শ্রীউলায় আ’লীগের দুই গ্রুপের সংর্ঘষ

বিশেষ প্রতিনিধি : আশাশুনির শ্রীউলায় আওয়ামীলীগের দুই গ্র“পের আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলায় ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয় সহ ৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকাল ৮টায় শ্রীউলার মহিষকুড় মৎস্য সেডের সামনে। এঘটনায় এএসপি সার্কেল ইয়াছিন আলী ও থানা অফিসার ইনচার্জ গোলাম কবির ঘটনাস্থল পরির্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা সাকিল জানান, আলাউদ্দীন (লাকি) তার বাহিনীর হাসান, ফারুক, রাশেদ, সাহেদ, রাসেল, ইয়াসিন, হামিদসহ আরো ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসীরা লোহার রড, শাবল ও চাইনিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে আমার ও আমার লোকজনের উপর হামলা করে এবং ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় ভাংচুর করে। তিনি আরো জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তান্ডবে ভেড়িবাঁধ ভাঙ্গন কবলিত এলাকার অসহায়দের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ টাকা চাঁদা চাইলে আমি তাদেরকে বলি এটা গরীব অসহায়দের জন্য সরকার দিয়েছে। যারা প্রকৃত পাওয়ার যোগ্য তারা পাবে আমি কোন চাঁদা দিতে পারব না এ কথা বলার সাথে সাথে ওই সন্ত্রাসী বাহিনীরা লাকীর নেতৃত্বে আমার অফিসে এসে হামলা চালায়। তিনি আরও জানান সন্ত্রাসী আলাউদ্দীন লাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, মৎস্য-ঘের লুটপাট, বাড়ী ভাঙচুরসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে শ্রীউলা ইউনিয়নের রশিদ মোড়লের পুত্র আমিনুল ইসলাম, সুরমান আলী গাজীর পুত্র রহিস উদ্দিন গাজী, সোবহান গাজীর পুত্র রুস্তম গাজী, ইমান আলী মোড়লের পুত্র রহিম মোড়ল, মগরোব মোড়লের পুত্র গ্রাম পুলিশ কহিনুর মোড়ল, তালেব আলী সরদারের পুত্র মোবারক সরদার, ইউপি চেয়ারম্যানের ড্রাইভার আব্দুল্লাহ আল মামুন সহ বেশ কয়েক জন। আহত অনেকের আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত রুস্তম গাজীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে খুলনায় রেফার করা হয়েছে বলে জানাগেছে। আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ গোলাম কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে আর যদি কেউ আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হামলাকারী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। অপর দিকে আওয়ামীলীগ নেতা আলাউদ্দীন লাকী জানান-৪/৫ দিন আগে কোলায় বাঁধ সংস্কারের ব্যাপারে শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান গ্রামের লোক সংখ্যার অনুপাতে কাজ ভাগ করে দেয়। লোকজন কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে বকচরের লোকজন শ্রীউলার লোকের মাটি ভর্তি বস্তা জোর পূর্বক তুলে নিয়ে বকচরের অন্য স্থানে দেয়। এঘটনার জের ধরে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে শ্রীউলার লোকজনকে মারপিট করে। ঐ ঘটনার জের ধরে বুধবার সকাল ৭টায় বকচরের লোকজন থানাঘাটার বেড়ীবাঁধ কেটে দেবে বলে হুমকি দেয়। খবর পেয়ে শ্রীউলা থেকে বাঁধ রক্ষার জন্য ৮/৯ জন লোক পুইজালার থানাঘাটায় যায়। ফেরার পথে মহিষকুড় পুইজালা রাস্তার কালভার্টের উপর সাকিল চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এক দেড়শ লোকজন দা, রড নিয়ে কালভার্টের উপর মটর সাইকেলের গতি রোধ করে। এক পর্যায়ে তাদেরকে মারধর করে। তারা প্রাণ রক্ষার জন্য ঐ দা রড ছিনিয়ে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করলে তারা স্থান ত্যাগ করে। এঘটনায় মাহমুদ সরদারের পুত্র ইয়াছিন ও মুনছুর সরদারের পুত্র মোবারক আহত হয়েছে। এঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।