হাফিজুর রহমান শিমুলঃকালিগঞ্জে করোনা ভাইরাস আলামতে হারুন অর রশিদ সুমন (২৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের কামারগাঁতী গ্রামের ছবেদ আলী ও হাফিজা খাতুনের পুত্র।
রুগির আত্মীয় স্বজনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মিদের জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়ায় ফৌজদারি মামলা করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলে জানিয়েছে Md Monoar Hossain ।
জানাগেছে, সুমন ঢাকা শহরে একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যান হিসাবে কর্মরত ছিলেন। সেসহ তার প্রতিবেশি আরও ৫ জন ২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় এ্যাম্বুলেন্স যোগে বাড়িতে ফেরে। সংবাদ পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রব সুমন সহ তিনজনকে পাশ্ববর্তী কামারগাঁতী মাদ্রাসায় কোয়ারেন্টাইনে রাখেন। এখানে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা প্রথমে শ্যামনগর হাসপাতাল ও পরে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় শনিবার ভোর ৬ টায় মারা যায়। ধলবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শওকাত হোসেন ও ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রব জানান, সুমনের মৃত্যু হয়েছে শুনেছি। সকালে লাশ বাড়িতে আনা হলে উপজেলা পপ কর্মকর্তা ডাঃ শেখ তৈয়েবুর রহমানের জানালে তিনি লাশ দেখে লাশ দাফন করতে বলেছেন। ডাঃ শেখ তৈয়েবুর রহমানের নিকট কথা হলে তিনি জানান, মৃত্যুর খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে টেষ্টের জন্য আলামত নিয়ে ঢাকায় প্রেরন করবো, সেখানের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাবেনা কি কারণে মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক রাসেল জানান,
হারুন অর রশিদ সুমন (২৭) বাবা, তাবেদ আলী, মাতা, হাফিজা, গ্রাম কামারগাতী এলাকায় মৃত্যুর ঘটনায় ৬ টি বাড়ী ও রওজাশরীফ লকডাউন করা হয়েছে। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে লাল পতাকা ও ব্যানার টানিয়ে দেয়া হয়েছে। উক্ত ব্যক্তির পরিবারের সকলের স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা করার জন্য বলা হয়েছে। পরীক্ষার রেজাল্ট পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
তবে এলাকায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। জরুরী ভিত্তিতে সংশ্লীষ্ট এলাকা লকডাউনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানিয়েছেন।
o-o
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে হারুন অর রশিদ সুমন (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৫ এপ্রিল) ভোরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। হারুন অর রশিদ কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের কাঁমারগাতী গ্রামের ছবেদ সরদারের ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রব জানান, নারায়ণগঞ্জে একটি প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করতেন হারুন অর রশিদ সুমন। গত ৫দিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনি সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে দুই প্রতিবেশীর সাথে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বাড়ি আসেন। তাদেরকে কামারগাঁতি রওজা শরীফ কমপ্লেক্স ভবনে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টেনে রাখা হয়। হারুন অর রশিদের জ¦র থাকলেও বিষয়টি গোপন রাখে তারা। হঠাৎ বেশী অসুস্থ হওয়ায় শুক্রবার রাতে তাকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে হারুন অর রশিদের মৃত্যু হয়।
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. শেখ তৈয়েবুর রহমান বলেন, ওই যুবক তথ্য গোপন করায় চিকিৎসকরা ম্যানেনজাইটিস রোগী হিসেবে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। মৃত্যুর পরেই প্রকৃত তথ্য জানা গেছে। ততক্ষণে তার রক্ত পরীক্ষার সুযোগ ছিল না। এখন তার পরিবারের সবার স্যাম্পল নিয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত যুবকের কাছে বারবার তার সাম্প্রতিক ইতিহাস জানার চেষ্টা করলেও সে ও তার আত্মীয়স্বজন মিথ্যা তথ্য দেয়। মৃত্যুর পর তার আত্মীয় স্বজন বলছে সে সম্প্রতি ঢাকা থেকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফেরে। তথ্য গোপন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সঠিক তথ্য দিলে তাকে আমরা করোনা ডেডিকেটেড সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে পারতাম। এখন বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক ও নার্সদের মধ্যেও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তার নিকটাত্মীয়দের নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, কামারগাঁতি রওজা শরীফ ও পাশর্^বর্তী ৬ টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে লাল পতাকা ও ব্যানার টানিয়ে দেয়া হয়েছে। নিহতের পরিবারের সকলের স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষার রেজাল্ট পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সকলকে কঠোরভাবে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, মৃত্যু কী কারণে হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত নয়। এজন্য আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।