করোনা আর আম্ফানের ছোবল : ভাল নেই উপকুলের মানুষ

ক্রাইমর্বাতা রিপোট:সাতক্ষীরা: মহামারী মরনব্যাধী করোনা ভাইরাস দিকে দিকে প্রতিটি প্রান্তে, আক্রান্তের ক্ষেত্র বিস্তৃত হচ্ছে সেই সাথে করোনা প্রতিরোধ আর করোনা জয়ের যুদ্ধ চলছে, এরই মধ্যে সর্বনাশা শক্তিধর ঘূর্ণিঝড় আম্ফান তার শক্তির মহড়া প্রদর্শন করে উপকূলীয় এলাকাকে লন্ডভন্ড করেছে। বিশেষ করে সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ জনপদ তছনছ হয়ে এক অবর্ণনীয় অভিশাপের দ্বারে। জেলার বিশলক্ষাধীক জনগোষ্ঠী বর্তমান সময়ে করোনা এবং সর্বনাশা আম্ফানের ক্ষত বিক্ষত বিপর্যস্থতা, ভয়াবহতা করুন মর্ম স্পর্শী হাহাকারের সাথে সংশ্লিষ্ট। ভাল নেই প্রিয় বাংলাদেশ, ভাল নেই দেশের জনসাধারন, সকলের মাঝে করোনা আতঙ্ক করোনা উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা দিকে দিকে, ছড়িয়ে পড়ছে করোনার আগ্রাসন। প্রতিদিনই দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তো বাড়ছেই। গতকাল সর্বোচ্চ দুই হাজারের অধিক মানুষের দেহে করোনা আক্রান্তের বিষয়টি বলে দিচ্ছে আমরা দিনে দিনে গভীর ক্ষতির দিকেই, করোনা প্রাদুর্ভাবের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি। প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস আমাদের গ্রাস করতে চাইছে। ভয়াবহ সংক্রমন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে যতটুকু আতঙ্ক উদ্বেগ আমরা ধারন করছি ততোটুকু সতর্কতা, সাবধানতা এবং প্রস্তুতিতে নেই আর এমনটি স্পষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত প্রতিমুহুর্ত জনসমক্ষে থাকা। বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়া, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে, প্রতিহত আর করোনা জয়ের বিশেষ এবং অন্যতম মাধ্যম সামাজিক তথা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কিন্তু বর্তমান চিত্র, সড়কের বাজারের বিপনী বিতানের চিত্র বলে দিচ্ছে জনসাধারনের উল্লেখযোগ্য অংশ সামাজিক এবং শারিরীক দূরত্ব মেনে চলছে না। এক শ্রেণীর লোকজন অসচেতনতাকে সঙ্গী করে করোনা ঝুকিতে নিজেকে সম্পর্কিত করছে। কোন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হওয়াই তার পরিবারের সদস্যরা এবং গ্রামের লোকজন সংক্রমন হয় আর এভাবেই দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। ইউরোপের দেশগুলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আধুনিক বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে পিছিয়ে নেই কিন্তু করোনার ভয়াবহতা আর নিষ্ঠুরতা হতে তারা রক্ষা পাইনি অথচ আমাদের দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ সামাজিক দুরত্ব মানছে না। স্বাস্থ্যবিধিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে না। চারিদিকে বাতাস দিনে দিনে ভারী হচ্ছে। প্রকৃতির নিষ্ঠুর নির্মমতার যে থাবা বসিয়েছে ঘুর্ণিঝড় আম্ফান তাতেও সর্বশান্ত হয়েছে। সাতক্ষীরার হাজার হাজার মানুষ জেলার শ্যামনগর আশাশুনীর বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে। হাজারো মানুষ হারিয়েছে তাদের বসতবাড়ী। কোটি কোটি টাকার চিংড়ী ভেসে গেছে। কেবল শ্যামনগর বা আশাশুনী নয় দেবহাটার ইছামতী ভেঙ্গে কয়েক গ্রামে লবনাক্ত পানির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা উল্লেখযোগ্য অংশ বিরানভূমিতে পরিনত হয়েছে। বীজতলার অস্তিত্ব বিপন্ন হয়েছে। রবিশস্য ধ্বংস হয়েছে, বসতবাড়ী ঢসে পড়েছে, শত সহস্র বৃক্ষ ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের মহাতান্ডবে ক্ষত বিক্ষত হয়েছে। কলারোয়া, তালা, পাটকেলঘাটা সর্বত্র ঘূর্ণিঝড় আম্ফান তার শক্তি দেখিয়েছে। সাতক্ষীরার বিশলক্ষাধীক মানুষ বর্তমান সময়ে একদিকে করোনা অন্যদিকে আম্ফানের সর্বনাশা তান্ডবে ক্ষতবিক্ষত, হত বিহ্বল, অর্থনীতিতে চলছে চরম মন্দা, উৎপাদন মুখি শিল্পে নেমে এসেছে অস্থিরতা, সাতক্ষীরার প্রাণ চিংড়ী করোনার কারনে বিপর্যস্থ, আম শিল্পে নেমে এসেছে অন্ধকার, করোনা আর আম্ফানের ছোবলে যেমন ভাল নেই উপকুলের মানুষ অনুরুপ ভাবে স্বাস্থ্য বিধি না মানার প্রতিযোগিতা চলছে, সবার আগে মানুষকে সুস্থ থাকতে হবে, বাঁচতে হবে তাহলে সব ধরনের সমস্যার সমাধান হবে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।