সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা নিরাশনের ৪৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প যেন বাতে-বোরাতে না যায় (ভিডিও)

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ   সাতক্ষীরায় জলাবদ্ধতা নিরাশনের ৪৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প যেন বাতে-বোরাতে না যায় এমন মন্তব্য করেছে জেলার অনেকে। কারণ ইতির্পূেবের বরাদ্ধকৃত টাকার সূফল জেলাবাসী পায়নি বলে অভিযোগ। সাতক্ষীরা শহরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই সভা করেন।
সভায় ৪৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার ১, ২, ৬-৮ এবং ৬-৮ (এক্সটেনশন) এর নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেতনা ও মরিচ্চাপ নদী খনন করা হবে এবং উক্ত দুই সদী সংলগ্ন ৮৮টি ছোট-বড় খাল পূর্ণখনন করা হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে সাতক্ষীরা শহর ও উজানের পানি খোলপেটুয়া নদীতে নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। গত কয়েক বছর পূর্বেই প্রকল্পটি তৈরী করে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সেটি অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল।
এ প্রকল্পের আওতায় এই এলাকার ৬০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার নদী পুন:খনন করা হবে। নদী ড্রেজিং করা হবে ২০ দশমিক ৫০ কিলোমটার। খাল পুন:খনন করা হবে ৩৪৪ কিলোমিটার। বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ করা হবে ১১৩ কিলোমিটার এবং ২৭টি নিষ্কাশন রেগুলেটর মেরামত ও পুনর্গঠন করা হবে।
এদিকে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরার বেড়িবাঁধ ভেঙে সমুদ্রের লবণাক্ত জোয়ারের পানি কৃষি এলাকায় ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জানিয়েছেন।
একনেক বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরার পোল্ডার, নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং পোল্ডারের ভেতরের নদী খালগুলো পুন:খনন এবং পুনরাকৃতির মাধ্যমে এলাকায় লবণাক্ত পানি ঢুকতে না দিতেই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।’ একইসঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ সুবিধা দিয়ে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করাও এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য বলে জানান মন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে ওই এলাকায় চিংড়ি চাষের জন্য সমুদ্রের লবণাক্ত পানি প্রবেশ করানো হয়। এই কাজে কয়েকটি জায়গা থেকে পানি নেওয়ার ফলে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ছিল না, যার ফলে বাঁধ নষ্ট হয়ে গেছে।
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন থেকে নির্ধারিত একটি জায়গা থেকে লবণাক্ত পানি নিতে হবে। ওই জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পানি নিতে গেলে যে খরচ হয় সেটা যেন ব্যবসায়ীরা দেন।’ মন্ত্রী জানান, অনেক দিন ধরে ওই এলাকার নদী খনন না হওয়ায় বাঁধগুলো নিচু হয়ে যায়। এমন অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড শিগগির প্রকল্পটি শুরু করে ২০২৩ সালের জুনে শেষ করবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বৈঠকে ১৬ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ের ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৪ হাজার ৪০১ কোটি ৫২ লাখ টাকা, প্রকল্প সহায়তার খাত থেকে প্রায় এক হাজার ৮৮২ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা যোগান দেওয়া হবে।
বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পুগলো হল: ‘কোভিড-১৯ ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যান্ডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ১২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ‘কোভিড-১০ রেসপন্স ইমারজেন্সি অ্যাসিসট্যান্স’ প্রকল্প। এর ব্যয় ১ হাজার ৩৬৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ‘প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প-৩য় পর্যায়’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৮৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ‘মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম-৭ম পর্যায়’ প্রকল্প। এর ব্যয় ৩ হাজার ১২৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ‘শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ) (১ম সংশোধিত প্রকল্প)’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা। ‘শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে প্রায় এক হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। ‘কৃষি যন্ত্রপাতি ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন ব্যবস্থাকে অধিকতর লাভজনক করা’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়ছে ৫৬ কোটি টাকা। ‘মানসম্পন্ন মসলা বীজ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিতরণ’ প্রকল্প। এর ব্যয় ৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ‘দাশেরকান্দি পয়:শোধনাগার (১ম সংশোধিত প্রকল্প)’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৯৫ কোটি টাকা।

সবখবরের ভিডিও আপডেট পেতে সাবসক্রাইভস করুন সাতক্ষীরা টিভি.প্রেস

https://www.youtube.com/channel/UCCOCreno8askVq_R4xhjA9A?view_as=subscriber

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।