আবু সাইদ বিশ্বাস: ক্রাইমর্বাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার দেবহাটায় করোনায় আক্রান্ত ১৫ জন সুস্থ হয়েছেন। বাকী আরো ১২ জন সুস্থের পথে। এদের প্রত্যেকের শরীরে করোনা ভাইরাস পজেটিভ থেকে নেগেটিভ এসেছে। আজ রবিবার ১৫ জুন করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট হাতে পেয়েছে ভুক্তভোগীরা। রিপোর্ট পেয়ে তারা খুবই সন্তুষ্ট। এর মধ্যে ১ মে নারায়ণগঞ্জ থেকে ফেরত আসা ২৪ জন ইটভাটা শ্রমিকের বেশির ভাগই সুস্থ হয়েছেন।
সূত্র জানায় জেলাতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩১ জন। এর মধ্যে দেবহাটাতে ১৫ জন,সদরে ৯ জন, আশাশুনিতে ২ জন, কলারোয়াতে ২ জন,শ্যামনগরে ২ জন,ও তালাতে ১ জন।
শুধু দেবহাটাতে রোববার ২১ জুন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩০ জন। উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসার ডা.মো: আব্দুল লতিফ জানান,রবিবার পর্যন্ত তার উপজেলাতে করোনায় আক্রান্ত ১৫ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তারা এখন সুস্থ। বাকিরাও সুস্থ, তবে তাদের রিপোর্ট এখনো হাতে এসে পৌছায়নি।
কথা হয় করোনায় আক্রান্ত মূসা গাজীর স্ত্রী হালিমা বেগমের সাথে। তিনি জানান,তার স্বামী,ছেলে,মেয়ে,দুগ্ধ ছেলেসহ তাদেও পরিবারের ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হন। রবিবার দুপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকেরা তাদের রিপোর্ট দিয়েছেন। রিপোর্টে তারা করোনা মুক্ত হয়েছেন। তিনি আরো জানান, শুরু থেকেই তারা সকলেই সুস্থ ছিলেন। রিপের্টে কি ভাবে তাদের শরীরে করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে তা বুঝে আসে না। তার দুই বছরের সন্তান ও সাড়ে তিন বছরের অপর জনের দেহে করোনা ধরা পড়ে। তবে করোনার কোন কষ্ট তারা বুঝতে পারিনি। এজন্য তারা জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্টদের ধোন্যবাদ জানান।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র মতে,দেবহাটায় করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ৩০ জন। তারা হলেন,দেবহাটার জমাত গাজীর ছোট ছেলে(১১) শরিফুল ইসলাম, বয়স: ৩২ আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),একই উপজেলার দেবহাটা গ্রামের জমাত গাজীর বড় ছেলে,(১২) আকবার গাজী ,বয়স: ৪০ আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০), মেঝ (১৩)ছেলে হাফিজুল ইসলাম, বয়স: ৩৮ আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),এবং ছোট ছেলে বয়স: ৩২ আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০)।একই উপজেলার বাসাবতপুর গ্রামের আকবর গাজীর(১৪) মেয়ে বানুরা, বয়স: ৩০ আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),মুছা গাজীর মেয়ে (১৫) হালিমা বেগম, বয়স: ২৩ আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),সাইফুল্লাহর মেয়ে (১৬) হালিমা, বয়স: ২৫, আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),হাসান আলী গাজীর মেয়ে (১৭) জবেদা খাতুন, বয়স: ২৬ আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),বাসন্তপূর গ্রামের নজরুল গাজীর ছেলে(১৮) সাইফুল গাজী , বয়স: ২৮, আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),জয়নাল আবেদিনের মেয়ে(১৯) হালিমা খাতুন, বয়স: ৩০ আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),রিজাউল গাজীর ছেলে(২০) মামুন, বয়স: ১৪, আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),আব্দুর রহমান(২১) বয়স: ৬০আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০), আকবার আলী গাজীর মেয়ে (২২) খাদিজা, বয়স: ০৬,আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০)। মুসূা আজিজের ছেলে(২৩) মুজাহিদ গাজী, বয়স: সাড়ে ৩ বছর, আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),বসন্তপুর গ্রামের হাসান আলী গাজীর ছেলে(২৪) আলামিন, বয়স:১৯,আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),অপর ছেলে (২৫) মান্নান , বয়স: ১৮, আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),ধুলিহরপুর গ্রামের হাসান আলী গাজীর (২৬) ছাদিয়া সুলতানা , বয়স: ০৭, আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),ও তার ছেলে (২৭) ছোট শিশু হাসিব বাবু, বয়স: ০২,আক্রান্তের তারিখ (১৭/০৫/২০),তুলকুড়ি এলাকার (৪০) মমতাজ বেগম. আক্রান্তের তারিখ (২৭/০৫/২০),উত্তর পারুলিয়ার সুলতান গাজীর ছেলে (৪৪)শফিকুল ইসলাম, বয়স: ৪১, আক্রান্তের তারিখ (২৯/০৫/২০),সুলিগাতির আব্দুল আহাদের ছেলে (৪৫) আব্দুর রউফ, বয়স: ৫৫, আক্রান্তের তারিখ (২৯/০৫/২০), মান্দার গাজীর ছেলে(৫৫) রিজাউল করিম গাজী, বয়স: ৪৫, আক্রান্তের তারিখ (০৮/০৬/২০),যার শরীরে দ্বিতীয় বার করোনা পজেটিভ এসেছে। সখিপুর এলাকার (৭০) সাইরা বিবি, বয়স: ৬৫, আক্রান্তের তারিখ (১৩/০৬/২০), বদরতলা এলাকার (৭১) খাদিজা বিবি, বয়স: ৭০, আক্রান্তের তারিখ (১৩/০৬/২০),সখিপুরের(৭২) রাজু আহম্মদ, বয়স: ২২, আক্রান্তের তারিখ (১৩/০৬/২০), উত্তর পারুলিয়ার(৭৬) সফিকুল ইসলাম, বয়স: ৪১, আক্রান্তের তারিখ (১৩/০৬/২০),যার দ্বিতীয় বারেও করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। গ্রাম থানা,সবই দেবহাটা,যার মোবাইল নম্বর ০১৭১৪৬৬৩৬৩০(৭৭)তিনিও দ্বিতীয় বার করোনায় আক্রান্ত। সখিপুর এলাকার (৮২) হালিমা খাতুন, বয়স: ৩০, আক্রান্তের তারিখ (১৪/০৬/২০),সখিপুরের(৮৬) সুরাইয়া, বয়স: ২৮, আক্রান্তের তারিখ (১৫/০৬/২০)।
সূত্র জানায় ১ মে নারায়ণগঞ্জ থেকে একটি ট্রাকে সাতক্ষীরার দেবহাটায় ফেরেন ২৪ জন ইটভাটা শ্রমিক। তাদের দেবহাটা খানবাহাদুর আহসানুল্লাহ কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। সেখানে ৫ মে এক যুবকের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর বাকিদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বাকি ২৩ শ্রমিকের উপসর্গ না থাকায় ১৪ মে কোয়ারেন্টাইন থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দুইদিন পর ২৩ শ্রমিকের সবার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে।
আক্রান্ত ২৩ শ্রমিকের মধ্যে এক পরিবারের দুই শিশু ও তার মা-বাবার করোনা পজিটিভ এসেছে। তারা দেবহাটার খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ কলেজে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। তাদের বাড়ি সাতক্ষীরা সদরের ধূলিহর এলাকায়। কোয়ারেন্টাইনমুক্ত হয়ে তারা দেবহাটা থকে সাতক্ষীরার বাড়িতে ফেরেন। আক্রান্তদের মধ্যে দেবহাটা সদর ইউনিয়নের একজন গ্রাম পুলিশও রয়েছেন। কোয়ারেন্টাইন থেকে ১৪ মে মুক্তির পর এসব শ্রমিক পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করাসহ সমাজে মিশে যায় তারা। আতঙ্ক ছড়িযে পড়ে গোটা জেলায়।
দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন বলেন, যে ১৫ জন সুস্থ হয়েছেন তাদের রিপোর্ট দিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের বাড়ির লকডাউন ও খুলে দেয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত বলেন, সাতক্ষীরা জেলাতে রবিবার পর্যন্ত একশটি রিপোটে করোনা পজেটিভ এসেছে। এদের মধ্যে ৫ জনের শহীরে দ্বিতীয় দফায় করোনা পজেটিভ এসেছে। বর্তমানে ৯৫ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ এসেছে।
আবু সাইদ বিশ্বাস:সাতক্ষীরা: ২১/০৬/২০২০