সাতক্ষীরা জেলার ২২ লাখ মানুষ ছাড়াও খুলনার কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলাসহ যশোরের একাংশের মানুষ এখানে নমুনা পরীক্ষার সুযোগ পাবে।

এজেলার মানুষের অনেকের নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা। বছর বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়। বড় ধরনের কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি এ জেলায়। ফলে সাতক্ষীরা জেলায় বসবাসকারী মানুষের বড় অংশ দরিদ্র। প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ দেশ ও বিদেশে ইটভাটায় কাজ করেন। ভোমরা বন্দর বন্ধ থাকায় প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক বেকার, দুগ্ধ ও পোলট্রিশিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিক্রি না থাকায় সবজির মূল্যও নিম্নমুখী। সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল কাঁকড়া আহরণকারীরাও বেকার হয়ে পড়েছেন। বিকল্প কোনো কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। এ অবস্থায় দেশের পশ্চাৎপদ এ জেলায় মানুষদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা বাড়িয়ে তিন গুণ করার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

 

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।