ক্রাইমর্বাতা রিপোট: বাবা, ভাই আর মামা। কিশোরী লাইজু আক্তারের(১৫) হত্যাকারী এ তিন আপনজনই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল ইউনিয়নের লম্বাহাটি গ্রামের চাঞ্চল্যকর এ হত্যারহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে বাবা সনু মিয়া, ভাই আদম আলী ও মামা মাজু মিয়া শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাকে। এ ৩ জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ হত্যা রহস্য উন্মোচনের তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, লাইজু তার মামা মাজু মিয়ার বাড়িতে থাকতো। গত ২২ জুন লাইজুকে বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে একজনের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন মাজু মিয়া।
বিষয়টি লাইজুর বাবা সনু মিয়া ও মা সাফিয়া আক্তারকে জানান মাজু। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হন সনু মিয়া। পরদিন(২৩ জুন) সকালে ঘরে বসে লাইজুকে হত্যার পরিকল্পনা করে সনু ও মাজু। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওইদিন রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে সনু মেয়েকে ঘর থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে যান। এরপর গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন সনু ও মাজু। বাবা ও মামার সঙ্গে বোনের হত্যাকান্ডে যোগ দেন লাইজুর ভাই আদম আলী। পরবর্তীতে তারা তিনজন মিলে লাইজুর মরদেহ স্থানীয় একটি ডোবায় ফেলে দেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা জানান, এক ছেলের সঙ্গে লাইজুর সম্পর্ক ছিল। ওই ছেলের সঙ্গে লাইজুকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন মামা মাজু মিয়া। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে লাইজুর বাবা ও মামা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। লাইজুর মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা
দায়ের করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রথমে পরিবারের কেউই মামলা করতে রাজি হয়নি। এছাড়া লাইজুর জন্য পরিবারের কারো কোনো শোকও ছিল না। এসব বিষয়ে আমাদের সন্দেহ তীব্র হয় তাদের প্রতি। মূলত মামাকে টার্গেট করা হয়।
হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ত লাইজুর ভাই আদম আলীকে সোমবার দিবাগত রাতে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাবা ও মামার সম্পৃক্ততার কথা বেরিয়ে আসে। এর আগে শনিবার দুপুরে লম্বাহাটি এলাকার একটি ডোবা থেকে লাইজুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন লাইজুর মা সাফিয়া আক্তার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিকে গ্রেফতারকৃত মামা মাজু মিয়া গত ২৯জুন ও ভাই আদম আলী গতকাল মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।