ক্রাইমর্বাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: ১০ টাকা কেজির চাল আত্মসাতের ঘটনায় ১৩ ডিলার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। গরিবদের মাঝে চাল বিতরণ না করে নিজেরাই চুরি করে কালোবাজারে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ডিলাররা। অবৈধভাবে সরকারি চাল আত্মসাতের দায়ে অভিযুক্তদের ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও করা হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ব্যাপক অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগে করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশে শহর এলাকায় চালু হওয়া ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির বিশেষ ওএমএস কার্যক্রম গত ১৩ এপ্রিল স্থগিত করে সরকার। ঘটনা তদন্তে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মজিবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি মাঠপর্যায়ে সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন তৈরি করেছে। গতকাল প্রতিবেদনটি খাদ্য সচিবের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি ডিলারদের দায়ী করার পাশাপাশি বিতরণ ব্যবস্থায় ত্রুটির কথা উল্লেখ করেছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে তদারকি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী ও চাল বিতরণে মাঠপর্যায়ে কমিটিগুলোকে আরও সক্রিয় করাসহ বেশকিছু সুপারিশ করেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, বিশেষ ওএমএসের কার্যক্রমের আওতায় শহর এলাকার সুবিধাভোগীদের গ্রামের মতো কার্ডের মাধ্যমে চাল দেওয়া হবে। এ বিষয়ে কাজ চলছে। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামালের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি এ মর্মে সুবিধাভোগীদের নির্বাচন করার জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করছে। ওই নীতিমালা সম্পন্ন হওয়ার পর এর কার্যক্রম আবার শুরু হবে। আগামী মে এবং জুন এই দুই মাস এ কার্যক্রম চলবে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, শহর এলকায় ১০ টাকায় কেজি দরে চাল বিতরণে তেমন অনিয়ম হয়নি। কারণ, শহরে এই কর্মসূচি চালু ছিল দুই থেকে তিন দিন। অভিযোগ ওঠার পরই কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে ব্যাপক আত্মসাৎ হয়েছে চলমান খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল বিতরণে। এর বাইরে টিআর, কাবিখা ও জিআর কর্মসূচিতেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে জলে তদন্তে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, চাল আত্মসাতের ঘটনায় এর মধ্যে অনেকেই ধরা পড়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ফৌজদারি মামলা করেছে। তদন্ত কমিটির সদস্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, বিতরণ ব্যবস্থায় নানা অনিয়ম হয়েছে। এরসঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। জানা যায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় মার্চে প্রায় দেড় লাখ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এর বড় একটি অংশ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে খাদ্য সচিব ড. নাজমানারা খানুম বলেন, তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। যারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিশেষ ওএমএসের আওতায় ১০ টাকা চাল বিতরণ কার্যক্রম শহরে খুব বেশি দিন চলেনি। অভিযোগ ওঠার পরপরই আমরা বন্ধ করেছি। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এখানে তদারকি ব্যবস্থা খুব দুর্বল। সে জন্য আমরা বলেছি ওএমএসের জন্য মাঠপর্যায়ে কমিটিগুলোকে আরও সক্রিয় হতে হবে। এ ছাড়া দুর্নীতিবাজ ডিলারদের বাদ দিয়ে যোগ্য ও সৎ ব্যবসায়ীদের ডিলার নিয়োগ করার জন্য ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
Check Also
আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …