ক্রাইমবার্তা রিপোট:সাতক্ষীরা:সাতক্ষীরার বাসিন্দা এক যুবকের (২৬) করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাঁর বাড়ি শ্যামনগর উপজেলা সদরে। সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।যশোরের সিভিল সার্জনের বরাত দিয়ে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন হুসাইন সাফায়াত জানান, ওই যুবক সম্প্রতি ভারত থেকে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন। বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মীরা ওই যুবকের শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় শার্শা উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। পরে নমুনা পরীক্ষার পর শনিবার তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।হুসাইন সাফায়াত আরও জানান, সাতক্ষীরায় এখন পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। এ জন্য আক্রান্ত রোগীকে যশোরে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তিনি যশোরের সিভিল সার্জন মো. আবু শাহিনকে অনুরোধ করেন। তার অনুরোধ যশোরের সিভিল সার্জন চিকিৎসা দিতে সম্মত হয়েছেন।মো. আবু শাহীন মুঠোফোনে জানান, করোনা পজিটিভ ওই যুবককে শার্শা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
———০=-=-=-=-
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক ব্যক্তির দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমিত হয়েছে। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন
Civil Surgeon Satkhira জানান, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জনৈক অধিবাসী ভারত থেকে বেনাপোল বর্ডার দিয়ে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের সময় তার শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় যশোর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। নমুনা পাঠানো হয়েছিল । আজ রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তার খারাপ কোন রোগলক্ষণ নেই। যেহেতু সাতক্ষীরায় কোন রোগী এখন পর্যন্ত সনাক্ত হয়নি তাই সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন মহোদয়ের অনুরোধে উক্ত রোগীকে পুরা সময় যশোরে রেখে পর্যবক্ষণ ও চিকিৎসা দিতে সম্মত হয়েছেন যশোরের সিভিল সার্জন মহোদয়। এজন্য তাঁকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। উল্লেখ্য তিনি একদা সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
রোগী সুস্থ্য হলে যথাযথ পদ্ধতি মেনে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হবে। এভাবে পারস্পারিক সহযোগীতার মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এদিকেকালিগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর ঘটনায় কামারগাঁতি রওজা শরীফও লকডাউন
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে হারুন অর রশিদ সুমন (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৫ এপ্রিল) ভোরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। হারুন অর রশিদ কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের কাঁমারগাতী গ্রামের ছবেদ সরদারের ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রব জানান, নারায়ণগঞ্জে একটি প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করতেন হারুন অর রশিদ সুমন। গত ৫দিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনি সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে দুই প্রতিবেশীর সাথে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বাড়ি আসেন। তাদেরকে কামারগাঁতি রওজা শরীফ কমপ্লেক্স ভবনে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টেনে রাখা হয়। হারুন অর রশিদের জ¦র থাকলেও বিষয়টি গোপন রাখে তারা। হঠাৎ বেশী অসুস্থ হওয়ায় শুক্রবার রাতে তাকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে হারুন অর রশিদের মৃত্যু হয়। এঘটনায় এলাকাজুড়ে আতং্কের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি পাওয়ার পর বেলা ৩ টার দিকে হারুন অর রশিদ সুমনের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কামারগাতি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আব্দুলল্লা আল মামুনের ইমামতিতে পরিবারের চারজন সদস্য নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. শেখ তৈয়েবুর রহমান বলেন, ওই যুবক তথ্য গোপন করায় চিকিৎসকরা ম্যানেনজাইটিস রোগী হিসেবে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। মৃত্যুর পরেই প্রকৃত তথ্য জানা গেছে। ততক্ষণে তার রক্ত পরীক্ষার সুযোগ ছিল না। এখন তার পরিবারের সবার স্যাম্পল নিয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত যুবকের কাছে বারবার তার সাম্প্রতিক ইতিহাস জানার চেষ্টা করলেও সে ও তার আত্মীয়স্বজন মিথ্যা তথ্য দেয়। মৃত্যুর পর তার আত্মীয় স্বজন বলছে সে সম্প্রতি ঢাকা থেকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফেরে। তথ্য গোপন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সঠিক তথ্য দিলে তাকে আমরা করোনা ডেডিকেটেড সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে পারতাম। এখন বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক ও নার্সদের মধ্যেও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তার নিকটাত্মীয়দের নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, কামারগাঁতি রওজা শরীফ ও পাশর্^বর্তী ৬ টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে লাল পতাকা ও ব্যানার টানিয়ে দেয়া হয়েছে। নিহতের পরিবারের সকলের স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষার রেজাল্ট পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সকলকে কঠোরভাবে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, মৃত্যু কী কারণে হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত নয়। এজন্য আতঙ্কিত না হয়ে তিনি সকলকে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।
সাতক্ষীরায় প্রথম করোনা পজিটিভ সনাক্তঃ
————————————————————
★জনৈক ব্যক্তি, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) পদে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,শার্শা, যশোরে কর্মরত আছেন। গত শনিবারে করোনা পজিটিভ ব্যক্তির সংস্পর্শ থাকায় যশোরে তার কর্মস্থল থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আজ সকালে (২৬/০৪/২০২০) তার কোভিড-১৯ পজিটিভ রেজাল্ট আসে। তিনি বর্তমানে সাতক্ষীরা পৌরসভার উত্তর কাটিয়ায় অবস্থান করছেন। তার বাড়িসহ আশে পাশের কয়েকটা বাড়ি লক ডাউন করা হয়েছে।
★জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সিভিল সার্জন, সাতক্ষীরা ডাঃ মোঃ হুসাইন শাফায়াত মহোদয়ের নেতৃত্বে ডাঃ মোঃ মাহবুবর রহমান(উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা, সদর,সাতক্ষীরা), ডাঃ জয়ন্ত কুমার সরকার (মেডিকেল অফিসার, সিভিল সার্জনের কার্যালয়), ডাঃ সাইফুল্লাহ আল কাফি (মেডিকেল অফিসার, সাতক্ষীরা জেলা কারা হাসপাতাল) এর সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল টীম দুপুর ২ঃ০০ টার সময় আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।শারীরিক পরীক্ষার পর কোন উপসর্গ না থাকায় তাকে হোম আইসোলেশন এ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।নিয়মিতভাবে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।
★যাদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে তারা বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইন /প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন এ থাকবেন।কোয়ারেন্টাইন এর নিয়ম ভংগ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
★সাতক্ষীরা জেলায় করোনা সংক্রমণ হওয়ায় সকলকে করোনা সংক্রান্ত সরকারি নিদের্শনা ও স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মেনে চলায় জন্য অনুরোধ জানান হল।
(সিভিল সার্জনের কার্যালয়, সাতক্ষীরা, ২৬/০৪/২০২০,১৫ঃ৩০)