সকালে বাঁধার পর বিকেলে ভাঙলো শ্যামনগরের দাতিনাখালীর উপকুল রক্ষা বাঁধ: আশ্রয় কেন্দ্রে ফিরলো দুর্গতরা

ক্রাইমর্বাতা রিপোট:সাতক্ষীরা: বুধবার সকালে রিং বাঁধ নির্মাণের পর রাতের জোয়ারে আবার ভেঙে গেছে দাতিনাখালীর অংশের উপকূল বাঁধের বিন্তীর্ন এলাকা। ফলে আবারও পাশের খোলপেটুয়া নদীর সাথে সমানতালে জোয়ার ভাটা বইছে দাতিনাখালী আর বুড়িগোয়ালীনিসহ আশাপাশের কয়েক গ্রামে। ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত অংশ মেরামতের খুশিতে যেসব পরিবার বসতভিটায় ফিরেছিল তারা আবারও পরিবার পরিজন পাশর্^বর্তী সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা ভাঙন কবলিত অংশ মেরামতের কাজে যোগ দিলেও নারী ও শিশুদের সাইক্লোন শেল্টরাসহ পাঠিয়ে দিয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। এমতাবস্থায় আম্পাণ আঘাতে গৃহহীন হাজারও পরিবার আবার চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। আয় রোজগার না থাকার সুযোগে তারা যেমন টিকমত খাওয়া পাচ্ছে না, তেমনী দুদিন ধরে শুরু হওয়া তীব্র বৃষ্টির মধ্যে তারা মাথা গোঁজার মত একটু আ¤্রয় ও পাচ্ছে না। এদিকে শ্যামনগরেও করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার বিষয়টিও দুর্গত এসব হনগোষ্ঠীর মধ্যে মারাত্মক আতংকের সৃষ্টি করেছে। সবমিলিয়ে আম্ফান আঘাতে লন্ডভন্ড জনপদ শ্যামনগরের উপকুলবর্তী পাঁচ ইউনিয়নের মানুষ যারপর নাই নিদারুন কষ্ট আর ভোগান্তীতে পড়েছে।
দাতিনখালীর গ্রামের আছিয়া খাতুন বলেন, বুধবার বাঁধ বেধে ফেরার পর দুই বাচ্চাকে নিয়ে স্বামীর সাথে ধসে পড়া বাড়িতে ফিরেলাম। কিন্তু রাতের জোয়ারে আবার একই অংশের বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি শোবার ঘরে ঢুকে পড়ায় আবারও সবাই মিলে সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিছি।
আম্ফান এ সর্বস্ব হারানো এ গৃহবধু আরও বলেন, আয় রোজগার না থাকায় ছেলে মেয়ে দুটোকে নিয়ে পাশের নদীতে রেণু পোনা ধরতিছি, আর সকাল থেকে তার স্বামী সফিকুল ইসলাম নুতন করে ভেঙে যাওয়া অংশের বাঁধ মেরামতের কাজে গেছে। মানুষের ঘের বেড়ি ডুবে যাওয়ায় কেউ বাগদা/গলদার রেণু নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না- জানিয়ে ঐ গৃহবধু আরও বলেন সরকারিভাবে একবারে কছেষ কেচি চাল আলু আর ডাল পাওয়া গেলেও তার ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। মানুষের কাছে চেয়েও সাহায্য মিলছে না। এমতবস্থায় বাচ্চা দুটোকে নিয়ে না খেয়ে মরার উপক্রম হয়েছে।
অভিন্ন চিত্র দাতিনাখালী আর বুড়িগোয়ালীনি গ্রামের আরও শতাধিক পরিবারে। তারা জানায় আম্ফান এর পর সরকারিভাবে একবার করে পাচঁ কেজি চাল আর ডাল আলু দিয়ে যায়। কিন্তু ঐ সামান্য ত্রাণে কষ্ট করে দু’তিন দিন চালানো গেলেও তারপর থেকে না খাবার উপযোগী কোন সাহায্য না পেয়ে দুর্গতরা নিদারুন কষ্ট পোহাচ্ছে।
স্থানীয় আব্দুল হালিম, মামুনুর রশিদ, আবুজর রহমানসহ অনেকে জানায় তিন/চার দিনের চেষ্টায় দাতিনাখালীর তিনটি ভাঙন কবলিত অংশের বাঁধ মেরামত করা সম্ভব হলেও বুধবার রাতের জোয়ারে সেখানকার বাঁধ আবার ভেঙে গেছে। যে কারনে বউ বাচ্চাদের নিরাপদে সাইক্লোন শেল্টারে পৌছে দিয়ে আব্দুল জলিল, খোকন সানা, মুজিবর রহমানসহ অনেকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভাঙন কবলিত অংশের বাঁধ মেরামতের কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে আব্দুল জলিল, মিন্টু হোসেনসহ স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করেন যে স্থানীয় চেয়ারম্যানের আন্তরিকতার অভাবে আম্ফান এর রাতে বাঁধ ভেঙেছে। পরবর্তীতে বাঁধ বাঁধার ব্যাপারে তার গড়িমশি রয়েছে বলেও তাদের অভিযোগ।
যদিও বার বার চেষ্টা করেও সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডলের সথে বার বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।