সাতক্ষীরাসহ দক্ষিঞ্চালের কয়েকটি গ্রামে পানির উপরে দাড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায়

আবু সাইদ বিশ্বাস:সাতক্ষীরা: ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ সাতক্ষীরাসহ দক্ষিঞ্চালের কয়েকটি গ্রামে পানির উপরে দাড়িয়ে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় গাবুরা ইউনিয়ন, কয়রা উপজেলার ২ নম্বর কয়রা গ্রাম সহ কয়েকটি স্থানে শতশত লোকজন পানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন ।

শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় গাবুরা ইউনিয়ন পুরোপুরি বিধ্বস্ত। গোটা ইউনিয়ন এখন পানির নিচে। মঙ্গলবার (২৬ মে) সকাল থেকে কয়েক হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ কাজে নেমেছেন। গাবুরা ইউনিয়নের লেবুগুনিয়া এলাকায় বাঁধ রক্ষায় কাজ করছেন এসব মানুষ। সারাদিন কাজ করার পর রাতে আবার ভেঙ্গে যাচ্ছে। গত কয়েক দিনেও এলাকাতে পানি ঢুকা বন্ধ করতে পারিনি এলাকা বাসী।

কয়রা উপজেলার ২ নম্বর কয়রা গ্রামের লোকজন জানান, আম্পানের ফলে এ উপজেলার ৮০ ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ঝড়ের তান্ডবে ১২১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ২১টি স্থানে ৪০ কিলোমিটারের বেশি অংশ ভেঙে গেছে। গতকাল ২৫ মে সকালে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নির্মাণে স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নেন কয়েক হাজার মানুষ। কাজের ফাঁকে বেলা ১১টার দিকে ২ নম্বর কয়রা গ্রামের লোকজন পানিতে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন।

ঈদের নামাজে ইমামতি করেন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আ খ ম তমিজ উদ্দিন। এতে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম। তিনি নামাজের আগে এলাকাবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়রাবাসীর দুর্বিষহ অবস্থা তুলে ধরেন এবং মজবুত বাঁধ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণের কাজে অংশ নেওয়ার জন্য এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানান।

এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার আমরা অন্য রকম ঈদ পালন করছি। স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণের সময় জোয়ারের পানি যখন হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছায়, তখন ঈদের নামাজ শুরু হয়। প্রায় ৬ হাজার মানুষ নামাজে অংশগ্রহণ করেন। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সবার জন্য ঈদের সেমাইয়ের ব্যবস্থা করেছি। এ ছাড়া দুপুরে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে খিচুড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে খুলনার ৯টি উপজেলার ৮৩ হাজার ৫৬০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে কয়রা। এ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল লোনা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে ছোট-বড় ৫ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে। অসহায় হয়ে পড়েছে প্রায় সাত লাখ মানুষ।

হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায়। সোমবার বেলা ১১টা, ২ নম্বর কয়রা গ্রাম, কয়রা, খুলনা। ছবি: ক্রাইমর্বাতা

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।