ক্রাইমর্বাতা ডেস্ক রিপোট: যুদ্ধাপরাধ মামলায় কারাগারের আটক, সাবেক বার বার র্নিবাচিত এমপি , জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির চাই “পোষ্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আজ বাংলাদেশ সহ বিশ্বব্যাপি স্বোচ্চার দলটির নেতাকর্মীরা ফেসবুক,টুইটার,ইউটিউভসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনমত গড়তে ঝড় তুলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। গতকাল সন্ধা থেকে তারা পোষ্ট দিতে থাকে। রাত ১২টা এক মিনিটে গোটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেন তাদের দখলে চলে যায়। সকাল থেকে ফেসবুক ওপেন করা মাত্রই সাঈদীর মুক্তির চাই শিরোনামে পোষ্টটি ব্যাপক হারে দেখতে পাওয়া যায়।রাজপথের পরির্বতে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যকে প্রচারের মাদ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে বলে কেউ কেউ জানান। তাদের দাবী মানবিক, ধর্মীয় ও বয়স বিবেচনায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মুক্তি দিতে হবে।
এদিকে মানবিক, ধর্মীয় ও বয়স বিবেচনায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলার শীর্ষ উলামায়ে কেরাম। শুক্রুবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান।বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন,মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক,হাফেজ মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, পীরে কামেল মাওলানা নেছার উদ্দীন আহম্মেদ,মাওলানা আব্দুল বারীসহ জেলার শীষ সহস্রাধীক উলামায়ে কেরাম। এছাড়া সাতক্ষীরা আইনজীবিদের মধ্য থেকে এড.আজিজুল ইসলাম, এড.বাশারাতউল্লাহ আরঙ্গী,আব্দুস সুবহান মুকুল এড.আবু বক্কর ,এড হাফিজুর রহমানসহ দুইশতাধীক আইনজীবি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মুক্তির দাবী জানিয়েছেন। একই দাবী জানানো হয়েছে জেলার শিক্ষক সমাজ, সাংবাদিক বৃন্দু,অধ্যাপক ডাক্তার,বুদ্ধিজীবিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেষার মানুষ।
এদিকে সম্প্রতি একই দাবীতে আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনি, ভিপি নুরুল ইসলাম নূর,মাওনানা আজহারীসহ সমাজের র্সবস্তরের মানুষ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন।
বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী একটি অবিসংবাদিত নাম। যিনি সুদীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে দেশে বিদেশে কুরআনের তাফসির করেছেন। তিনি বিশ্বের প্রায় ৫০ এর উপর দেশ সফর করেছেন এবং কুরআনের বাণীকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি দুইবার (১৯৯৬ ও ২০০১ ইং সালে ) নিজ এলাকা থেকে বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়ণে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছেন।
দেশে বিদেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর তাফসির শুনে ইসলামী জীবন-যাপনে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ তাঁকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে। তাঁর মুখে কুরআনের কথা শুনে মানুষ আল্লাহর পথে চলার প্রেরণা পেয়েছে, লাখো তরুণ পেয়েছে আলোর দিশা। হাজারো অমুসলিম ইসলামের ছায়াতলে এসে ইসলাম কবুল করেছেন।
পৃথিবীর সাধারণ তরুণ, ছাত্র ও যুব সমাজকে ইভটিজিং, মাদক, ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও অনৈতিক সমস্ত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে জাতির কাঙ্ক্ষিত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে আল্লামা সাঈদীর তাফসির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সারা পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলমানদের ঘরে ঘরে তাঁর তাফসীরের ক্যাসেট, সিডি,ভিসিডি নিয়মিতই বাজতো এবং এখনও বাজে।
তিনি শুধু তাফসীরকারকই নয় তিনি একজন কুরআনের গবেষক,পন্ডিত ও সুলেখকও। তাঁর লেখা “তাফসীরে সাঈদী” ৫ ম খন্ড প্রকাশিত হয়েছে বাকীটুকু চলমান। ৫৮৪ পৃষ্ঠার নবী (সা:) এর সীরাত গ্রন্থ” সীরাতে সাইয়েদুল মুরসালিন”সহ ইসলামের বিভিন্ন বিভাগের গবেষণাধর্মী ৭৭ টি গ্রন্থ তিনি রচনা করেন।
তিনি আজ প্রায় ১১ বছর যাবত কারাগারে বন্দী রয়েছেন। বর্তমানে তার বয়স ৮১ বছর প্রায়। তাঁর হার্টে ৫টি রিং বসানো এবং তিনি ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানান জটিল রোগে আক্রান্ত। তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া হাটতে পারেন না।
দলটির এক নেতা কামাল হোসেন জানান, আমি নিজেই ২০১৫ সালে ঢাকা কারাগার থেকে কাসিমপুর কারাগার-১ এ গেলে ১০ দিন হুজুরের পাশেই হাসপাতালে ছিলাম। আমি সেখানে ১০ থাকি আর তিনি ১০ দিনই আমার ঘাড়ে হাত রেখে প্রতিদিন বিকাল বেলা হাঁটতেন।বর্তমানে অন্যের সাহায্য ছাড়া তো ওঠা-বসা, চলাচল বা নিত্যদিনের কাজ করা তার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আমি নিজেই তার বাস্তব সাক্ষী, তিনি কত অসহায় বৃদ্ধ মানুষ!
বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশসহ পৃথিবীব্যাপী করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের ফলে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী অনেক দেশ বৃদ্ব কারাবন্দীদের মুক্তি দিয়েছে। বাংলাদেশেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ধর্মীয়, মানবিক ও বয়সের বিবেচনায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
কে
মুক্তি দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের প্রতি বিনীতভাবে আহবান জানাচ্ছি।
বৃদ্ধ, অসুস্থ ও মাজলুমদের প্রতি ন্যায়বিচার ও মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ রব্বুল আলামীনও রসুল (স:) ও বলছেন। যেমন- আল্লাহ বলেন
‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষ্য দানে তোমরা অবিচল থাকবে; কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন কখনো ন্যায়বিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে, তোমরা ন্যায়বিচার কর, তোমরা যা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ সে ব্যাপারে ভালোভাবেই অবহিত’ (সূরা আল মায়েদা : ৮)।
“ক্ষুধার্থকে খাবার দিও, অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যেও, বন্দী ব্যক্তিকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করো। ”
(সহীহ বুখারী : হাদীস নং ৫৩৭৩, ৫৬৪৯, আবূ দাঊদ : হাদীস নং ৩১০৫)