ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বেকার ও কর্মচ্যুত অসংখ্য মানুষের সাহায্যার্থে সরকার ত্রাণ হিসাবে খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণের কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন। বিদ্যমান অভাব অনটন ও খাদ্য সংকটের বিশাল সমুদ্রে এই প্রচেষ্টা অত্যন্ত অপ্রতুল হলেও অসামান্য একটি পদক্ষেপ বলে মনে হয়। দুর্ভাগ্য বশত এরই মধ্যে নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের এই মহতি কার্যক্রমকে কলুষিত করছে বলে জানা গেছে। আমরা আশা করবো যে সরকার অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা গুলো খুঁজে বের করবেন এবং তার বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই কার্যক্রমকে ফলপ্রসুভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বর্তমানে আমাদের ত্রাণ কার্যক্রমের টার্গেট হচ্ছেন ছিন্নমূল বস্তিবাসী, বেকার নারী পুরুষ ও বিত্তহীন ব্যক্তিরা। এদের শতকরা নব্বই ভাগই লকডাউনের আগে বাসা বাড়িতে কিংবা দোকান পাটে অথবা কলকারখানায় কিংবা উন্নয়ন প্রকল্পে দিনমজুর অথবা স্বল্প বেতনের কর্মচারী হিসাবে কাজ করতেন। এখন তারা কর্মচ্যুত। যারা ভিক্ষাজীবি করতো তারা ভিক্ষা করতেও পারছেন না। এদের সাথে আছেন নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত অসংখ্য মানুষ যারা চরম অভাবের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন, হাতও পাততে পারছেননা, কাউকে বলতেও পারছেননা। তারা উভয় সংকটে আছেন। তাদেরও তালিকাভূক্ত করা প্রয়োজন।
ত্রাণ বিতরণের জন্য ত্রাণ প্রার্থীদের তালিকা তৈরী একটি জটিল কাজ বলে আমরা মনে করি। প্রশ্ন হচ্ছে এই তালিকা কে তৈরী করবেন? ইতোমধ্যে ত্রাণ কাজে যে অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে তার মধ্যে তালিকাভুক্তির অনিয়ম অন্যতম। আবার অনেকে ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ভোটার তালিকায় নাম নাই বলে। কে কাকে ভোট দিচ্ছেন এর ভিত্তিতে যদি তালিকা তৈরী হয় তা হলে ত্রাণ বিতরণে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনা। ইনসাফের দাবী হচ্ছে দলীয় পরিচয় নির্বিশেষে মানুষের হক নিশ্চিত করা। এজন্য তালিকা তৈরীর উপযুক্ত সংস্থা হতে পারে নিরপেক্ষ স্থানীয় সংস্থা বা সরকারী এজেন্সি, যে বা যারা আর্থিক ও সামাজিক দীনতা বিচার করে সাহায্য যাদের প্রাপ্য তাদের তালিকা তৈরী করতে পারেন। এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয়ও বিবেচ্য। সরকারী, বেসরকারী এজেন্সি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং অনেক রাজনৈতিক দল তাদের নিজ নিজ ত্রাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই ত্রাণ কাজে যাতে ডুপ্লিকেশন না হয় তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। জেলা উপজেলা পর্যায়ে ডিসি-ইউএনওর নেতৃত্বে সরকারের একটি সমন্বয় কমিটি রয়েছে। এই কমিটি সকল এজেন্সির শুধু তালিকা নয়, ত্রাণ কাজও সমন্বয় করতে পারে বলে আমরা মনে করি।
মোদ্দা কথা হচ্ছে দেশে এখন জাতীয় দুর্যোগ চলছে। এই দুর্যোগে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় অত্যন্ত জরুরী। আমরা আশা করি সরকারসহ সকল মহল বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করবেন এবং ত্রাণ কার্যক্রমকে সুষ্ঠু ও ফলপ্রসু করতে চেষ্টা করবেন।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …