ক্রাইমবার্তা রিপোট (আশাশুনি) থেকে ॥ উপকুলীয় অঞ্চলের টেঁকসই বেড়ীবাঁধ কতদূর ! আম্ফান আগ্রাসনে বিধ্বস্ত প্লাবিত জোয়ার ভাটার স্রোতের হাত থেকে রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমে রিং বাঁধ দিতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত সর্বশ্রেনী পেশা ভুক্তভোগী বানভাসী এলাকাবাসী। আগামী কাল সোমবার রিং বাঁধে চাপানোর মাধ্যমে হরিষখালির পানি আটকানোর সিন্ধান্ত নিয়েছেন স্থানীয় নেতৃত্ব দানকারী গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। প্রতাপনগর তথা উপকুলীয় এ অঞ্চলের পাউবোর মূল বেড়িবাঁধ হবে কবে? সাগর, নদী আর গ্রাম জনপদ মিলে মিশে একাকার হয়ে, কপোতাক্ষ খোলপেটুয়ার জোয়ার ভাটার স্রোত ধারা বয়েচলা, প্লাবিত অবস্থার অবসান ঘটবে কবে? উপকুলীয় এ অঞ্চলের মানুষের পারিবারিক, সামাজিক, স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে কবে ? স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় মানুষ ফিরবে কিভাবে ? জোয়ার ভাটার শা শা স্রোত ধারার শব্দ আর কতদিন শুনতে হবে, এ অঞ্চলের মানুষের। এভাবেই কি দিনের পর দিন, সপ্তার পর সপ্তাহ চলতে থাকবে ? দুর্বিষহ জীবন যাত্রার শেষ কুথায় যেয়ে দাঁড়াবে ? খন্ড খন্ড টোং বেঁধে অসহযন্ত্রা নিয়ে বেঁচে থাকার পরিসমাপ্তি ঘটবে কবে? একদিকে কখনো কখনো আকাশ বর্ষার বারিধারা অন্যদিকে সারাদিন রিং বাঁধে পরিশ্রমের পর হালকা অলাশ তন্দ্রায় যাওয়ার পর জোয়ার ভাটার স্রোত ধারা বয়ে চলা ঘুম ভাঙ্গা শা শা শব্দে নিন্দ্র ভাঙ্গার যন্ত্রণা। এ অবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটবে কব? প্লাবিত এলাকা ঘুরে আরো দেখা গেছে লোকালয়ে জোয়ার ভাটার স্রোত ধারার টানে ভাঙ্গন স্থানে অনেকের ইটের তৈরি আধা পাকা ঘর ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশে নদী গর্ভে চলে গেছে। ভাঙ্গন স্থানের ঘরবাড়ি স্রোত ধারায় গভীর খালের রুপান্তরিত হয়ে গেছে। অনেকে জীবন ধারণের জন্য আয়ের শেষ সম্বল সাগর, নদীতে মাছ ধরা নৌকায় ভাষমান অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ জীবন-যাপনে বাধ্য হয়েছে। কেউবা আবার একটু উঁচু স্থানে টোং বেঁধে, মাঁচা করে থাকতে বাধ্য হয়েছে। অনেকে শুকনা খাবার খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। অনেক একবেলা খেয়ে অন্য বেলা না খেয়ে দিন পার করে চলেছে। কিছু পরিবার আছে বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসায়, সাইক্লোন শেল্টারে নিরাপদ আশ্রয়ে, অনেকেই রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বাড়িতে। অনেকের ঘরবাড়ি সব কিছু নদী গর্ভে হারিয়ে অপলোক তাকিয়ে আছে কূলকিনারাহীন দৃশ্যে। এতসব প্রশ্নের জবাবের অবশান ঘটাতে প্রতাপনগরের হাজারো বানভাসী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় বিগত ২৫ দিন পূর্বে আঘাত হানা মহা প্রলয়ঙ্কারী জ্বলোচ্ছ্বাস ঘুর্নিঝড় আম্ফান আগ্রাসনে বিধ্বস্ত প্লাবিত হওয়ার পর থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী রিং বাঁধের কাজ করে যাচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বাঁশ, বস্তা প্রদানের মাধ্যমে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে আজও রিং বাঁধ নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছে। আগামী কাল সোমবার প্রতাপনগর হরিষখালির পূর্ব পাশের রিং বাঁধের মাধ্যমে বাঁধ চাপানোর মধ্যে দিয়ে পানি আটকানোর সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে উপকুলীয় এ অঞ্চলের মানুষের বসবাসের স্বার্থে নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করতে টেঁকসই বেড়ীবাঁধ নির্মাণে কংক্রিট ব্লক ও বনায়ন কর্মসূচির বিকল্প নাই। তাই সেনাবাহিনীর মাধ্যমে টেঁকসই বেড়ীবাঁধ নির্মাণের দাবি প্লাবিত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …