ক্রাইমর্বাতা রিপোট : ৯দিন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে অবশেষে মৃত্যু কাছে হেরে গেলেন সিরাজগঞ্জে দলীয় কোন্দলের কারনে প্রতিপক্ষের মারপিটে আহত ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয়।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক প্রকৌ: আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদ জানান, রোববার সকাল ১১টার দিকে লাইফ সার্পোট খুলে দেয়ার পর চিকিৎসকরা এনামুলকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। এনামুলের মৃতদেহ সিরাজগঞ্জ পৌছার পর আজই তাকে তার গ্রামের বাড়িতে জানাযা শেষে দাফন করা হবে।
এই হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে আব্দুল্লাহ আরও বলেন, জানাযা ও দাফন কার্যক্রম শেষ করে এ ঘটনার প্রতিবাদে আজই ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।
২৬ জুন বিকেলে সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত দোয়া মাহফিলে যোগ দিতে আসার পথে শহরের বাজার ষ্টেশন এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয়কে মাথায় কুপিয়ে জখম করা হয়। সে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও জামতৈল সরকারী হাজী কোরপ আলী ডিগ্রি কলেজ শাখার সভাপতি এবং কামারখন্দ উপজেলার চালা শাহবাজপুর এলাকার বাসিন্দা। আহত হওয়ার পর আশংকাজনক অবস্থায় ২৭জুন ছাত্রলীগ নেতা এনামুলকে ঢাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই আইসিইউতে রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়।
গত কয়েকদিন অধিকাংশ সময় সে অচেতন ছিল।
এ ঘটনার পর আহত ছাত্রলীগ নেতার বড় ভাই রুবেল বাদী হয়ে জেলা ছাত্রলীগের ২ সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সংগঠনের ৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ইতোমধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত ৫জনের মধ্যে ৪জন গ্রেপ্তার হলেও প্রধান আসামী জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিয়ারধানগড়ার শিহাব আহমেদ জিহাদ (২৩) এখনও পলাতক রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বর্তমানে ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান বিজয়, জাহিদুল ইসলাম ও সাগর জেলহাজতে রয়েছেন। জামিনে মুক্ত রয়েছেন আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন। এ ঘটনার পর গত রোববার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ মামলার ২ আসামী জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহরের সয়াগোবিন্দ ভাঙ্গাবাড়ি মহল্লার আল-আমিন ও আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক শহরের দিয়ারধানগড়া মহল্লার শিহাব আহমেদ জিহাদকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করেছেন।
এদিকে, এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবী করেছে আওয়ামীলীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এরা হলেন, জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক শামসুজ্জামান আলো, তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী পিয়ার, যুব বিষয়ক সম্পাদক মো: বদরুল আলম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ইমরুল কায়েস তপন, উপ-প্রচার সম্পাদক নাসিমুর রহমান নাসিম, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুল হাকিম, জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ ইউসুফ জুয়েল, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক জিহাদ আল ইসলাম জিহাদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক নাজমুল হক, সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান সোহেল, সাবেক সভাপতি জাকিরুল ইসলাম লিমন, সাবেক সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন ও বর্তমান সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদ।
অপরদিকে, ছাত্রলীগ নেতা এনামুলের মৃত্যু সংবাদ পৌছার পর জেলা সদরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, মারপিটের ঘটনার পর থেকেই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। যা আজও বিদ্যমান রয়েছে।