একজন বয়োবৃদ্ধ কুরআনের খাদেম আল্লামা সাঈদীর মুক্তি চাই।

বর্তমানে বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী একটি অবিসংবাদিত নাম। যিনি সুদীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে দেশে বিদেশে কুরআনের তাফসির করেছেন। তিনি বিশ্বের প্রায় ৫০ এর উপর দেশ সফর করেছেন এবং কুরআনের বাণীকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছেন।

তিনি দুইবার (১৯৯৬ ও ২০০১ ইং সালে ) নিজ এলাকা থেকে বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়ণে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছেন।
দেশে বিদেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর তাফসির শুনে ইসলামী জীবন-যাপনে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ তাঁকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে। তাঁর মুখে কুরআনের কথা শুনে মানুষ আল্লাহর পথে চলার প্রেরণা পেয়েছে, লাখো তরুণ পেয়েছে আলোর দিশা। হাজারো অমুসলিম ইসলামের ছায়াতলে এসে ইসলাম কবুল করেছেন।
পৃথিবীর সাধারণ তরুণ, ছাত্র ও যুব সমাজকে ইভটিজিং, মাদক, ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও অনৈতিক সমস্ত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে জাতির কাঙ্ক্ষিত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে আল্লামা সাঈদীর তাফসির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সারা পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলমানদের ঘরে ঘরে তাঁর তাফসীরের ক্যাসেট, সিডি,ভিসিডি নিয়মিতই বাজতো এবং এখনও বাজে।
তিনি শুধু তাফসীরকারকই নয় তিনি একজন কুরআনের গবেষক,পন্ডিত ও সুলেখকও। তাঁর লেখা “তাফসীরে সাঈদী” ৫ ম খন্ড প্রকাশিত হয়েছে বাকীটুকু চলমান। ৫৮৪ পৃষ্ঠার নবী (সা:) এর সীরাত গ্রন্থ” সীরাতে সাইয়েদুল মুরসালিন”সহ ইসলামের বিভিন্ন বিভাগের গবেষণাধর্মী ৭৭ টি গ্রন্থ তিনি রচনা করেন।

তিনি আজ প্রায় ১১ বছর যাবত কারাগারে বন্দী রয়েছেন। বর্তমানে তার বয়স ৮১ বছর প্রায়। তাঁর হার্টে ৫টি রিং বসানো এবং তিনি ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানান জটিল রোগে আক্রান্ত। তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া হাটতে পারেন না।
আমি নিজেই ২০১৫ সালে ঢাকা কারাগার থেকে কাসিমপুর কারাগার-১ এ গেলে ১০ দিন হুজুরের পাশেই হাসপাতালে ছিলাম। আমি সেখানে ১০ থাকি আর তিনি ১০ দিনই আমার ঘাড়ে হাত রেখে প্রতিদিন বিকাল বেলা হাঁটতেন।বর্তমানে অন্যের সাহায্য ছাড়া তো ওঠা-বসা, চলাচল বা নিত্যদিনের কাজ করা তার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আমি নিজেই তার বাস্তব সাক্ষী, তিনি কত অসহায় বৃদ্ধ মানুষ!

বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশসহ পৃথিবীব্যাপী করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের ফলে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী অনেক দেশ বৃদ্ব কারাবন্দীদের মুক্তি দিয়েছে। বাংলাদেশেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ধর্মীয়, মানবিক ও বয়সের বিবেচনায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের প্রতি বিনীতভাবে আহবান জানাচ্ছি।
বৃদ্ধ, অসুস্থ ও মাজলুমদের প্রতি ন্যায়বিচার ও মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ রব্বুল আলামীনও রসুল (স:) ও বলছেন। যেমন- আল্লাহ বলেন
‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষ্য দানে তোমরা অবিচল থাকবে; কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন কখনো ন্যায়বিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে, তোমরা ন্যায়বিচার কর, তোমরা যা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ সে ব্যাপারে ভালোভাবেই অবহিত’ (সূরা আল মায়েদা : ৮)।

“ক্ষুধার্থকে খাবার দিও, অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যেও, বন্দী ব্যক্তিকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করো। ”
(সহীহ বুখারী : হাদীস নং ৫৩৭৩, ৫৬৪৯, আবূ দাঊদ : হাদীস নং ৩১০৫)

অতএব, আসুন ২ মে ২০২০ইং এবং পরের কয়েকদিন আল্লামা সাঈদী মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের যে যেখানে আছেন সেখান থেকে দলমত নির্বিশেষে আপনার ফেইসবুক আইডি, ফেইসবুক পেইজ , মেসেন্জার, টুইটার আইডি এবং ইনস্টাগ্রাম আইডি সহ সব ধরণের সোশ্যাল মিডিয়ায়র মাধ্যমে নিজের পক্ষ থেকে আল্লামা সাইদীর মুক্তির পক্ষে পোস্ট, শেয়ার,লাইক করি অন্যকে পোস্ট, শেয়ার ও লাইক করতে উদ্বুদ্ধ করি এবং জনমত গড়ে তুলি। আসুন একজন বয়োবৃদ্ধ কুরআনের খাদেম আলেমে দ্বীনের মুক্তির প্রক্রিয়ায় জোরালো ভূমিকা পালন করি।
পবিত্র রমাদানে আপনার প্রতি ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি আল্লাহ রহম করুন। আমিন
#FreeSayedee
#SaveBangladesh

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।