ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে সাতক্ষীরা উপকূলে ঝড়ো বাতাস শুরু হয়েছে (ভিডিও)

ঘূর্ণিঝড় আম্পান ধেয়ে আসছে সাতক্ষীরাসহ দেশের উপকূলের দিকে। এর প্রভাবে সাতক্ষীরার উপকূলে ঝড়োবাতাস ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আর আগে থেকে সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকা শ্যামনগরের আকাশ গুমোট হয়েছিল।
মঙ্গলবার (১৯ মে) ১টার দিকে ঝড়ো বৃষ্টি শুরু হয়ে ১৫/২০ মিনিট স্থায়ী হয়ে এখন আকাশ আবারও গুমোট হয়ে আছে। বৃষ্টির পর নদীতে পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি উত্তাল হয়ে উঠেছে সুন্দরবন সংলগ্ন নদীগুলো।
শ্যামনগর উপজের উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জে, বুড়িগোয়ালীনি এলাকার মানুষ বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুজর গিফারী বলেন, আজ দুপুর ১টার দিকে ঝড়ো বৃষ্টি শুরু হয়ে ১৫/২০ মিনিট স্থায়ী হয়। এখন মাঝে মধ্যে টিপ টিপ করে বৃষ্টি হচ্ছে হচ্ছে। তবে বাতাস হচ্ছে। নদী উত্তাল পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টির কারণে গাবুরা থেকে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে একটু সমস্যা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রমজান নগর ইউনিয়নের দ্বীপ অঞ্চল গোলাখালি এলাকা থেকে থেকে ৪০০জন মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা গাবুরা ইউনিয়ন। সেখানকার ৩০ হাজার মানুষের মধ্যে ১০ হাজার মানুষকে নদী পার করে শ্যামনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখান থেকে ১০ হাজার মানুষকে আনা হলে বাকি ২০ হাজার মানুষের সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রেখে আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা সম্ভব। ইতোমধ্যে ৫০০জন মানুষকে শ্যামনগর আনা হচ্ছে এবং ২ হাজার ৫০০ মানুষকে মাইকিং করে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। পদ্মপুকুর ইউনিয়নের ১ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। এসব এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে ৫০ টি বাস ও ১০০টি ট্রলার প্রস্তুত রাখা আছে। আজ সন্ধ্যার মধ্যে সকল মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হবে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্পান ১২টার বুলেটিনে বলা হয়েছে উপকূলের ৬’শ ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করায় মংল বন্দরসহ সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকায় ৭ নং বিপদ সংক্ষেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পান ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার বেগে উপকুলের দিকে ধেয়ে আসছে। মূল কেন্দ্র থেকে এটার গতিবেগ ঘন্টায় ২২৫ থেকে ২৪৫ কিলোমিটার। সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানতে পারে বুধবার ভোর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে। ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকার মৃদু প্রভাব শুরু হয়েছে। শহর এলাকায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির সাথে হালকা বাতাস শুরু হয়েছে। এক মিলিটিররের কম বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষয়-ক্ষতি কমাতে জেলা প্রশানের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকায় লাল পতাকা উঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনসহ প্রতিটি উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রে আগতদের জন্য সেনিটাইজার ও মাস্কের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জ¦র, সর্দি, কাশি থাকলে তাদের জন্য আলাদা থাকার ব্যবস্থা করা হবে। একইসঙ্গে প্রত্যেক ইউনিয়নে মেডিক্যাল টিম প্রস্তুুতকরণ, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও খাওয়ার পানি মজুদ রাখা, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ শুরু করে দিয়েছে।

 

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।