ভালবাসার টান বুঝি এমনই। জীবনে মরণে প্রিয়জনের সঙ্গে থাকাটাই বুঝি একমাত্র চাওয়া। এমনই এক মর্মস্পর্শী ঘটনার বয়ান এখন লোকমুখে, মিডিয়ায়। অর্ধাঙ্গিনীর জ্বলন্ত চিতার মধ্যে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল এক যুবক। সোমবার মহারাষ্ট্রের গণ্ডপিপরি তেহসিলের ভাংগ্রাম তালোধি গ্রামে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে।
তবে চিতায় নিজেকে শেষ করে দেয়ার আগেই আত্মীয়দের প্রচেষ্টায় তাঁর প্রাণরক্ষা হয়। কিন্তু পত্নিবিয়োগে কাতর যুবক তার সিদ্ধান্তে যেন অটল। সে ভেবেই রেখেছিল, স্ত্রীকে ছাড়া তাঁর জীবনের কোন মানে নেই। তাই ফের কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলো সে।
পুলিশ জানায়, ১৯ মার্চ, চন্দ্রাপুরের কিশোর খাটিকের সঙ্গে বিয়ে হয় ভাংগ্রাম তোলেধি গ্রামের রুচিতা চিত্তাওয়ারের সঙ্গে।
আরটিও অফিসের কাছে একটি ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টারে কাজ করত কিশোর। রুচিতা তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা । মায়ের শরীর খারাপ থাকার কারণে চার দিন আগে বাপের বাড়ি গিয়েছিল রুচিতা। রোববার স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি যায় কিশোর। সেখানে গিয়ে জানতে পারে স্ত্রী নিখোঁজ। ওই দিন সন্ধ্যার সময়, গ্রামেরই একটি কুয়ো থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ এই মৃত্যুটিকে আত্মহত্যা বলেই মনে করেছে।
মা ও আসন্ন সন্তানের মৃত্যুতে গভীর শোকাহত হয় তাঁর পরিবার। সোমবার বিকেল ৪ টার সময় স্থানীয় শ্মশানঘাটে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর। শেষকৃত্য সেরে বাড়ি ফেরার সময় পরিবারের সঙ্গেই ছিল কিশোর। তবে সকলকে চমকে দিয়ে ফের শ্মশানঘাটের দিকে দৌড় দিতেই সন্দেহ হয় সকলের। তাঁর পিছু নেয় অন্যেরাও। সেখানে চিতার মধ্যে ঝাঁপ দেয়ার চেষ্টা করে সে। তবে আত্মীয়দের চেষ্টায় তাঁকে আটকানো সম্ভব হয়।
কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। শ্মশানঘাটের কাছেই একটি কুয়োতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। পরিবারের ঘনিষ্ঠরা দড়ি দিয়ে তাঁকে তোলার চেষ্টা করলেও কুয়োর গভীর জলে সে তলিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে।
– এই সময় অবলম্বনে