শেখ সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট:বাগেরহাটে
আশ্রয়ন কেন্দ্রের বসবাসকারী ও স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, চাদঁপাই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের নারকেলতলা এলাকায় প্রায় ৪ হাজার লোকের বসবাস। সেখানে সরকারের তৈরী করা ৪টি আশ্রয়ন কেন্দ্রের রয়েছে। এখানে ৪টি আবাসনে টিনসেটসহ একটিতে ১২০টি পরিবার, অন্যটিতে ৯০টি পরিবার ও অন্য ২টিতে ৭৫টি করে মোট ৪শ ৮০টি পরিবার রয়েছে। এছাড়াও ওই এলাকায় সরকারী বেশ কয়েক একর খাস জমি রয়েছে, যা অনাবাদি পরে রয়েছে অনেক বছর ধরে। আর এ ব্যারাক ৪টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় দুই হাজার থেকে ২২শ ভূমিহীন পরিবার বসবাস করছে। ওই এলাকাটি ইউনিয়নের উত্তরের শেষ সিমানায় হওয়ার সুবাদে দীর্ঘদিন থেকে এখানে গড়ে উঠেছে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। যারা ওই এলাকায় মাদকসহ নানা অপরাধ মুলক কর্মকান্ডের সাথে জরিত রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। আর এ গ্রুপটি দিয়ে এখানকার প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিরা হরহামেসাই চালিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। আবাসনে বসবাসকারীরা ছোট খাটো অন্যায় করলেই এদেরকে গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা। সন্ত্রাসী এ কার্যকলাপের প্রতিবাদ বা ধার্যকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের উপর নেমে আসে শারীরিক ও অমানুষিক নির্যাতন।
গত ২০১৭ সালে একই এলাকায় বসবাসকারী এক ব্যাক্তির মেয়ের একটি অনৈতিক ঘটনা ঘটে। সেখানে ওই ঘটনার সাথে একাধিক ব্যাক্তি জড়িতের কথা বলে মেয়েটি ও এলাকাবাসী। কিন্ত স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হারুন মল্লিক সন্ত্রাসীদের সহায়তায় ৭৮ বছরের এক বৃদ্ধ জনৈক ইউসুফ আলী খাঁনকে দোকানের মধ্যে বেধরক মারপিট করে এবং মোটা অংকের টাকা দাবী করে। তার ধার্যকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করায় ওই অপরাধে তাকে ধর্ষন মামলায় আসামী করে জেল হাজতে পাঠানো হয় বলে ইউসুফ আলী জনসম্মুখে অভিযোগ করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করার কারনেই ইউসুফকে এ মামলার আসামী হতে হয়েছে। দীর্ঘ ৩ বছর জেল হাজত খাটার পর গত আড়াই মাস আগে জামিনে মুক্তি পান ইউসুফ আলী। ওই মামলা চলমান থাকার পরেও গত ২৬ এপ্রিল একই ঘটনা পুনরাবৃতি ঘটে ওই মেয়েটির। ২৫ এপ্রিল রাতে গোপন বৈঠকে বসে নির্মল বিশ্বাসের বাসায় আর সেখানে উপস্থিত থাকেন সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা সকলেই। সেখানে মেয়েটি আয়নাল মল্লিক ও সামছু রহমানের নাম বললেও স্থানীয় প্রভাবশালী নির্মল, দুলাল, ইউপি মেম্বর ও তার স্ত্রীসহ ওই সকল সন্ত্রাসীরা কৌশলে আয়নাল মল্লিককে আসামী করে। আয়নাল বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।
এদিকে আটক আয়নাল মল্লিকের সাত বছরের শিশু পুত্র তুফান মল্লিক হার্টের রোগী। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরে ছেলেকে অপারেশ করানোর কথা থাকলেও সেটির এখন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শুধু এ ঘটনা নয়. এখানে মাদক ব্যাবসা, নারী কেলেঙ্কারী, নারী পাচার, সন্ত্রাসীদের আশ্রয় স্থল, আবাসনে কে বসবাস করবে, আর কে করবে না, তাও তাদের নিয়ন্ত্রনে। এমনকি বহিরাগতদেরও অবাধ যাতায়াত ও বসবাসের স্থান করে দিচ্ছে ওই সন্ত্রাসী মহলটি।
এব্যাপারে ওই আবাসন এলাকার ইউপি সদস্য মোঃ হারুন মল্লিক বলেন, তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগই মিথ্যা, এলাকায় নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দিতা নিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে দন্দ। তাই মিথ্যা অপবাদ রটাচ্ছে ওই প্রতিপক্ষরা।
সহকারী পুলিশ সুপার (মোংলা সার্কেল) মোঃ আসিফ ইকবাল জানান, নারকেলতলা আবাসন প্রকল্পের একটি নারী ঘটিত ঘটনার মামলা চলমান। তবে আবাসনে মাদক বা অন্য কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং অপরাধ মুলক কার্যক্রম হলে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।