ক্রাইমবার্তা রিপোট: দেশজুড়ে ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩ হাজার ৪৭১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ৫২৩ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরো ৪৬ জন। এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৫ জনে।
আজ শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলাতানা
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৬ হাজার ৯৫০ টি। এর মধ্যে আগের কিছু নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৯৯০ টি। পরীক্ষা করা নমুনার মধ্যে ৩ হাজার ৪৭১ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এছাড়া ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে আরো ৪৬ জন মারা গেছেন।
এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ই মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। শুরুর দিকে রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও এখন সংক্রমণ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চীনের উহানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। ভাইরাসটি ক্রমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। চীনের পর ইরান, কোরিয়াসহ বেশকিছু দেশে সংক্রমণ ছড়ালেও সবচেয়ে বেশি করোনা আঘাত হানে ইতালি, স্পেনসহ ইউরোপের দেশগুলোতে
নাসিমের শারীরিক অবস্থার অবনতি
করোনাভাইরাস ও ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ডিপ কোমায় থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম এমপির শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উন্নত সিঙ্গাপুরে পাঠানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে তার পরিবার।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসা চলতে থাকবে। তবে তার অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে।’
তাকে পরিবার বিদেশ নিতে যাচ্ছে, চিকিৎসকরা কী পরামর্শ দিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. কনক কান্তি বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে, কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আর আমাদের পরামর্শ হচ্ছে- তারা (পরিবার) যদি চান, নিতে পারেন। কিন্তু প্রোপার ব্যবস্থা করে নিতে হবে। তার অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল।’
উন্নত চিকিৎসায় মোহাম্মদ নাসিমকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর বিষয়ে তার ছেলে ও সাবেক এমপি তানভীর শাকিল জয় জানান, তাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজেবেথ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বুধবার সকালেই সেখানে কাগজপত্র পঠানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সিঙ্গাপুর সরকারের কাছে অনুমতিও চাওয়া হয়েছে। তবে এখনও কোনো ম্যাসেজ আসেনি।
গত ১ জুন গুরুতর অসুস্থ হয়ে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। এরপর পরীক্ষায় তার দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। প্লাজমা থেরাপিতে কিছুটা সুস্থ হলে ৫ জুন তাকে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে কেবিনে নেওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিনই ভোরে তার ব্রেইন স্ট্রোক হলে সকালে ওই হাসপাতালেই তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। ৬ জুন অবস্থার আরও অবনতি ঘটায় তাকে ভেন্টিলেশনে রাখার পাশাপাশি ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এই বোর্ডের ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণের সময়সীমা পার হওয়ার পর ৯ জুন নতুন করে সাত সদস্যের আরেকটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। নতুন এই মেডিকেল বোর্ড আরও ৭২ ঘণ্টা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত জানান।