ক্রাইমর্বাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করায় বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ ভাইরাসটি ইতিমধ্যেই দেশের অধিকাংশ জেলায় বিস্তার লাভ করেছে। তবে করোনায় সংক্রমণ থেকে এখনো সাতক্ষীরাসহ খুলনা বিভাগের ৫টি জেলা মুক্ত রয়েছে। ওই জেলাগুলোতে এখনো কোনো করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি।
সোমবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানা যায়। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহা জেলা করোনামুক্ত রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্য মতে, দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে খুলনা বিভাগের ৫ জেলা ছাড়াও কোভিড-১৯ মুক্ত জেলাগুলো হল- খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও ভোলা।
আইইডিসিআরের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৯৪৮ জন। আর এ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০১ জনের। তবে আক্রান্তদের মধ্যে ৮৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
সাতক্ষীরায় বিদেশ ফেরত মোট ৩ হাজার ৫৪৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ছাড় পত্র দেয়া হয়েছে আরো ৩ হাজার ৪৩২ জনকে। এছাড়া মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে আসোলেশনে রয়েছে ৬ জন এবং যুবউন্নয়নের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে আরো ৭ জন।
এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা থেকে মোট ২৩৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছেছে। ৩৫ টি রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে। বাকীদের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি
এদিকে সোমবার পর্যন্ত সর্বাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। এ পর্যন্ত এক হাজার ১৭৪ জন রাজধানীতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ঢাকা জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ জন। এর পরেই সর্বাধিক আক্রান্ত হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জে। নারায়ণগঞ্জে এই পর্যন্ত ৩৮৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া গাজীপুরে ২৬৯ জন সংক্রমিত হয়েছে।
সোমবার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ওয়েবসাইট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ঢাকা বিভাগের জেলা মাদারীপুরে ২৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। এ বিভাগের নরসিংদীতে ১৩৫ জন, মুন্সীগঞ্জে ৩৩ জন, মানিকগঞ্জে সাতজন, রাজবাড়ীতে আটজন, গোপালগঞ্জে ৩০ জন, টাঙ্গাইলে ১০ জন, কিশোরগঞ্জে ১৪৬ জন, শরীয়তপুরে আটজন ও ফরিদপুরে ছয়জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলায় ৪৩ জন, কুমিল্লা জেলায় ২১ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ১১ জন, চাঁদপুর জেলায় ১০ জন, কক্সবাজার জেলায় একজন, বান্দরবানে একজন, ফেনীতে দুজন, লক্ষ্মীপুর জেলায় ২৫ জন ও নোয়াখালী জেলায় চারজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
সিলেট বিভাগের সিলেট জেলায় চারজন, মৌলভীবাজারে দুজন, হবিগঞ্জ জেলায় একজন এবং সুনামগঞ্জে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
রংপুর বিভাগের রংপুর জেলায় ছয়জন, গাইবান্ধা জেলায় ১৩ জন, নীলফামারী জেলায় নয়জন, কুড়িগ্রামে দুজন, লালমনিরহাট জেলায় দুজন, পঞ্চগড়ে একজন, ঠাকুরগাঁওয়ে ছয়জন ও দিনাজপুরে ১১ জন আক্রান্ত হয়েছে।
খুলনা বিভাগের খুলনায় তিনজন, নড়াইলে দুজন, বাগেরহাটে দুজন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় একজন করে তিনজন আক্রান্ত হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলায় ৩৩ জন, জামালপুর জেলায় ২১ জন, নেত্রকোনায় ১৪ জন এবং শেরপুর জেলায় ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছে।
বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলায় ১২ জন, ঝালকাঠিতে চারজন, বরিশাল জেলায় ২৪ জন, পিরোজপুরে পাঁচজন এবং পটুয়াখালীতে দুজন রোগী আক্রান্ত হয়েছে।
এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলায় পাঁচজন, জয়পুরহাটে দুজন, বগুড়ায় একজন, পাবনায় দুজন, সিরাজগঞ্জে একজন ও নওগাঁওতে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
এদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আরও ৯ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১১০ জনের মৃত্যু হল। করোনায় আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪৩৪ জন। এতে করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৩৮২।
মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৮৭ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৯৭৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।