ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সোমবার রাতে ভারত-চীনের মধ্যকার বিবাদমান লাদাখ সীমান্তের গালওয়ান উপত্যকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয়পক্ষে ৮০ জনের মত হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।চীনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনায় তাদের ৫ জওয়ান নিহত হয়েছেন।চীন দাবি করেছে, ভারতীয় সৈন্যরা কোন ধরনের উস্কানি ছাড়াই সর্ব প্রথম হামলা চালায়।পরে চীনা সৈন্যরা পাল্টা হামলা চালায়।এতে চীনের পক্ষে ৪৩ জন এবং ভারতের ৩৭ জন সৈন্য হতাহত হয়।ভারতের কমপক্ষে ২০ জন সৈন্য নিশ্চিতভাবেই নিহত হয়েছেন এবং আরো ১৭জন গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই এ দাবি করেছে। মঙ্গলবার ভারতীয় স্থানীয় সময় রাত ১০টা নাগাদ সংবাদ সংস্থাটির প্রতিবেদনে এমনটি দাবি করা হয়।
অন্যদিকে ভারতীয় সেনাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, গোলাগুলি নয়, পাথর, রড নিয়ে হামলা চালায় চীনের সেনারা।পাল্টা জবাব দেয় ভারতও।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, লাদাখে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। এনিয়ে দুপুরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ তিন বাহিনীর প্রধান এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়। এ দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
এই সংঘর্ষের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তাব বলেন, সীমান্তের নিয়ম অনুযায়ী এলএসির ভেতরেই রয়েছে ভারত। আমাদের আশা চীনও সেটাই করবে। ভারত চায় এলাকায় শান্তি ও বজায় রাখতে। যে সমস্যা রয়েছে তা আলোচনার মধ্যমে মিটিয়ে ফেলা হবে। পাশাপাশি, ভারতের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপোস করা হবে না।
বেশ কিছুদিন ধরেই লাদাখের প্যাংগন লেক ও গালওয়ান উপত্যকায় দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে। এনিয়ে দুদেশের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে ঠিক হয়, শান্তিপূর্ণ উপায়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে নেওয়া হবে।সোমবার সকালে দুদেশের ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ে বৈঠক হয়। তারপর রাতে ওই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে।
প্রসঙ্গত, আগেই ঠিক হয়েছিল, দুদেশ তার বর্তমান অবস্থান থেকে দু কিলোমিটার পিছিয়ে আসবে। সঙ্গে সমস্যা নিরসনে আলোচনা চলবে।
১৯৭৫ সালের পর সম্ভবত এই প্রথম ভারত-চীন সীমান্তে সামরিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।