॥ হারুন ইবনে শাহাদাত॥
দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো আর সরকার পরিচলানা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে ছেড়ে দেয়া হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তে পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার আংশকা করছে সংশ্লিষ্টরা। অথচ একসময় পাটের কারণে কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের পরিচিতি ছিল বিশ্বব্যাপী। সোনালি আঁশখ্যাত পাটকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছিল সোনালি সম্ভাবনা। কিন্তু কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ার সঠিক নীতির অভাব, প্রতিবেশী দেশের ষড়যন্ত্র, রাজনৈতিক ব্যর্থতা এবং মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের কাছে রাজনীতি, রাষ্ট্র ও সরকার পণবন্দী হওয়ার কারণে দেশের কৃষকদের কপাল পুড়েছে। বন্ধ হয়েছে সোনালি সম্ভাবনার এ দুয়ার। নিয়মনীতি না মেনে যত্রতত্র আমদানিনির্ভর কাঁচামালভিত্তিক শিল্পকারখানা গড়ে কৃষকের ফসলি জমি, জলাশয় ও পরিবেশের বারোটা বাজানোর সাথে সাথে মরণঘণ্টা বাজছে পাট, তুলা, রেশম ও চিনির মতো দেশীয় কৃষিজ কাঁচামালভিত্তিক শিল্পের। এরই ধারাবাহিকতায় পাটশিল্পের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকার আয়োজন চলছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। অথচ বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক তন্তুর তৈরি পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। অবশ্য পাটের চাহিদা আগেও ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। পাট থেকে উন্নতমানের কাপড়, কার্পেট, জায়নামাজ, ব্যাগসহ অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তৈরি হয়। কৃত্রিম তন্তু, পলেস্টার সুতা ও প্লাস্টিক মানবদেহ এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, বিভিন্ন গবেষণায় এ কথা প্রমাণ হওয়ার পর বিশ্ববাজারে পাট ও পাটপণ্যের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ সেই বাজার ধরার চেষ্টার বদলে উল্টো পথে হাঁটছে বলে মনে করেন এই খাতসংশ্লিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকরা।
কারণ বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী গত ২৮ জুন রোববার রাষ্ট্রায়ত্ত সব পাটকল পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে ছেড়ে দেয়া এবং ২৫ হাজার শ্রমিককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এর একদিন পর গত ২৯ জুন সোমবার শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন পাটকল শ্রমিক নেতারা। বৈঠক শেষে সরকারপক্ষ দাবি করেছে, ২৫ হাজার পাটকল শ্রমিককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত শ্রমিকরা মেনে নিয়েছেন। তবে কবে থেকে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে মন্ত্রণালয়। অবশ্য শ্রমিকরা মিল বন্ধ না করাসহ সব পাওনা পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পক্ষ থেকে ঘোষণার পরই আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিক ও ঈড়ষষবপঃরাব ইধৎমধরহরহম অমবহঃ (সিবিএ) নেতারা। তারা জানান, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন বিজেএমসির আওতাধীন ২৬টি মিলে বর্তমানে ২৫ হাজার স্থায়ী শ্রমিকসহ পাওনা বকেয়া রয়েছে এমন শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৩৪ হাজার।
পিছন ফিরে দেখা
বাংলা পিডিয়া সূত্রে জানা যায়, ১৮৮৫ সালে জর্জ অকল্যান্ড একজন বাঙালি অংশীদার (শ্যামসুন্দর সেন) নিয়ে কলকাতার হুগলি নদীতীরবর্তী রিশড়া নামক স্থানে প্রথম পাটকল স্থাপন করেন। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় পাট উৎপাদিত হতো। কিন্তু ১৮৮৫ সালের আগে স্থানীয় তন্তুবায় শ্রেণি দরিদ্র জনগণের জন্য মোটা বস্ত্র তৈরি করত। পাটভিত্তিক শিল্প স্থাপনের অনুপ্রেরণা আসে স্কটল্যান্ডের ডান্ডি থেকে। নেপোলিয়ানের যুদ্ধের সময় ঘন ঘন নৌ-অবরোধের ফলে রাশিয়ার শন জাতীয় গাছের কারখানাগুলো বিকল্প হিসেবে পাট ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে। ১৮৩২ সালে বেলফোর ও মেলভিলের কারখানাগুলো কলকাতার বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁচা পাট আমদানি করে এবং এই কাঁচা পাটের সঙ্গে তিমির তেল ও পানি মিশিয়ে পাট নরম করে নেয়। ১৯৩৮ সালে এই নতুন প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হয়। এ সময় ডান্ডির মিলগুলো জাভা থেকে আমদানি করা চিনির জন্য ডাচ সরকারের নিকট থেকে বিপুল পরিমাণ ব্যাগ তৈরির কার্যাদেশ পায়। ডাচ সরকার এই তৈরিকৃত পাটের ব্যাগ গ্রহণ করে এবং এই মোটা ক্যানভাস বিশেষ সামগ্রী হিসেবে স্থায়ীরূপ লাভ করে। এ ব্যবস্থা কাপড় ও ব্যাগ উৎপাদনে পাটের ব্যবহার শুরুতে সহায়তা করে। ফলে পাটশিল্পে নতুন প্রেরণার সূচনা হয়।
এভাবে প্রথম যখন বাংলায় পাটকল স্থাপিত হয়, তখন ডান্ডির মিলগুলো সুপ্রতিষ্ঠিত এবং তাদের পণ্যের জন্য নতুন বাজারের সন্ধান করছিল। কিন্তু কলকাতার মিলগুলো প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দ্রুত অগ্রগতি সাধন করে। ১৮৮২ সালে মিলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৮টিতে উন্নীত হয় এবং ১৯০১ সালে ৩ লাখ ১৫ হাজার সুতা কাটার টাকু, ১৫ হাজার তাঁত, ১ লাখ ১০ হাজার শ্রমিক এবং ৪ কোটি ১০ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধন নিয়ে মিলের সংখ্যা ৩৫-এ উন্নীত হয়। এখানে উৎপাদিত ৮৫ শতাংশ পাটজাত দ্রব্য অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা হয়। এভাবে উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে পাটশিল্প উপমহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্পে পরিণত হয় এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হয়। বিশ শতকের প্রথম তিন দশক থেকে পাটশিল্পের অভাবিত উন্নতি সাধিত হয়। ১৯০৩-০৪ সালে পাটকলের সংখ্যা ছিল ৩৮, কিন্তু ১৯২৯-৩০ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে ৯৮টিতে উন্নীত হয়। উৎপাদনের দিক থেকে স্থাপিত তাঁতের সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে যায় এবং এই শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা ১,২৩,৬৮৯ থেকে ৩,৪৩,২৫৭ জনে উন্নীত হয়। এর মূল কারণ ছিল বিনিয়োগকৃত অর্থ থেকে উচ্চ মুনাফা। বিশ্ববাজারে পাটজাত দ্রব্যসামগ্রীর চাহিদার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর ভারত ও পাকিস্তান একে-অন্যের ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। সব পাটকল ভারতে অবস্থিত হলেও শতকরা ৮০ ভাগ পাট উৎপাদনের এলাকা ছিল পাকিস্তানে। অন্যদিকে ভারতকে তার মিলগুলো চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচা পাটের অধিকাংশ আমদানি করতে হতো, আর পাকিস্তানের সমস্যা ছিল তার কাঁচা পাট বিক্রয়ের। এ অবস্থায় দুটি দেশ তাদের সীমান্ত দিয়ে পাটজাত দ্রব্যসামগ্রী মুক্তভাবে চলাচলের জন্য ১৯৪৭ সালে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এই চুক্তি ১৯৪৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
পাকিস্তানের প্রথম পাটকল বাওয়ানি জুট মিলস লিমিটেড ১৯৫১ সালের মাঝামাঝি সময়ে তাদের উৎপাদন শুরু করে। দ্বিতীয় মিলটি ভিক্টোরি জুট প্রডাক্টস লিমিটেড একই বছরের শেষদিকে উৎপাদন শুরু করে। এগুলো ছিল বেসরকারি খাতের। একই বছর উৎপাদন শুরু করা তৃতীয় মিলটি ছিল আদমজী জুট মিলস। এই মিলটি পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এভাবে সরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের মধ্যকার সক্রিয় সহযোগিতায় শিল্প বিকাশের পথ সুগম হয় এবং ১৯৬০ সাল নাগাদ ১৪টি মিলের মধ্যে ১২টি মিল পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৯-৬০ সালের মধ্যে এই ১৪টি মিলের কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ৫৭০০, তাঁতের সংখ্যা ছিল ৭৭৩৫ এবং পাটজাত দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২,৬০,৩৯৩ ম্যাট্রিক টন। পরবর্তী দশকে পাটশিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটে এবং ১৯৬৯-৭০ সালের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে কিঞ্চিতাধিক ২৫ হাজার তাঁতসহ মোট পাটকলের সংখ্যা ছিল ৭৭ এবং এগুলোর কাঁচা পাট ব্যবহার করার ক্ষমতা ছিল ৩৪ লাখ বেল। ঐ বছরই সকল পাটকলে কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭০ হাজার এবং বিশ্বের ১২০টি দেশে পাটজাত দ্রব্যসামগ্রী রপ্তানি করে ৭৭ কোটি টাকা আয় করা হয়। এভাবে পূর্ব পাকিস্তান পাটজাত দ্রব্যসামগ্রী রপ্তানির শীর্ষ দেশে পরিণত হয়। ১৯৫২-৫৩ সালে পাকিস্তানের অর্জিত মোট বৈদেশিক মুদ্রার মাত্র ০.২ শতাংশ ছিল পাটজাত দ্রব্যসামগ্রী রপ্তানি থেকে। ১৯৬৯-৭০ সালে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৪৬ শতাংশে। পূর্ব পাকিস্তানের পাটকলগুলো ভারতকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিয়েই মূলত বিশ্ববাজারে প্রবেশ করে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে সরকার দেশের বিভিন্ন খাতের সব শিল্পকারখানা জাতীয়করণ করে। এ শিল্পের অবাঙালি মালিকানার মিলগুলোর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বভার গ্রহণ করতে হবে, কারণ তারা বর্তমানে বিদেশি। কিন্তু প্রজাতন্ত্রের সংবিধানে সন্নিবেশিত সমাজতন্ত্রের নামে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জাতীয়করণকৃত মিলগুলোর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিভিন্ন করপোরেশন বা সংস্থাকে দেয়া হয় এবং বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনকে (বিজেএমসি) পাটকলগুলোর পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়। করপোরেশনের প্রধান হবেন একজন চেয়ারম্যান এবং তাঁর পদমর্যাদা হবে সরকারের একজন সচিবের পদমর্যাদার সমান। বিজেএমসি ধীরে ধীরে কাঁচা পাট ক্রয়, বিক্রয়, অর্থ জোগান, নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব গ্রহণ করে। আর্থিকভাবে টাকার অবমূল্যায়ন শতকরা ৬৬ ভাগ হওয়ার কারণে ১৯৭৫-৭৬ থেকে ১৯৭৮-৭৯ সাল পর্যন্ত বিজেএমসির আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০ কোটি ১৯ লাখ টাকা। পরিচালনার ক্ষেত্রে ক্ষতির মূল কারণ ছিল কাঁচা পাটের মূল্যবৃদ্ধি, গুদামজাতকরণের বর্ধিত ব্যয়, খুচরা যন্ত্রাংশের উচ্চমূল্য, মজুরি ও বেতন বৃদ্ধি এবং অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত দুর্নীতি।
ভারতের দখলে পাটের বিশ্ববাজার
বহির্বিশ্বে বাংলাদেশে উৎপাদিত পাট দিয়ে তৈরি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বাস্তবতা হলো, বছরের পর বছর দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। অথচ ভারত বাংলাদেশ থেকে পাটের কাঁচামাল কিনে সেটা প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বিদেশে বিক্রি করছে এবং মুনাফা গড়ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদন সূত্রে প্রকাশ, বাংলাদেশের এই পাটের খ্যাতি রয়েছে বিশ্বব্যাপী। ফ্রান্সের প্যারিসে গত ৯ বছর ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন তৃণা খান। সেখানে স্থানীয়দের নানান ধরনের পাটজাত পণ্য ব্যবহার করতে দেখেছেন তিনি। অথচ পাটপণ্য ব্যবহারকারী সেই বিদেশি ক্রেতাদের অধিকাংশই জানেন না এই পাটের উৎপাদন হয় বাংলাদেশে। মিসেস খান বলেন, ‘আমি প্যারিসসহ আশপাশের ছোট শহরগুলোয় মানুষকে পাটের জিনিসপত্র ব্যবহার করতে দেখেছি।’ এমনকি ফাইভস্টার হোটেলগুলোয়ও দেখি আমাদের দেশের পাটের তৈরি কার্পেট। কিন্তু তারা এসব জিনিসই কিনেছে ভারতের কাছ থেকে। কেউ জানেই না, পাট বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়।
পাটপণ্যের উদ্যোক্তা শাফিয়া সামা মনে করেন, ‘দক্ষ জনশক্তির অভাব, প্রযুক্তিগত দুর্বলতা এবং বিপণনে দক্ষতা না থাকার কারণে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে।’ এছাড়া বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে দেনদরবার করতে না পারা; সেই সঙ্গে সবচেয়ে ভালোমানের পাট রপ্তানি করে দেয়ার ফলে মানসম্মত পণ্য তৈরি করতে না পারায় বাংলাদেশ তার বাজার তৈরি করতে পারছে না।’ অথচ বিশ্বের সবচেয়ে সেরা কার্পেট উৎপাদনকারী দেশ তুরস্ক ও ইরানের সাথে যৌথ বিনিয়োগে দেশে পাটভিত্তিক শিল্প গড়লে ইতিহাস অন্যরকম হতো।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মুকসুদ বলেন, ‘পাটশিল্প নিয়ে অনেক চক্রান্ত হয়েছে। এটি একটি বড় ইতিহাস। অল্প কথায় এর বিবরণ দেয়া সম্ভব নয়। তবে এটুকু বলব, শুধু বিশ্বব্যাংক নয়, এর জন্য আমাদের রাষ্ট্রও দায়ী।’
বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া
পাটশিল্প নিয়ে সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যখন কোনো শ্রমিক-কর্মচারীকে ছাঁটাই না করার শর্তে আমরা দেশের সব শিল্প রক্ষার জন্য সরকারি সহায়তা ও সহজশর্তে ঋণ প্রদানের দাবি জানাচ্ছি এবং সিপিডিসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান যখন আইন করে এ দুঃসময়ে লে-অফ, শ্রমিক ছাঁটাই কিংবা কারখানা বন্ধ না করার দাবি জানাচ্ছে, তখন সরকারের এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নাগরিকদের প্রতি দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সোনালি আঁশখ্যাত পাট ও পাটজাত দ্রব্যের বিশ্বব্যাপী ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যর্থতা, অপরিণামদর্শী ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আজ এ করুণ পরিণতির সৃষ্টি হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে অবিলম্বে সরকারের উচিত মিলগুলো পুরোদমে চালু করে শ্রমিকদের সব পাওনাদি অবিলম্বে পরিশোধ করা। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নয়। পাট ও পাটশিল্পের উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিতে হবে। পাট ও পাটশিল্প দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তিতে পরিণত করতে হবে, তবেই খুলবে সোনালি সম্ভাবনার দুয়ার।http://www.weeklysonarbangla.net/
Check Also
ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়
দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …